ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

পাক-ভারত সংঘর্ষে বড় ভূমিকা রেখেছে ইসরায়েল

পাক-ভারত সংঘর্ষে বড় ভূমিকা রেখেছে ইসরায়েল

‘যখন আমি ‘সন্ত্রাসী আস্তানায়’ ইসরায়েলি বিমান হামলার খবরটা প্রথম শুনলাম, ভেবেছিলাম এটা গাজা বা সিরিয়ার কোনো এলাকা হবে। .... পরে বালাকোট নামটা শোনার পর বুঝতে পারলাম হামলাটা না গাজায় হয়েছে, না সিরিয়ায়; এমনকি লেবাননেও হয়নি। এটা হয়েছে পাকিস্তানে। ভারত আর ইসরায়েলকে কীভাবে মেলাবেন আপনি?’ মধ্যপাচ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সাংবাদিক রবার্ট ফিস্ক তার নিবন্ধটা শুরু করেছেন ঠিক এভাবেই।

বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট’য়ে Israel is playing a big role in India’s escalating conflict with Pakistan’ শিরোনামে প্রকাশিত দীর্ঘ নিবন্ধে তিনি বলেছেন, অতি সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে তাতে ইসরায়েলের বড় ভূমিকা রয়েছে।

তিনি মনে করেন, নয়াদিল্লির ওপর ইহুদিবাদী ইসরাইলের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ফলেই সম্প্রতি পাক-ভারত উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে ।

তিনি আরো বলেন, ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের মধ্যে বিরাজমান মুসলমান বিরোধী চেতনাকে পুঁজি করতে চাইছে ইসরায়েল। নয়াদিল্লির কাছে আরো অস্ত্রশস্ত্র বিক্রির লক্ষ্য নিয়ে এমনটি চাইছে তেল আবিব। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরো গভীর করতে এবং পাক-ভারত সম্পর্ককে আরো উত্তেজনার দিকে ঠেলে দিতেও তৎপর রয়েছে ইসরায়েল।

মঙ্গলবার পাক ভূখণ্ডের ওপর চালানো হামলায় ইসরায়েলর তৈরি স্পাইস-২০০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের কথাও তুলে ধরেন ফিস্ক। তিনি বলেন, এ সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিন দখলদার ইসরায়েল যে লাভের অঙ্ক গুনছে এটি তার পরিষ্কার প্রমাণ।

২০১৭ সালে ইসরায়েলি অস্ত্রের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল ভারত সে কথাও উল্লেখ করেছেন ফিস্ক। ইসরাইলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনতে ভারত ব্যয় করেছে ৭০ কোটি ডলার। ফিলিস্তিন এবং সিরিয়ায় এ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করেছে ইসরাইল। আর এতে এ ব্যবস্থার ধ্বংস ক্ষমতা ভারত সরকারকে প্রদর্শন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এ নিবন্ধে রবার্ট ফিস্ক ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর দেয়া একটি বিবৃতি তুলে ধরেন। ২০০৮ সালে মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলা প্রসঙ্গে নেতানিয়াহু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বলেছিলেন, ‘সন্ত্রাসী হামলার যন্ত্রনা যে কী তা ভারত ও ইসরায়েল ভালোভাবেই উপলব্ধি করতে পারে। আমাদের মুম্বাইয়ের ভয়াবহ হামলার কথাও স্মরণ আছে। আমরা দাঁত কামড়ে এই যন্ত্রণা সহ্য করেছি এবং লড়াইয়ে ফিরে এসেছি। আমরা কখনও রণে ভঙ্গ দিব না।’ ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপিও একই রকম মন্তব্য করেছিলো।

প্রসঙ্গত, পুলওয়ামা হামলাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে ভয়াবহ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার সকালে পাকিস্তানের বালাকোটে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় ভারত। ওই হামলায় তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ মানুষ খুন হয়েছে বলেও দাবি করে নয়াদিল্লি। তবে তাদের এ দাবি উড়িয়ে দেয় ইসলামাবাদ। বুধবার দু দেশের মধ্যে হামলা ও পাল্টা বিমান হামলার মধ্যে দুটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত এবং এক পাইলটকে আটক করে পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আটক ভারতীয় পাইলট অভিনন্দনকে ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দেন। আজ শুক্রবার দেশে ফেরার কথা রয়েছে তার।

সাংবাদিক রবার্ট ফিস্ক

সূত্র: দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট/ পার্স টুডে

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত