ঢাকা, বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

ইমতিয়াজ বুলবুলের লেখা জনপ্রিয় সব গান

  বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০১৯, ০৯:৩১

ইমতিয়াজ বুলবুলের লেখা জনপ্রিয় সব গান

প্রখ্যাত সংগীত পরিচালক, গীতিকার, সুরকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল আর নেই। মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে রাজধানীর বাড্ডায় আফতাব নগরে নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। প্রখ্যাত ওই সংগীত শিল্পী পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গেলেও তিনি ভক্ত ও শ্রতাদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন চিরদিন।

গানের অ্যালবাম তৈরি থেকে শুরু করে অসংখ্য চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন তিনি। উপহার দিয়েছেন বাংলা চলচ্চিত্রের অসংখ্য মানসম্মত গান, যা আজও শ্রোতামহলে বেশ জনপ্রিয়। সব কটা জানালা খুলে দাও না ইতিহাস হয়ে থাকবে স্মৃতির পাতায়।

১৯৭৮ সালে মেঘ ‘বিজলি বাদল’ ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল।

বুলবুল অসংখ্য গানে সুর করেছেন, যার অধিকাংশ গানই তার নিজের রচিত। এসব কানে সুর দিয়েছেন এন্ড্রু কিশোর ও সাবিনা ইয়াসমিন রুনা লায়লা সামিনা চৌধুরী জেমসসহ দেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পীরা। তন্মধ্যে বুলবুলের লিখা উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গান নিম্নে দেয়া হলো-

সব কটা জানালা খুলে দাও না, মাঝি নাও ছাইড়া দে ও মাঝি পাল উড়াইয়া দে, সেই রেল লাইনের ধারে, সুন্দর সুবর্ণ তারুণ্য লাবণ্য, ও আমার আট কোটি ফুল দেখ গো মালি, মাগো আর তোমাকে ঘুম পাড়ানি মাসি হতে দেব না, একতারা লাগে না আমার দোতারাও লাগে না, আমার সারাদেহ খেয়ো গো মাটি, আমার বুকের মধ্যেখানে, আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন, আমি তোমারি প্রেমও ভিখারি, ও আমার মন কান্দে, ও আমার প্রাণ কান্দে, আইলো দারুণ ফাগুনরে, আমার একদিকে পৃথিবী একদিকে ভালোবাসা, আমি তোমার দুটি চোখে দুটি তারা হয়ে থাকবো, আমার গরুর গাড়িতে বৌ সাজিয়ে, পৃথিবীর যত সুখ আমি তোমারই ছোঁয়াতে যেন পেয়েছি, তোমায় দেখলে মনে হয়, হাজার বছর আগেও বুঝি ছিল পরিচয়, কত মানুষ ভবের বাজারে, তুই ছাড়া কে আছে আমার জগৎ সংসারে, বাজারে যাচাই করে দেখিনি তো দাম, আম্মাজান আম্মাজান, স্বামী আর স্ত্রী বানায় যে জন মিস্ত্রি, আমার জানের জান আমার আব্বাজান, ঈশ্বর আল্লাহ বিধাতা জানে, এই বুকে বইছে যমুনা, সাগরের মতই গভীর, আকাশের মতই অসীম, প্রেম কখনো মধুর, কখনো সে বেদনা বিধুর, আমার সুখেরও কলসি ভাইঙ্গা গেসে লাগবে না আর জোড়া, পৃথিবীর জন্ম যেদিন থেকে, তোমার আমার প্রেম সেদিন থেকে।

এ ছাড়া রয়েছে- পড়ে না চখের পলক, যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে, প্রাণের চেয়ে প্রিয়, কী আমার পরিচয়, অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে, তুমি আমার জীবন, আমি তোমার জীবন, তোমার আমার প্রেম এক জনমের নয়, তুমি হাজার ফুলের মাঝে একটি গোলাপ, জীবনে বসন্ত এসেছে, ফুলে ফুলে ভরে গেছে মন, ঘুমিয়ে থাকো গো স্বজনী আমার হৃদয় একটা আয়না, ফুল নেব না অশ্রু নেব, বিধি তুমি বলে দাও আমি কার, তুমি মোর জীবনের ভাবনা, হৃদয়ে সুখের দোলা, তুমি আমার এমনই একজন, যারে এক জনমে ভালবেসে ভরবে না এ মন।

আরও রয়েছে- উত্তরে ভয়ঙ্কর জঙ্গল দক্ষিণে না যাওয়াই মঙ্গল, কোন ডালে পাখিরে তুই বাঁধবি আবার বাসা, একাত্তুরের মা জননী কোথায় তোমার মুক্তিসেনার দল আগুন, বিদ্যালয় মোদের বিদ্যালয় এখানে সভ্যতারই ফুল ফোটানো হয়, আমায় অনেক বড় ডিগ্রি দিসে, এই জগৎ সংসারে তুমি এমনই একজন, জীবন ফুরিয়ে যাবে ভালবাসা ফুরাবে না জীবনে, পৃথিবীতো দু দিনেরই বাসা, দু দিনেই ভাঙে খেলাঘ, অনেক সাধনার পরে আমি পেলাম তোমার মন, ওগো সাথি আমার তুমি কেন চলে যাও, তুমি সুতোয় বেঁধেছ শাপলার ফুল নাকি তোমার মন, একদিন দুইদিন তিনদিন পর, তোমারি ঘর হবে আমারি ঘর, কী কথা যে লিখি, কি নামে যে ডাকি।

আরও রয়েছে- নদী চায় চলতে, তারা যায় জ্বলতে, চতুর্দোলায় ঘুমিয়ে আমি ঘুমন্ত এক শিশু, চোখের ভেতর কল বসাইছে, আমার জীবন নায়ে বন্ধু তুমি প্রাণের মাঝি, তুমি স্বপ্ন তুমি সাধনা, নদী চায় চলতে, তারা যায় জ্বলতে, আকাশটা নীল মেঘগুলো সাদা সাদা, আমার তুমি ছাড়া কেউ নেই আর, শেষ ঠিকানায় পৌঁছে দিয়ে আবার কেন পিছু ডাকো, চিঠি লিখেছে বউ আমার, মাগো আর নয় চুপি চুপি আসাসহ আরও অনেক গান।

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের ছেলে সামীর আহমেদ বলেন, বর্তমানে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মৃতদেহ আফতাব নগরে নিজ বাসায় রাখা হয়েছে। শেষ শ্রদ্ধ্যা জানানোর জন্য নিয়ে আসা হবে শহীদ মিনারে।

প্রখ্যাত সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দেশের একজন সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব। একাধারে গীতিকার, সুরকার এবং সঙ্গীত পরিচালক। ১৯৭০ দশকের শেষ লগ্ন থেকে অমৃত্যু বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পসহ সঙ্গীত শিল্পে সক্রিয় ছিলেন।

তিনি রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং রাষ্ট্রপতির পুরস্কার-সহ অন্যান্য অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি ১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ১৯৭৮ সালে মেঘ বিজলি বাদল ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। তিনি স্বাধীনভাবে গানের অ্যালবাম তৈরি করেছেন এবং অসংখ্য চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন।

সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, সৈয়দ আব্দুল হাদি, এন্ড্রু কিশোর, সামিনা চৌধুরী, খালিদ হাসান মিলু, আগুন, কনক চাঁপা-সহ বাংলাদেশি প্রায় সব জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পীদের নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল নিয়মিত গান করেন ১৯৭৬ সাল থেকে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত