বাজেটে ৬ প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার আহ্বান ডিএসইর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৩, ১৫:৪৫
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (ডিএসই) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বন্ড থেকে সুদের আয়ের ওপর কর অব্যাহতি ও লভ্যাংশ আয়ের ওপর আরোপিত উৎসে কর প্রত্যাহারসহ ছয় প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর বিজয়নগরের ফারস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে ‘বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে’ ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বাবু এ আহ্বান জানান।
বাকি প্রস্তাবগুলো হচ্ছে, তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর ব্যবধান ১০ শতাংশ করা, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা, স্টক এক্সচেঞ্জের এসএমই কোম্পানিগুলোর কর ব্যবধান ১০ শতাংশ করা এবং ব্রোকার হাউজের লেনদেনের ওপর উৎসে কর কমানো।
লিখিত বক্তব্যে ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বলেন, বর্তমানে কর্পোরেট বন্ডের বাজারের আকার খুবই ছোট যা পুঁজিবাজারের পাশাপাশি অর্থ বাজারেও বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা তৈরি করে। একটি কার্যকরী বন্ড বাজার অর্থনীতিকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করতে পারে। সব ধরনের বন্ডের সুদ অব্যাহতির আওতায় আনা হলে একটি শক্তিশালী বন্ড বাজার সৃষ্টিতে উৎসাহিত করবে।
অধ্যাপক হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বলেন, কোম্পানিগুলো কর-পরবর্তী মুনাফা থেকে লভ্যাংশ দিচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, লভ্যাংশের ওপর কর এক ধরনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের করারোপণ। লভ্যাংশের ওপর উৎস কর চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচিত হলে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে৷
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির এবং অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর্পোরেট কর হারের পার্থক্য ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। তাহলে কর সুবিধা নেওয়ার জন্য অধিক সংখ্যক কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করবে। যা পুঁজিবাজারকে আরও শক্তিশালী ও গতিশীল করবে।
ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, ডিএসইর ট্রেকহোল্ডারদের (ব্রোকারেজ হাউজের মালিক) প্রধান আয় (টার্ন-ওভার) হচ্ছে কমিশন। যদি বেশি হারে কর নেওয়া হয়, তবে ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির পক্ষে টিকে থাকা এবং পুঁজিবাজারে অবদান রাখা কঠিন হবে।
তিনি বলেন, ডিএসইর এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হারের পার্থক্য ন্যূনতম ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। বর্তমানে ডিএসইর তালিকাভুক্ত এসএমই কোম্পানিগুলোকে পর্যাপ্ত পরিমাণ কর প্রদান করতে হয়, যা কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে এবং এসএমই কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য উৎসাহ হারাচ্ছে। ফলে এসব কোম্পানির কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কর আদায় সম্ভব হচ্ছে না। যদি এই জাতীয় কোম্পানিগুলোকে হ্রাসকৃত হারে কর ছাড়ের অনুমতি দেওয়া হয়, তবে উক্ত কোম্পানি তালিকাভুক্তির জন্য উৎসাহিত হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে সরকারের কর আদায় বৃদ্ধি পাবে।
অধ্যাপক হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বলেন বলেন, বর্তমানে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ। তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।
তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তাব অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কাছে জমা দিয়েছি। আশা করছি, পুঁজিবাজারের স্বার্থে আমাদের প্রস্তাব বিবেচনা করবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বতন্ত্র পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও রুবাবা দৌলা, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ডিএসইর সিএফও ও ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাত্তিক আহমেদ শাহ, সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার সামিউল হক এবং আসাদুর রহমান।
আরো পড়ুন: প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হবে: ডিএসই চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে