ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ০১ জানুয়ারি, ১৯৭০
শিরোনাম

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আর শিক্ষকদের শোকজে গুমোট খুবি

  খুলনা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২০, ০৩:১৪

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আর শিক্ষকদের শোকজে গুমোট খুবি

বেতন-ফি কমানো, আবাসন সঙ্কটের সমাধান, দ্বিতীয় পরীক্ষণের ব্যবস্থা করা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী অধ্যাদেশের সংস্কার বা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগের সুরাহাসহ বিভিন্ন দাবিতে ৯ মাস আগে উত্তাল হয়ে উঠেছিল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।

শিক্ষার্থীদের ওই আন্দোলনে তখন একাত্মতা প্রকাশ করেছিলেন খুবি’র বেশ কয়েকজন শিক্ষক। ৯ মাস আগের ওই আন্দোলনের সূত্র ধরে চার শিক্ষককে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর জবাবও দিয়েছেন তারা, কিন্তু কর্তৃপক্ষের কাছে তা গ্রহণযোগ্য হয়নি।

অন্যদিকে ছাত্ররা তাদের আন্দোলনের বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষকদের বক্তব্যের বিষয়টিকে তাদের জন্য এক প্রকার বুমেরাং হিবেসে দাবি করেছেন। এসব বিষয় নিয়ে গুমোট অবস্থা বিরাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে।

আর ছাত্র আন্দোলনের এতোদিন পরে ব্যাখ্যা চাওয়ার বিষয়টিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছেন নোটিশ পাওয়া শিক্ষকেরা।

নোটিশ পাওয়া ওই চার শিক্ষক হলেন- বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল ফজল, প্রভাষক শাকিলা আলম, ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগের প্রভাষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরী ও ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আয়েশা রহমান আশা। ১৩ অক্টোবর তাদের নোটিশ দিয়ে তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। পরে তারা জবাব দেওয়ার জন্য পৃথকভাবে সময় চেয়ে আবেদন করেন।

নোটিশ পাওয়া শিক্ষকেরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অসংগতির বিরুদ্ধে তারা বিভিন্ন সময় যৌক্তিক প্রতিবাদ করেছেন। এ জন্যই তাদের ‘শায়েস্তা’ করতে এই শোকজ।

​নোটিশ পাওয়া শিক্ষকদের একজন মো. আবুল ফজল বলেন, ঘটনার এত দিন পর প্রশাসনের এমন চিঠি পেয়ে আমরা হতবাক। চিঠি পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে অপমানবোধ করেছি। শিক্ষার্থীরা যে দাবিতে আন্দোলন করছিলেন, তা ছিল সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকারের। এ কারণেই আমরা শিক্ষকেরা সেখানে সমর্থন দিয়েছি। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কিছু অসংগতির বিরুদ্ধেও আমরা কয়েকজন শিক্ষক সোচ্চার ছিলাম।

২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে শুরু হয় ছাত্রদের আন্দোলন। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা ফের বিক্ষোভ করেন। ওই দিন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। একপর্যায়ে প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা।

সে সময় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্যও প্রকাশ করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এস এম আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ১ জানুয়ারি বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে গেটের বাইরে অবস্থান করে নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। বেলা সোয়া দুইটার দিকে শিক্ষার্থীদের সামনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানাতে হাজির হন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার ও ছাত্রবিষয়ক পরিচালক। কিন্তু আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ডিনদের কোনো কথা শুনতে চাননি। কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী ডিনদের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন, তা সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত, অশোভন, অত্যন্ত দুঃখজনক ও উদ্বেগের।

বাংলাদেশ জার্নাল/আর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত