ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভাঙচুর লুটপাট, গ্রেপ্তার ১৬

  কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২১ জুন ২০১৯, ২১:১২

পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভাঙচুর লুটপাট, গ্রেপ্তার ১৬

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নির্মাণাধীন পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে শ্রমিক অসন্তোষে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও হত্যার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। ভাঙচুর, হামলা ও লুটপাটের মামলায় ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাতে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তা পরিচালক ওয়াং লিবিং অজ্ঞাত এক হাজার জনকে আসামি করে এ দুটি মামলা করেন।

এছাড়া পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নিরাপত্তার জন্য আট শতাধিক পুলিশসহ বিজিবি, র‌্যাব ও আর্মড পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ ইতোমধ্যে সুজন তালুকদার, মামুন তালুকদার, সজিব, জলিল ফকিরকে এবং ঢাকার কেরানিগঞ্জ এলাকা থেকে নাসির, সুজন, আবদুল লতিফ, আতিকুর রহমান, ইমাম হাসান, মেহেদী হাসান, রাসেল আলী, শামিম মিয়া, মামুন, আইয়ুব, ফারুক ও বেল্লালকে গ্রেপ্তার করেছে। এদের সবার বাড়ি দেশের বিভিন্ন জেলায় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

কলাপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক শাখাওয়াত জানান, চায়না শ্রমিক জাং ইয়ান ফেং হত্যার ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আরো বেশ কয়েকজন আহত শ্রমিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ মামলায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

কলাপাড়া থানার ওসি মো.মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, পুলিশ ইতোমধ্যে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংলগ্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে লুট হওয়া ল্যাপটপ, সিপিইউ, মনিটর ও লাগেজসহ চার জন এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া নিহত বাংলাদেশী শ্রমিক সাবিন্দ্র দাসের মৃহদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সাবিন্দ্রর দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর ঘটনায় ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহবায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি, পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি এবং পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে পৃথক একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। যারা আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিকেলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বয়লার থেকে পড়ে নিহত বাংলাদেশি শ্রমিক সাবিন্দ্র দাসের (৩৩) লাশ গুম করার গুজবে বিকেল থেকে মধ্যরাত অবধি বাঙালি ও চায়না শ্রমিকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে চায়না শ্রমিক জাং ইয়ান ফেং (২৬) নিহত হন। এসময় চায়না ও বাংলাদেশি শ্রমিকসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। এ সংঘর্ষের ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করাসহ ভিডিও ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটে।

এরপর মঙ্গলবার রাতে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে পুলিশ, র‌্যাব ও আর্মড পুলিশ যৌথভাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। বুধবার সকালে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, সচিব, এমডি, বরিশাল ডিআইজিসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনসহ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠক শেষে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন তারা। কিন্তু ঘটনার পর থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। মামলা ও গ্রেপ্তার আতংকে অনেক বাঙালি শ্রমিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকা ত্যাগ করছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত