ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪১ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘আমি দেখতে আমার দাদির মতো’

‘আমি দেখতে আমার দাদির মতো’

তার শাড়ি পরার ধাঁচ, হাসির উজ্জ্বলতা, চুলের ছাঁট, হাত নাড়ানোর মুদ্রা— এ সবই বড় পরিচিত ভারতবাসীর। দাদি ইন্দিরা গান্ধীকে প্রতি পদক্ষেপে মনে করিয়ে দেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র।

সেই নাতনি আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজনীতিতে পা দেওয়ার পর লক্ষৌয়ের দলীয় কার্যালয়ে তার দাদির স্মৃতিসম্বলিত ঘরটিতেও যেন প্রাণ ফিরে এল। ঘষামাজা চলছে নতুন করে। ওই ঘরে ওঠার একটা পৃথক সিঁড়ি আছে, যেটা শুধু ইন্দিরাই ব্যবহার করতেন। সাফাই হচ্ছে সেই সিঁড়িও।

উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস সূত্রের খবর, শীঘ্রই ওই সিঁড়ি বেয়ে উঠে দাদির ঘরটিতে এসে বসবেন প্রিয়াঙ্কা। দাদির সঙ্গে তার সাদৃশ্যের কথা অস্বীকার করেন না তিনি নিজেও। বলেছিলেন এক সাক্ষাৎকারে, ‘আমায় দেখতে আমার দাদির মতো। আমি হয়তো অনেকটা আমার দাদির মতো। ছোটবেলায় এমন একটা বাড়িতে বড় হয়েছি যেখানে তিনিই ছিলেন কর্ত্রী। তার একটা প্রভাব তো আমার উপর পড়েছিল।’

তবে স্বভাবের দিক থেকে, তার দাবি, তিনি বাবা রাজীবের বেশি কাছাকাছি— অনেক ‘নরম’।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, শুধু ইন্দিরার মতো দেখতে বলে নন, শুধু রাজীবের মেয়ে বলে নন, অপেক্ষাকৃত নবীন প্রজন্মের কাছেও রাজীবকন্যার ব্যক্তিত্ব ও কারিশমা প্রায় লোককথার মতো। আমেথি-রায়বরেলির মাঠঘাট-চৌরাহায় শাড়ি পরিহিতা প্রিয়াঙ্কাকে কদাচিৎ দেখা গেলেও বেশির ভাগ সময়েই তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে। সেটা জনচিত্তে তার আকর্ষণকে আরও বাড়িয়েছে। রাজীব-হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাজ্ঞাপ্রাপ্ত নলিনী মুরুগনের সঙ্গে তার সেলে গিয়ে দেখা করা এবং ক্ষমা প্রদর্শনের ঘটনা জনমনে প্রিয়াঙ্কার চরিত্রে একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।

‘আমি কিন্তু আমার মা এবং ভাইয়ের থেকে অনেক বেশি নিভৃতে থাকতে পছন্দ করি। তবে লাজুকও নই। কেউ জানতে চাইলে নিজের অবস্থান স্পষ্ট বলে দিই।’ দীর্ঘদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন প্রিয়ঙ্কা।

২০০৪ সালে আমেথিতে প্রথম বার লোকসভা ভোটে দাঁড়ালেন রাহুল। মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় তার সফরে আগাগোড়া সঙ্গী প্রিয়াঙ্কা এবং তার স্বামী রবার্ট ভদ্র। খেতের কাজ ফেলে ছুটে আসা গরীবগুরবো মানুষজন কপাল চাপড়ে বলতেন, ‘এ যেন যুবতী ইন্দিরা ফের হাজির’! উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে সেবার সাবলীল ভাবেই কথা বলেছিলেন প্রিয়াঙ্কা। তখন রাহুলই ছিলেন মিডিয়ার চোখে স্বল্পবাক এবং অর্ন্তমুখী। দাদাকে সামনে এগিয়ে দিতে উন্মুখ বোন সেদিন বলেছিলেন, ‘রাহুল আমার থেকেও অনেক বেশি এবং ভালো কথা বলে।’

সে বার সনিয়া গান্ধীর প্রচারের বেশির ভাগ বক্তৃতাও লিখে দিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা। কয়েক বছর পরে তিনিই আবার জানিয়েছিলেন, ‘এখন আর লিখে দেওয়ার দরকার পড়ে না। আমার মা জনসভায় বক্তৃতা দেওয়ার ব্যাপারে আগে খুব লাজুক ছিলেন। কিন্তু পরিবেশ-চ্যালেঞ্জ-পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গে অনেক বদলে গিয়েছেন। একই ভাবে বদলেছে রাহুলও।’

জমি দুর্নীতি নিয়ে রবার্ট ভদ্রের বিরুদ্ধে বিজেপি আক্রমণ করেছে লাগাতার। কংগ্রেস সম্প্রতি দায়িত্ব নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে।

প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে রবার্টের সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়েও নানা গুঞ্জন শোনা যায়। কিন্তু প্রকাশ্যে তাদের পারিবারিক চিত্রটি কখনও টোল খায়নি। প্রিয়াঙ্কা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় সহধর্মিনীকে স্বাগত জানিয়েছেন রবার্ট।

ফেসবুকে দুজনের ছবি দিয়ে রবার্ট লিখেছেন, ‘অভিনন্দন পি...জীবনের সব পর্বেই তোমার পাশে আছি। নতুন দায়িত্বের জন্য অনেক শুভকামনা।’

আনন্দবাজার

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত