ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

ক্যাসিনো খালেদের জবানবন্দী, ফাঁসতে পারে পুলিশ কর্তাসহ প্রভাবশালীরা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:৫৩  
আপডেট :
 ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১২:০৪

বিস্ফোরক তথ্য দিলেন ‘ক্যাসিনো খালেদ’
ফাইল ফটো

যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যে বিব্রত খোদ পুলিশ কর্মকর্তারা। ক্যাসিনো চালাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক ও বর্তমান অনেক কর্মকর্তা তাকে সহযোগিতা করতেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

গতকাল শনিবার ডিএমপি ও গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একাধিক কর্মকর্তা এসব তথ্য জানিয়েছেন। বৈঠকে উপস্থিতি একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ডিএমপির সাবেক কর্মকর্তা থেকে শুরু করে মতিঝিল, রমনা, তেজগাঁও, মিরপুর, গুলশান ও উত্তরা বিভাগের অনেক কর্মকর্তা বিভিন্ন ক্যাসিনো ও জুয়ার আসরের টাকার ভাগ নিতেন।

রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে পুলিশ কর্মকর্তাদের টাকার ভাগ দিয়েই এই ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন বলে ডিবির তদন্তকারী কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন যুবলীগ নেতা খালেদ। এসব তথ্য পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ে অবহিত করার পর তারা বিব্রতবোধ করছেন।

তারা আরও বলেন, এ পরিস্থিতিতে গতকাল বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ডিএমপি সদর দপ্তরে বিশেষ বৈঠক করেন কমিশনার শফিকুল ইসলাম। বৈঠকে তিনি উপস্থিত ডিএমপির সব থানার ওসি ও ক্রাইম ডিভিশনের কর্মকর্তাদের জুয়া ও ক্যাসিনো বন্ধের কঠোর নির্দেশনা দেন।

এছাড়া ক্যাসিনো ও জুয়া ঘিরে পুলিশ কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততার খবরে অসন্তোষ প্রকাশ করে বাহিনীর ভাবমূর্তি রক্ষায় তিনি বিশেষ জোর দিয়েছেন। ক্যাসিনো পরিচালনায় পুলিশের সম্পৃক্ততার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখার নির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।

প্রসঙ্গত, ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবে ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে গত বুধবার রাতে রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তার বাসা থেকে ২০১৭ সালের পর নবায়ন না করা একটি শটগান ও ৫৮৫ পিস ইয়াবাসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। পরে খালেদকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে যুবলীগ।

ডিএমপির জনসংযোগ শাখার উপকমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদুর রহমান জানান, কমিশনার মহোদয় যোগদানের পর আনুষ্ঠানিকভাবে আজ (গতকাল) ডিএমপির সব থানার ওসি ও ক্রাইম বিভাগের ডিসিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এছাড়া থানায় সেবার মান বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেন তিনি।

খালেদকে জিজ্ঞাসাবাদকারী ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে খালেদ ভূঁইয়াকে গুলশান থানায় নেয় র‌্যাব। পরে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে চারটি মামলা করেন র‌্যাব-৩-এর ওয়ারেন্ট অফিসার গোলাম মোস্তফা। এরপর রাতে খালেদকে আদালতে উপস্থাপন করলে অস্ত্র মামলায় চার দিন ও মাদক আইনের দুই মামলায় সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। পরে রাতেই মামলা দুটি ডিবিতে (উত্তর) স্থানান্তর করা হয়। গতকাল ছিল খালেদের রিমান্ডের দ্বিতীয় দিন।

ওই কর্মকর্তা জানান, ক্যাসিনো কারবারে যুবলীগ ছাড়াও আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রভাবশালী কয়েকজন নেতার জড়িত থাকার তথ্য দিয়েছেন খালেদ। এছাড়া পুলিশ ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ ক্লাব-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের নিয়মিত মোটা অঙ্কের টাকা দিতেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত