ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

মোদি সরকারের ঘোষণায় বিক্ষুব্ধ লাদাখের মুসলিমরা

মোদি সরকারের ঘোষণায় বিক্ষুব্ধ লাদাখের মুসলিমরা

ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে দুভাগ করে দুটি পৃথক কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল করা হয়েছে চলতি মাসের ৫ তারিখে। কাশ্মীর উপত্যকা, জম্মু আর লাদাখ - এই তিনটি অঞ্চল নিয়েই ছিল জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য। এর মধ্যে জম্মু এবং কাশ্মীর উপত্যকাকে নিয়ে একটি আর লাদাখকে আলাদা করে আরও একটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল তৈরি করেছে ভারত সরকার। এ নিয়ে মোদি সরকারের প্রতি চরম ক্ষুব্ধ কাশ্মীরের লোকজন। অন্যদিকে ভারত সরকারের এই পদক্ষেপে লাদাখের বাসিন্দাদের মধ্যেতৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি। তাদের কেউ কেউ এ ঘোষণায় খুশি, আবার কেউ বিরক্ত।

লাদাখের লেহ এলাকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বৌদ্ধ। অন্যদিকে সুপরিচিত কারগিল জেলার বেশিরভাগ মানুষই মুসলমান। বৌদ্ধ অধ্যুষিত লেহ’র মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই জম্মু কাশ্মীর রাজ্য থেকে আলাদা হতে চাইছিলেন। তাই যখন ভারতের পার্লামেন্ট তাদের সেই দীর্ঘদিনের দাবি মেনে নেয়, তারপর থেকে সেখানে চলছে উৎসব। ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সেজে সেখানে নাচগান গেয়ে আনন্দ প্রকাশ করছেন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন।

লেহ্-র বাজারে যখন নাচ হচ্ছে, তখনই পাশের জেলা কারগিলের মূল বাজারে হাজির নজিরবিহীন সংখ্যক নিরাপত্তার বাহিনীর সদস্যরা। একটু প্রতিবাদ বা বিক্ষোভ দেখলেই আটক করা হচ্ছে লোকজনকে। কয়েকজনকে তো বিবিসি প্রতিনিধির সামনেই আটক করল পুলিশ।

সেখানকারই এক ব্যবসায়ী শাহনাজ ভার বিবিসিকে বলছিলেন, ‘এর আগে কারগিল বাজারে একসঙ্গে এত কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী আর জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের উপস্থিতি দেখিনি আমি। মানুষের মনে ক্ষোভ রয়েছে। শিক্ষিত যুবক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ বলছেন, কারও সঙ্গে কথা না বলে কেন এরকম একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হল!’

শহর থেকে দূরে, পাকিস্তানি সীমানার থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরের শেষ ভারতীয় গ্রাম লাতু-র বাসিন্দা আসগর আলি। তার ক্রিকেট প্রেম সর্বজনবিদিত। তাই তাকে ক্রিকেট চাচা বলে ডাকে সকলে। তার সঙ্গে যখন দেখা হয়েছিল, তখন তিনি গ্রামের মাঠে ব্যাটিং করছিলেন। দেখে মনে হচ্ছিল তিনি যেভাবে বলগুলোকে মেরে বাউন্ডারির বাইরে পাঠাচ্ছিলেন, সেটা যেন কোনও একটা রাগের বহিঃপ্রকাশ!

পরে বলছিলেন, ‘বছর কুড়ি আগে কারগিল যুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল ৪৫। সৈনিকরা আহত হয়ে পড়ে থাকত। আর আমি গিয়ে তাদের উদ্ধার করে আনতাম। গ্রামের অনেকেই আহত সৈনিকদের উদ্ধার করে নিয়ে আসতেন। তারপরে সৈনিকদের পৌঁছিয়ে দিতাম তাদের ছাউনিতে। সবরকমভাবে বাহিনীকে সাহায্য করছিলাম। কিন্তু সেই কারগিলের বাসিন্দাদের সঙ্গে এতবড় অবিচার করলো ভারত সরকার।’

কারগিলের সিনিয়ার সাংবাদিক সাজ্জাদ কার্গিলী বলেন, ‘লাদাখ অঞ্চল আবহমান কাল থেকেই সরাসরি কাশ্মীরের সঙ্গেই যুক্ত জোজিলা পাসের মাধ্যমে। বরফ যতক্ষণ না পড়ছে, ততক্ষণ কাশ্মীরের সঙ্গেই আমাদের মূল যোগাযোগ। যে কোনও প্রয়োজনে, তা খাবার মজুদ করা হোক বা অন্য কোনও দরকার, আমরা কাশ্মীরেই যাই। কিন্তু সরকারের সিদ্ধান্তে এখন কাশ্মীরকে লাদাখের থেকে আলাদা করে দেয়া হলো।’

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত