ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১১ মিনিট আগে
শিরোনাম

অকৃতজ্ঞ, কৃতঘ্ন এবং কৃতজ্ঞ:

  রিয়াজুল হক

প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২১, ১৫:৫২

অকৃতজ্ঞ, কৃতঘ্ন এবং কৃতজ্ঞ:
ফাইল ছবি

এক. এমবিএ’র ফাস্ট সেমিস্টারে আমার এক বন্ধু প্রতিটা ক্লাস টেস্ট, কুইজ, মিড-টার্ম পরীক্ষায় আমার সাথে বসতো। যতদূর পারা যায়, আমার হেল্প নিত। অ্যাসাইনমেন্টগুলোর সফট কপি নিয়ে কিছু পরিবর্তন করে নিজের নাম বসিয়ে নিত।

ফাস্ট সেমিস্টারের রেজাল্ট বের হবার পর দেখা গেল, আমার জিপিএ এসেছে ৪.০০ এবং আমার সেই বন্ধুর জিপিএ ৩.৬৭। বন্ধুর মন খারাপ। আমার উপর তার অনেক রাগ। কারণ হিসেবে বললো, ‘আমাকে অমুক পরীক্ষায় শেষ অংকটা একটু দেখালে, তমুক ক্লাস টেস্টে তাড়াতাড়ি লেখা শেষ না করলে, আমার ৩.৭৫ আসতো।’

কি আর করা? পরের তিনটি সেমিস্টারের আর কোন কিছুতে আমার সেই বন্ধুকে পাশে রাখিনি। সেই বন্ধু আর কখনো জিপিএ ৩.৫০ পার করতে পারেনি।

দুই. এমবিএ’র তৃতীয় সেমিস্টারে আরেক বন্ধু আমার পাশে বসে ইকনোমিক্সের একটা ক্লাস টেস্ট দিল। দেখে দেখে যতটা পারা যায়, আমার খাতা দেখে তুললো। যাই হোক, ২০ নম্বরের ক্লাস টেস্টে আমি পেলাম ১৯, আমার সেই বন্ধু পেল ১৫। স্যার একদিন খাতা দেখালো। আমার ক্লাস টেস্টের খাতা সেই বন্ধু আমার দেখার আগেই নিজে একটু দেখলো। দেখতেই পারে। দেখা তো দোষের কিছু না। যাই হোক, দুপুরে লাঞ্চের বিরতির সময়, সেই বন্ধু ইকনোমিক্সের স্যারকে যেয়ে বলল, প্রথম প্রশ্নে তো ফুল মার্কস ছিল ৫। আপনি ভুল করে রিয়াজ’কে ৬ দিয়ে ফেলছেন। স্যারকে তার অনিচ্ছাকৃত ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য আমার নম্বর ১ কমে গেল। পেলাম ১৮ । বিকেলে নম্বর কমে যাবার কারণ জানলাম।

সেই বন্ধু ইকনোমিক্সের পরের ক্লাস টেস্ট নিজের মত করে দিয়েছিল। নম্বর পেয়েছিল ০৬ (২০ এর মধ্যে)।

তিন. এমবিএ’র থিসিস করার সময় এক বন্ধুকে Methodology কিভাবে করলে তার রিপোর্ট সহজে করতে পারব, সেই বিষয়ে আলাপ করেছিলাম। সেই বন্ধু এখনো বিষয়টা মনে রেখেছে, কৃতজ্ঞতা জানালো। কয়েকদিন আগে ফোনে কথা হচ্ছিল। বুঝলাম, আমি ভুলে গেলেও সে বিষয়টি ভুলে যায়নি।

লেখক: যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএস/কেআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত