ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩১ মিনিট আগে
শিরোনাম

খালেদা জিয়ার প্যারোল নিয়ে মন্তব্যের কিছু নেই: প্রধানমন্ত্রী

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০১৯, ১৭:০৪

খালেদা জিয়ার প্যারোল নিয়ে মন্তব্যের কিছু নেই: প্রধানমন্ত্রী

বিএনপির কারাবন্দী চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া নিয়ে এখনই মন্তব্যের কিছু নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্রুনাই সফর নিয়ে শুক্রবার বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্যারোলের জন্য সাধারণত আবেদন করতে হয়। এখন পর্যন্ত কেউ আবেদন করেনি। যেহেতু এ বিষয়ে আবেদনই করা হয়নি, তাই আমাদের মন্তব্য করার কিছু নেই।

বিএনপির নির্বাচিতদের সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির বিজয়ীদের শপথের বিষয়ে সরকারের কোনো চাপ নেই। ওই এলাকার ভোটারদের চাপে তারা শপথ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ২১ এপ্রিল শ্রীলঙ্কায় ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক সিরিজ বোমা হামলায় নিহতদের স্মরণ করছি। এ হামলায় আমার ফুফাতো ভাই শেখ সেলিমের মেয়ের ছেলে আমার নাতি ৮ বছরের নিষ্পাপ শিশু জায়ান চৌধুরী নিহত হয়েছে। জায়ানের বাবা মশিউর হক চৌধুরী এখন পর্যন্ত গুরুতর আহত অবস্থায় শ্রীলঙ্কার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমি নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।

তিনি বলেন, আমি ব্রুনাইয়ের রাজধানীতে পৌঁছানোর পর এই মর্মান্তিক হামলার খবর শুনতে পাই। আমাদের প্লেনটা যখন আকাশে উড়ছিল তখন খবর আসলো এ ধরনের হামলা হয়েছে। পরবর্তীতে ওখানে নেমে বিস্তারিত খবরটা পাই। জায়ানের মৃত্যুর খবর পাই। এ খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীকে একটি শোক বার্তা পাঠাই। আমি এ হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সকলকে কার্যকর এবং ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই।

জঙ্গি হামলার আশঙ্কা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এ বিষয়ে সজাগ আছি। গোয়েন্দারা চমৎকার কাজ করছে। গতকালও আমি আমাদের গোয়েন্দা প্রধানদের সঙ্গে কথা বলেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গিবাদ দমনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। জনমত গড়ে তুলতে হবে। সচ্ছল পরিবারের সন্তানরা একাজে জড়াচ্ছে। আমার প্রশ্ন- তারা এই আত্মঘাতী হামলা করে কী পাচ্ছে।

তিনি বলেন, নিউজিল্যান্ডে কী হলো? একজন মাথায় ক্যামেরা লাগিয়ে গুলি করার মুহূর্ত সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়ে দিচ্ছে। কী বীভৎস! কী বীভৎস মানসিকতা! সে একজন খ্রিস্টান। আর এখানে (শ্রীলঙ্কায়) যারা শনাক্ত হয়েছে, তারা মুসলমান।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী ২১ এপ্রিল তিন দিনের সরকারি সফরে ব্রুনেইয়ের রাজধানী বন্দর সেরি বেগাওয়ানে পৌঁছান। সফরে তিনি ব্রুনেইয়ের সুলতান হাজি হাসানাল বলকিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনাসহ সুলতান ও রাজপরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বাংলাদেশ-ব্রুনেই বিজনেস ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ বেশ কিছু কর্মসূচিতে যোগ দেন।

ব্রুনেইয়ের সুলতানের সরকারি বাসভবন নুরুল ইমানে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ব্রুনেইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়ার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে কৃষি, মৎস্য, পশুসম্পদ, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি এবং এলএনজি সরবরাহ-সংক্রান্ত সাতটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সাতটি চুক্তির মধ্যে ছয়টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি বিনিময় নোট।

এগুলো হচ্ছে কৃষি ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক, মৎস্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার সমঝোতা স্মারক, পশুসম্পদ ক্ষেত্রে সহযোগিতার সমঝোতা স্মারক, সাংস্কৃতিক ও শিল্প সহযোগিতা সম্পর্কিত সমঝোতা স্মারক, যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতার সমঝোতা স্মারক, এলএনজি সরবরাহে সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্পর্কিত সমঝোতা স্মারক এবং কূটনৈতিক ও অফিশিয়াল পাসপোর্ট হোল্ডারদের জন্য ভিসার ছাড়সংক্রান্ত বিনিময় নোট।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত মঙ্গলবার সকালে ব্রুনেইয়ের রাজধানীতে কূটনৈতিক এলাকা জালান কেবানজাসানে বাংলাদেশ হাইকমিশনের নতুন চ্যান্সেরি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরে তিনি রয়েল রিগালিয়া মিউজিয়াম পরিদর্শন করেন।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্য পাঁচটি দেশের সমন্বয়ে আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ফোরাম গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। ব্রুনেইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সময় রোহিঙ্গা সংকটের ন্যায়সংগত ও স্থায়ী সমাধানের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত