ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

করোনা নিয়ে নেতাদের যত ভুয়া তথ্য

করোনা নিয়ে নেতাদের যত ভুয়া তথ্য

করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে অনলাইনে প্রায় প্রতিদিনই নানা রকম উদ্ভট ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বা দাবি ছড়াচ্ছে। এর মধ্যে কিছু এসেছে বড় বড় রাজনৈতিক নেতার মুখ থেকে। এগুলোর মধ্যে হাসপাতালের ফেস মাস্ক চুরি থেকে শুরু করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসা এবং জীবাণু যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে এই ভাইরাস ব্যবহারের কথা, সব রকম দাবিই শোনা গেছে তাদের মুখে।

এখানে দেখে নিন এরকমই কিছু দাবির কথা।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প

তিনি শুরুতে করোনাভাইরাসকে তেমন পাত্তা দিতে চান নি। পরে অবশ্য এটা বিশ্বব্যাপি মহামারিতে পরিণত হয়েছে বলে বিবৃতি দেন।

যখন ফেসমাস্কের চাহিদা বেড়ে গেল, তখন ট্রাম্প দাবি করেছিলেন নিউইয়র্কের হাসপাতাল থেকে বিপুল সংখ্যক সার্জিক্যাল মাস্ক চুরি হয়ে যাচ্ছে। তিনি এ নিয়ে প্রশ্ন করেন এত মাস্ক কোথায় যাচ্ছে? এগুলো কি পেছনের দরজা দিয়ে অদৃশ্য হযে যাচ্ছে?

কিন্তু এরকম বিপুল সংখ্যায় মাস্ক চুরির কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নি।

করোনাভাইরাসের উৎপত্তি যুক্তরাষ্ট্রে

বেশ কিছু চীনা কর্মকর্তা এটা বার বার বলার চেষ্টা করেছেন যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সূচনা চীনে হয়নি। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজান বার বার এ কাজ করেছেন।

চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়াও বার বার এসব মিথ্যা দাবি তুলে ধরার চেষ্টা করেছে যে কোভিড ১৯ হয়তো সৃষ্টি করেছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।

আরেকটা দাবি ছিল যে চীনের অনেক আগেই ইতালিতে এ ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছিল। কিন্তু এরকম দাবির সত্যতার পক্ষে কোন প্রমাণই পাওয়া যায়নি।

বৈজ্ঞানিকরা এ বিষয়ে একমত যে গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ চীনের উহান শহরেই প্রথম অন্য কোনও প্রাণী থেকে করোনাভাইরাস মানবদেহে সংক্রমিত হয়েছিল।

চীনের সৃষ্টি করোনাভাইরাস

ইতালির জাতীয়তাবাদী নেতা মাত্তিও সালভিনি তার সমর্থকদের উদ্দেশে বলেছিলেন, চীনই একটি ল্যাবরেটরিতে করোনাভাইরাস সৃষ্টি করেছে। এটাও আরেকটা মিথ্যে দাবি। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় তার এ দাবি ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়।

এখন বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত যে, কোভিড ১৯ মানুষের তৈরি কোনও ভাইরাস নয়।

ম্যালেরিয়ার ওষুধে কোভিড ১৯ সেরে যাবে

ভুয়া তথ্য প্রচারের জন্য ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ার বোলসোনারোর অনেক উক্তি সেন্সর করেছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্র্রাম, টুইটার এবং ইউটিউবের মত সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো।

এসব পোস্টের একটিতে তিনি দাবি করেছিলেন ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন সম্পূর্ণরূপে করোনাভাইরাস সারাতে পারে। আসলে এ নিয়ে পরীক্ষা হয়েছে, ওষুধটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগও হচ্ছে কিন্তু সার্বিকভাবে এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হয় নি।

দুর্বল মিউটেশন

ভারতের একজন উর্ধ্বতন রাজনীতিবিদ সুব্রামানিয়াম স্বামী দাবি করেন, সেখানে যে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে সেটি এ ভাইরাসের একটি দুর্বল মিউটেশন এবং মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা একে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারে। কিন্তু তার দাবি সত্য নয়। ভারতে ইতিমধ্যে ১৫ হাজারের বেশি মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে আরও ৫ শতাধিক।

তাছাড়া গবেষকরাও তার এ দাবি মেনে নিতে নারাজ। সব ভাইরাসেরই মিউটেশন বা পরিবর্তন হয়। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এমন কোনও নমুনা এখনো পাননি যে কোভিড ১৯ কত মারাত্মক হতে পারে। আসলে এ ব্যাপারে অনেক কিছুই এখনো মানুষের অজানা।

এই কোভিড ১৯ আমাদের সবার জন্যই বিপদের কারণ। কিন্তু বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় করোনা নিয়ে যেসব ভুয়া তথ্য ছড়ানো হয়েছে তাতে বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাসের ভয়াবহতা মোটেও কমেনি। বরং এ পর্যন্ত এতে আক্রান্ত হয়েছে বিশ্বের ২৪ লাখের বেশি মানুষ এবং মারা গেছে আরও ১ লাখ ৬৫ হাজার জন।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত