ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাড়তে পারে সরকারি চাকরিজীবীদের অবসরের বয়স

বাড়তে পারে সরকারি চাকরিজীবীদের অবসরের বয়স

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার প্রস্তাব জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ঢাকা-৮ আসনের এমপি রাশেদ খান মেনন। সংসদের আইন শাখা-২ এ ইতিমধ্যে তিনি প্রস্তাবটি জমা দিয়েছেন। ওই প্রস্তাবে অবসরের বয়স দুই বছর বাড়িয়ে ৬২ বছর করার কথা বলা হয়েছে।

সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি তরুণ সমাজের দীর্ঘদিনের। এটি আমার কাছে একটি যৌক্তিক দাবি বলে মনে হয়। এ জন্য সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি আনা হবে।

তিনি বলেন, আমার সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি হলো- ‘সংসদের অভিমত এই যে, সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে ঢোকার বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৬২ বছর করা হউক।’

আগামী ২৪ এপ্রিল বিকাল ৫টায় একাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হবে। অধিবেশন শুরুর এক ঘণ্টা আগে সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে গত বছর ধরে আন্দোলন করে আসছে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন। তাদের দাবি বিভিন্ন দেশের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি। এছাড়া সেশন জটের কবলে পড়াশোনা শেষ করার আগেই অনেকের চাকরিতে প্রবেশে বয়স প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের। যে কারণে ৩০-এর বদলে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবি জানিয়ে আসছে তারা।

সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন গণমাধ্যমকে জানান, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি তরুণ সমাজের যৌক্তিক দাবি বলে মনে হয়, এ জন্য সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি আনা হবে। তিনি বলেন, আমার সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি হলো- ‘সংসদের অভিমত এই যে, সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে ঢোকার বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৬২ বছর করা হউক।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৪০, বিভিন্ন প্রদেশে বয়সসীমা ৩৮ থেকে ৪০, শ্রীলংকায় ৪৫, ইন্দোনেশিয়ায় ৩৫, ইতালিতে ৩৫ বছর কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৩৮, ফ্রান্সে ৪০, ফিলিপাইন, তুরস্ক ও সুইডেনে যথাক্রমে সর্বনিম্ন ১৮, ১৮ ও ১৬ এবং সর্বোচ্চ অবসরের আগের দিন পর্যন্ত। আফ্রিকায় চাকরি প্রার্থীদের বয়স বাংলাদেশের সরকারি চাকরির মতো সীমাবদ্ধ নেই। অর্থাৎ চাকরি প্রার্থীদের বয়স ২১ হলে এবং প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে যেকোনো বয়সে আবেদন করা যায়।

রাশিয়া, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্যে যোগ্যতা থাকলে অবসরের আগের দিনও যে কেউ সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল গভর্নমেন্ট ও স্টেট গভর্নমেন্ট উভয় ক্ষেত্রে চাকরিতে প্রবেশের বয়স কমপক্ষে ২০ বছর এবং সর্বোচ্চ ৫৯ বছর। কানাডার ফেডারেল পাবলিক সার্ভিসের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২০ বছর হতে হবে, তবে ৬৫ বছরের উর্ধে নয় এবং সিভিল সার্ভিসে সর্বনিম্ন ২০ বছর এবং সর্বোচ্চ ৬০ বছর পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে আবেদন করা যায়।

গত বছর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ২১তম বৈঠকে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর করার সুপারিশ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে নবম জাতীয় সংসদেও শেষ দিকে মহাজোট সরকারের চমক হিসেবে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর ইতিবাচক নির্দেশনা দেয়া হয়।

২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব ছিল। ২০১৪ ও ২০১৫ সালের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে এ প্রস্তাবের পক্ষে বিভিন্ন জেলা-প্রশাসকরা সমর্থন দিয়েছিলেন।

প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২০১১ সালের ২৬ ডিসেম্বর তারিখে ২০১১ অধ্যাদেশ মোতাবেক সরকারি কর্মচারীদের অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হয়েছে। কিন্তু চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বয়সসীমা ৩০ বছর রয়েছে। চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্য রেখে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তাছাড়া একজন প্রার্থী ৩০ বছর বয়সে চাকরির জন্য আবেদন করলে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে অনেক সময় ২ বছরের বেশি সময় চলে যায়, সে ক্ষেত্রে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার দাবি ওঠা স্বাভাবিক।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত