ডাকসু ভবনের ভেতরে অভিষেক সভা, বাইরে বিক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০১৯, ১৪:১৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরসহ নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটি। এর প্রতিবাদ জানিয়ে ডাকসু ভবনের বাইরে চলছে বিক্ষোভ। সেখানে ছাত্রদল ও একাধিক বাম ছাত্রসংগঠেনর নেতাকর্মীরা কর্মসূচি পালন করছেন।
ডাকসু ভবনের সামনে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে মানববন্ধন করেছেন ছাত্র ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা। অভিষেক অনুষ্ঠান থেকেই পুনর্নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে ছাত্রদল। শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবনের সামনে ছাত্রদলের প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী ও জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ দাবি জানান।
তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, এটা স্পষ্ট। এর দায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে হবে। এছাড়া, যারা এই নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির সাথে জড়িত ছিল সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ সময় সেখানে ছাত্রদলের প্যানেল থেকে ভিপি পদে নির্বাচন করা মোস্তাফিজুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রদলের বিক্ষোভ
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরসহ নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটি। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডাকসু ভবনে ডাকসুর প্রথম কার্যকরী সভায় কমিটির সদস্যরা অংশ নিয়েছেন। এর মাধ্যমে দীর্ঘ ২৮ বছর পর ফের সচল হলো ডাকসু।
মানববন্ধনে ছাত্র ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা।
ডাকসুর নবনির্বাচিত কমিটির প্রথম কার্যকরী সভায় এর সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, ভিপি নুরুল হক নুর, জিএস গোলাম রাব্বানী, এজিএস সাদ্দাম হোসেন, সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনসহ নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আজীবন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। ডাকসুর প্রথম কার্যকরী সভায় প্রধানমন্ত্রীকে আজীবন সদস্য করার প্রস্তাব তোলেন জিএস গোলাম রাব্বানী। তবে এ সময় এই সিদ্ধান্তে আপত্তি জানান ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর। তার মতে, ডাকসুর এই নির্বাচন অনেকটাই বিতর্কিত। এমন একটি বিতর্কিত নির্বাচনে নির্বাচিত ডাকসু কমিটির মাধ্যমে সম্মানিত প্রধানমন্ত্রীকে আজীবন সদস্যপদ দেওয়া হোক তা চাই না। বরং পরবর্তীতে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে সেই কমিটি প্রধানমন্ত্রীকে আজীবন সদস্য পদ দিলে সেটাই হবে তার মতো সম্মানিত ব্যক্তির প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন।
প্রসঙ্গত, গত ১১ মার্চ ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের পর শনিবার (২৩ মার্চ) এই মেয়াদের প্রথম কার্যকরী সভার মাধ্যমে দীর্ঘ ২৮ বছর পর আবারও যাত্রা শুরু করলো ডাকসু। এই নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ২৫টি পদের ২৩টিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী জয়লাভ করেন। বাকি দুটি পদের মধ্যে ভিপি পদে জয়লাভ করেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর এবং সমাজসেবা সম্পাদক হিসেবে জয়লাভ করেন আকতার হোসেন। ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এবং সহ-সম্পাদক (এজিএস) নির্বাচিত হন ছাত্রলীগের ঢাবি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।
এছাড়া হল সংসদে ১৮টি হলের মধ্যে ৯টি হলেই ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল জয়ী হয়। এর আগে সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে