ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

গ্রেনেড হামলার ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি নিয়ে ভোটের প্রচারে শেখ হাসিনা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০১৮, ২২:১১

গ্রেনেড হামলার ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি নিয়ে ভোটের প্রচারে শেখ হাসিনা

ভোটের প্রচারে সরকারি গাড়ি নয়, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ব্যবহার করছেন একুশে গ্রেনেড হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মার্সিডিজ গাড়িটি। নির্বাচনী কাজে সরকারি সুবিধা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আছে। আর এই কারণেই এই গাড়িটি ব্যবহার করছেন প্রধানমন্ত্রী।

বুধবার সকালে ঢাকার গণভবন থেকে সড়ক পথে নিজ নির্বাচনী এলাকা টুঙ্গীপাড়া-কোটালীপাড়ার পথে রওয়ানা হন শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে যে গাড়িবহরটি বের হয়, তাতে ছিল রূপালী মার্সিডিজ গাড়িটি। বিরোধীদলীয় নেতা থাকাকালে এই গাড়িটি ব্যবহার করতেন শেখ হাসিনা।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এই গাড়িতে করেই গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। আর গ্রেনেড হামলা থেকে মানববর্ম তৈরি করে নেত্রীকে বাঁচিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা বঙ্গবন্ধু কন্যাকে তুলে দেন গাড়িটিতে। বুলেটপ্রুফ থাকায় হামলাকারীদের করা গুলিটি গাড়ির কাঁচ ভেদ করতে পারেনি।

ওই হামলার পর গাড়িটি মেরামত করা হয়, তবে ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথের পর থেকে সেটি আর ব্যবহারের দরকার পড়েনি। কিন্তু নির্বাচনী প্রচার শুরু হয়ে যাওয়ায় সরকারি সুযোগ সুবিধা নিতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় এই গাড়িটি আবার বের করা হয়।

আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচটি ইমাম বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণায় যাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি সুযোগ-সুবিধা তিনি ব্যবহার না করেন, সেটা নিয়ে আমরা সতর্ক।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী আচরণবিধি যাতে কোনভাবেই লংঘন না হয়, এ নিয়ে আমরা সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছি। এ কারণে আজ নেত্রী যখন টুঙ্গিপাড়া সফরে গেছেন, তিনি কিন্তু ব্যক্তিগত এবং দলীয় গাড়িবহর নিয়ে গেছেন। এটি কিন্তু সরকারি সফর নয়, দলীয় সফর। এখানে সরকারি কিছু থাকবে না।’

এদিকে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে সকাল ৮টা থেকে মুন্সীগঞ্জের ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের কুচিয়ামোড়া, নিমতলা, হাসাড়া, ছনবাড়, দোগাছি, মেদেনীমণ্ডল, মাওয়া ও শিমুলিয়া এলাকায় ব্যানার নিয়ে অপেক্ষায় থাকেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। শেখ হাসিনাকে একনজর দেখার জন্য রাস্তার দুপাশে ভিড় করেন সাধারণ জনগণও।

সকাল সোয়া ৯টার দিকে সিরাজদীখানের নিমতলা এলাকা অতিক্রম করে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর। এ সময় তিনি হাত নেড়ে উপস্থিত জনতাকে শুভেচ্ছা জানান। সাড়ে ৯টার দিকে তাঁর গাড়িবহর অতিক্রম করে শ্রীনগরের ছনবাড়ী এলাকা। সে সময় শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানাতে মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে মহাজোটের প্রার্থী মাহী বি. চৌধুরীসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ আওয়ামী লীগ নেত্রী লৌহজংয়ের শিমুলিয়া ঘাটে পৌঁছান। সেখানে মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের নৌকার প্রার্থী সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি উপজেলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান।

পরে প্রধানমন্ত্রী শিমুলিয়া ভিআইপি ফেরিঘাটে রাখা ক্যামেলিয়ায় আরোহণ করলে সোয়া দশটার নাগাদ ফেরিটি মাদারীপুরের কাঠাঁলবাড়ি ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

দুপুর ১২টার দিকে ফেরি ক্যামেলিয়া কাঁঠালবাড়ির ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ঘাটে পৌঁছালে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের সাধারণ সম্পাদক নূর-ই-আলম চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী আ. সোবাহান গোলাপ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিয়াজউদ্দিন খান, উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ রেজাউল করিম তালকুদার, জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মুনির চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামসুদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. সেলিম প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর বহর ঘাটএলাকা অতিক্রম করার সময় হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক স্লোগানে স্লোগানে তাকে শুভেচ্ছা জানায়। ঘাট এলাকা থেকে শিবচরের দত্তপাড়া পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার জুড়ে চলতে থাকে এই শুভেচ্ছা জ্ঞাপন। প্রধানমন্ত্রীও এ সময় নেতাকর্মীদের অভিবাদনের প্রত্যুত্তর দেন।

গোপালগঞ্জ-৩ আসনে এ পর্যন্ত ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন শেখ হাসিনা। আগামী নির্বাচনেও নৌকার দুর্ভেদ্য এ ঘাঁটি থেকে তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ ও টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করবেন বলে প্রত্যাশা ভোটারদের।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত