ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

নির্বাচনী ইশতেহারে প্রাথমিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হোক

  মুন্নাফ হোসেন

প্রকাশ : ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:১৮

নির্বাচনী ইশতেহারে প্রাথমিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হোক

শিক্ষার মূল সোপান হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়। যদিও লেখাপড়ার হাতেখড়ি পরিবারে, তবুও প্রাথমিক বিদ্যালয় হচ্ছে মূলভিত্তি। শিকড় হতে শেখরে উঠতে হলে প্রথমে শিকড়কে মজবুত করতে হবে। শিকড় যদি ভালভাবে বিস্তার লাভ করে, তবেই শিখরে উঠা যায়। প্রাথমিক শিক্ষাকে সরকার যুগোপযোগী করতে চেষ্টা করলেও বিভিন্ন পর্যায়ে অনেক বৈষম্য বিদ্যমান। বৈষম্যের কারণে শিক্ষকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজমান।

বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিটি পরীক্ষা নেয়া হয় সৃজনশীল পদ্ধতিতে। অথচ প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সকল শিক্ষককে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে না। মুষ্টিমেয় কিছু শিক্ষক প্রশিক্ষণ পাচ্ছে যার ফলে ছাত্রছাত্রীরা সৃজনশীল বিষয়ে সঠিক জ্ঞান পাচ্ছে না। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে ডব্লিউএইচ প্রশ্ন কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভীতি সৃষ্টি করছে। কেননা এ বিষয়টি স্নাতক পর্যায়ের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত। যদি নিয়মিত ইংরেজি বিষয়ে সবাইকে প্রশিক্ষণ দেয়া হতো তাহলে সমস্যা হতো না।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য শিক্ষকদের মাঝে ভেদাভেদ সৃষ্টি করছে। উন্নত বিশ্বে শিক্ষকদের উচ্চ বেতন ও ভিআইপি মর্যাদা দেয়া হয়, অথচ আমাদের দেশে সম্মানিত শিক্ষকগণ এখনও সঠিক মূল্যায়ন পাচ্ছেন না।

সম্প্রতি প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা দেয়া হয়েছে অথচ এখনও গেজেট প্রকাশিত হয় নি। প্রধান শিক্ষকদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দেয়া জরুরি। কেননা প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণ করা একজন প্রধান শিক্ষককে অনেক কষ্ট করতে হয়। অন্যদিকে সহকারী শিক্ষকদের বেতন প্রধান শিক্ষকদের পরেই গ্রেডেই প্রাপ্য। কেননা শিক্ষক যদি হয় ১৫তম গ্রেডের কর্মচারী, তা জাতির জন্যও লজ্জার। তাই বেতন বৈষম্য দূর করা জরুরি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম প্রহরীরা দিনরাত ২৪ ঘণ্টা পরিশ্রম করে। তাই তাদের চাকরি জাতীয়করণ করা অবশ্যই প্রাপ্য।

অনেক অভিভাবক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার সন্তানকে না দিয়ে কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি করান। এর জন্য দায়ী হাতেগোনা কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। কেননা তারা শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে মনযোগী নয়। এমন শিক্ষকদের সঠিকপথে আনতে নিয়মিত শেণিকক্ষ মনিটরিং এর ব্যবস্থা করতে হবে। সকল শিক্ষকদের মনে রাখতে হবে যে, তিনি একজন শিক্ষক। তবেই প্রাথমিক শিক্ষা হবে যুগোপযোগী।

বিভিন্ন বিদ্যালয়ে এখনও পয়ঃনিষ্কাশনের সুব্যবস্থা করা হয়নি। অনেক বিদ্যালয়ে এখনও একাডেমিক বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়নি যা অত্যন্ত জরুরি। তাই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি বিনীত অনুরোধ, প্রাথমিক শিক্ষাকে যুগোপযোগী উন্নতিকল্পে প্রয়োজনীয় বিধিবিধান ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করুন।

মুন্নাফ হোসেন, সহকারী শিক্ষক, মমিনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধনবাড়ী, টাংগাইল।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত