ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১১ মিনিট আগে
শিরোনাম

সিসিটিভির আওতায় পর্যটন নগরী কক্সবাজার

  কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:৫১

সিসিটিভির আওতায় পর্যটন নগরী কক্সবাজার

দেশের পর্যটন রাজধানী হিসেবে খ্যাত কক্সবাজার শহর এখন সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় এসেছে। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে আসা-যাওয়ার রাস্তা থেকে শুরু করে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে লাগানো হয়েছে অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তি। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা ধরে এসব ক্যামেরায় ধারণ করা হচ্ছে চলমান চিত্র। আর জেলা পুলিশ সিসিটিভি ক্যামেরার কন্ট্রোল রুমে বসেই সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছে।

কক্সবাজার শহরকে অপরাধমুক্ত রাখতে জেলা পুলিশের উদ্যোগে শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ভোধন করা হয় সিসিটিভি ক্যামেরার কার্যক্রম। এসময় পুলিশ সুপার ড. এ কে এম ইকবাল হোসেন বলেন, দেশের অন্যতম প্রধান পর্যটন নগরীকে অপরাধমুক্ত করার স্বপ্ন বুনেছিলাম এখানে যোগদান করার পরই। সেই স্বপ্ন আজ পূরণ হলো।

তিনি বলেন, কক্সবাজারে প্রতিনিয়ত দেশ-বিদেশের ভ্রমণপিপাসু লোকজন আসেন। এ কারণে এ শহরেই নানা অপরাধ কার্যক্রমে জড়িত লোকজনের তৎপরতাও থাকে বেশি। সাগর পাড় থেকে শুরু করে বাস টার্মিনাল, হোটেল-মোটেল জোন এবং কেনাকাটার মার্কেটগুলোতে ওৎ পেতে থাকে ছিনতাইকারির দল। মাত্র দুবছর আগেও ছিনতাইকারীদের ধরতে গিয়ে একজন পুলিশ সদস্য প্রকাশ্য দিবালোকে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন। অনুরূপ ছিনতাইকারীদের হাতে নিহত হন বেশ ক’জন পর্যটকও। নিত্যদিনের এসব অপরাধজনক ঘটনা নিয়ন্ত্রণের জন্য জেলা পুলিশ উপায় খুঁজছিলেন।

পুলিশ সুপার ড. এ কে এম ইকবাল হোসেন আরো জানান, অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য সিসিটিভি ক্যামেরায় শহর নিয়ন্ত্রণের মতো এক ব্যয়বহুল উদ্যোগ তিনি অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়েই কাঁধে নেন। শুরুতে শহরের নানা পেশার লোকজনের সাথে মত বিনিময় করা শুরু করেন। সবার নিকট সহযোগিতার আশ্বাস পেয়ে যান। শেষ পর্যন্ত এগিয়ে আসে জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক হাইকমিশনও (ইউএনএইচসিআর), কক্সবাজারের ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন, কক্সবাজার পৌরসভা, হোটেল-মোটেল মালিক সমিতি থেকে শুরু করে অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও। ইউএনএইচসিআর ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে সিসিটিভি ক্যামেরা কন্ট্রোল রুমের অত্যাধুনিক বিশাল পর্দার (স্ক্রিন) ব্যবস্থা করে দেন।

জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সাইফুল ইসলাম জানান, বর্তমানে শহরের গুরুত্বপূর্ণ ৪০টি পয়েন্টে ৬৭টি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সাগর পাড়, বাস টার্মিনাল ও শহরের গেইটওয়ে হিসাবে পরিচিত কলাতলি বঙ্গবন্ধু চত্বরসহ (ডলফিন পয়েন্ট) আরো কয়েকটি স্থানে বসানো ক্যামেরাগুলো রয়েছে প্রতিনিয়ত ঘূর্ণায়মান অবস্থায়। এসব পয়েন্টগুলোর ২৪ ঘণ্টার চলমান ধারণ করা চিত্র পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে জেলা পুলিশ অফিসে স্থাপিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বসেই। চব্বিশ ঘণ্টায় পালাক্রমে সিসিটিভি নিয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছেন এসব চিত্র পর্যবেক্ষণের কাজে। দিনের বেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষে থাকেন নারী পুলিশ সদস্যরা আর রাতের বেলায় থাকেন পুরুষ সদস্যরা।

এদিকে জেলা পুলিশ সুপার জানান, এমন একটি মহৎ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে সরকারি তহবিলের একটি টাকা ছাড়াই। কেবলমাত্র স্থানীয় কমিউনিটি এবং ইউএনএইচসিআর এর দেওয়া অনুদানেই এতবড় মেগা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে।

পুলিশ সুপার আরো জানান, এ প্রকল্পের কাজ শুরু হবার পর থেকে ইতোমধ্যে ভালো ফলাফলও পাওয়া যাচ্ছে। ক্যামেরা বসানোর পর থেকেই শহরের অপরাধমূলক ঘটনা কমে গেছে। অপরাধীরাও জানতে পেরেছে, কোনো অপরাধ করলেই তারা ক্যামেরায় চিহ্নিত হয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফাও সাধারণ সম্পাদক এবং কক্সবাজার পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু তাহের চৌধুরী, হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার, ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধিসহ প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন।

ডিপি/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত