তিউনিশিয়ায় নৌকাডুবিতে হবিগঞ্জের ২ যুবক নিখোঁজ
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ মে ২০১৯, ১৯:২০ আপডেট : ১৩ মে ২০১৯, ১৯:২২
ভাগ্যর চাকা ঘুরাতে গিয়ে হবিগঞ্জের দুই যুবকের ভাগ্যে কী ঘটেছে জানতে চায় তাদের পরিবার। তিউনিশিয়ায় নৌকা ডুবিতে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লুকড়া গ্রামের ২ যুবকের নিখোঁজ হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাদের স্বজনরা। নিখোঁজদের বাড়িতে চলছে কান্নার রোল।
পিতা মাতা আর ভাই বোনদের আহাজারিতে বাতাস হয়েছে ভারী। নিখোঁজ দুই যুবকের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা জানতে প্রশাসন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে খোঁজ নিচ্ছেন তারা।
স্থানীয় ও নিখোঁজদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, লোকড়া গ্রামের আব্দুল কাইয়ুম (২২), আব্দুল মোক্তাদির (২২), মামুন মিয়া (২২) ও নূরুল আমীন (২৮) ইতালি যাবার উদ্দেশ্যে ৭/৮ মাস আগে স্থানীয় দালাল মোজাক্কিরের হাত ধরে বাড়ি থেকে বের হয় হয়। মোজাক্কিরের বাড়ি বানিয়াচঙ্গ উপজেলার হিয়ালা গ্রামে।
গত ৯ মে রাতে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশে আব্দুল কাইয়ুম ও আব্দুল মোক্তাদির নৌকায় ওঠেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন একই গ্রামের মামুন মিয়া (২২) এবং নূরুল আমীন (২৮)। যাত্রীদের নেয়া হচ্ছিল দু’টি নৌকায় ভাগ করে। প্রথম নৌকায় ওঠেন নূরুল আমীন। ওই নৌকাটি না ডোবায় তিনি ইতালিতে পৌঁছেছেন। পরবর্তী নৌকায় বাকি তিনজন ছিলেন। তিউনিসিয়া উপকূলে সেটি ডুবে যায়। এরপর সাঁতরাতে থাকেন তিনজন। মামুন মিয়া উদ্ধার হলেও নিখোঁজ রয়েছেন কাইয়ুম এবং মোক্তাদির।
নিখোঁজ মোক্তাদিরের চাচা আব্দুল খালেক জানান, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের (পিআইও) মাস্টার রোলে এমএলএস এস পদে চাকরি করতেন মোক্তাদির। ইটালিতে মোটা অংকের বেতন পাবেন এমন লোভ দেখিয়ে দালাল মোজাক্কির ও রহমত বিএ পাশ ভাতিজা মোক্তাদিরকে ফাঁদে ফেলে। বিভিন্ন দেশ ঘুরিয়ে তাকে লিবিয়ায় বন্দি করে রাখে। সেখান থেকে ভাতিজার কথামত দালালদের প্রায় ৯ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে।
লোকড়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আব্দুন নূর জাহির জানান, উদ্ধার হওয়া মামুন মিয়া তার ভাগ্নে। মোবাইলে মামুন মিয়া জানিয়েছেন- নৌকাডুবির পর মোক্তাদিরের সঙ্গে তিনি হাত ধরে সাঁতার কেটেছেন ৭/৮ ঘণ্টা। একপর্যায়ে হাত থেকে ছুটে গেলে আর মোক্তাদিরকে দেখতে পাননি।
নিখোঁজ আব্দুল কাইয়ুমের বাবা হাজী আলাউদ্দিন জানান, গত বুধবার (৮ মে) তার ছেলে বাড়িতে ফোন করে ইতালি যাওয়ার বিষয়টি জানায়। নৌকাডুবির পর থেকে তাদের সন্তানের খবর পাচ্ছেন না। দালাল মোজাক্কির ও রহমত আলী একেক সময় একেক ধরনের তথ্য দিচ্ছেন যা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাচ্ছিরুল ইসলাম ও স্থানীয় লুকড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্বাস উদ্দিন ফরহাদ নিখোঁজদের বাড়িতে যান ও তাদের অভিভাবকদের সাথে কিছু সময় কথা বলেন।
জানতে চাওয়া হলে হবিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাখাওয়াত হোসেন রুবেল বলেন, নিখোঁজ দুই যুবকের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করেছি। তথ্যগুলো বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় বিষয়টি খোঁজ খবর নেবে। তাদের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তী কাজ সম্পন্ন করা হবে।
বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে