ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১২ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘আওয়ামী লীগের ব্যর্থতায় বিএনপির জন্ম’

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৮:৫০

‘আওয়ামী লীগের ব্যর্থতায় বিএনপির জন্ম’

আওয়ামী লীগের ব্যর্থতার কারণে বিএনপির জন্ম হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ‘দলের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে’ বিএনপির উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপির জন্ম হয়েছিল আওয়ামী লীগের ব্যর্থতার কারণে। বিএনপির জন্ম হয়েছিল এমন একটি রাজনৈতিক শুন্যতায়, সেই শুন্যতা সৃষ্টি করেছিল আওয়ামী লীগ। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাকে যখন আওয়ামী লীগ কেড়ে নিয়ে গেলো, যখন আওয়ামী লীগ তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে একদলীয় শাসন বাকশাল প্রতিষ্ঠিত করলো- সেই শুন্যতার কাটাতে দেশপ্রেমিক মানুষদের নিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠিত করেন। সুতরাং বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, একটি ঐতিহাসিক প্রয়োজনীয়তায়।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আজকে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। এজন্য আমাদেরকে লড়াই ও সংগ্রাম করে তাকে বের করে আনতে হবে এবং গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি, নির্বাচনকে বাতিল করতে হবে। আর নির্বাচন বাতিল করে একটি নিরপেক্ষ সরকার ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারে অধিনে নির্বাচন করতে হবে। এই নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায়।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে ফখরুল আরও বলেন, আসুন, এই দিনে শপথ নেই। আমরা বিএনপিকে সুসংগঠিত করবো। আমরা বিশ্বাস করি, খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের দল সম্পূর্ণ সংগঠিত হবে। আর যারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে, সেই সমস্ত দলগুলোকে নিয়ে আমরা জনগণের সরকার ও সংসদ গঠন করতে সক্ষম হবো।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকার একা হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক কোন জায়গা থেকে সমর্থন পাচ্ছে না। আর আজকে গণতন্ত্র, আইনের শাসন নেই এবং রোহিঙ্গা ও ডেঙ্গু সমস্যা। এসব কারণে বাংলাদেশে আজ ক্রান্তিকাল চলছে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, দলের মধ্যে এবং অঙ্গ-সংগঠনগুলোকে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পুনর্গঠন করে সময় মতো শক্তি সঞ্চয় করতে হবে। তাই আমাদের প্রধান স্লোগান হবে স্বৈরাচার হঠাও দেশ বাঁচাও।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আমাদের সংকটকাল চলছে। অনেকেই অস্থির ও হতাশ। বলছে, ১২ বছর হলো আর কত সময় অপেক্ষা করবো। কিন্তু এটা খুব অল্প সময়। প্রয়োজন হলে আরো অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু এই সরকারের পতন হবেই।

তিনি বলেন, আইনী প্রক্রিয়ার বেগম জিয়াকে মুক্তির চেষ্টা আমরা করেছি এবং করছি। তাই আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই বেগম জিয়ার মুক্ত করতে হবে।

সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাকশাল যদি প্রতিষ্ঠিত করা যেতো তাহলে দেশ আরো উন্নত হতো। সুতরাং যিনি বাকশালের কথা বলেন, তার কাছে গণতন্ত্র আশা করা নিস্ফল। তাই আন্দোলন-সংগ্রামের বিকল্প নাই। আসুন আমরা গণতন্ত্রের মুক্তির সংগ্রাম করি। কারণ গণতন্ত্রের মুক্তির পথে যিনি বাধা, তিনি বেগম জিয়ার মুক্তির পথেও বাধা।

আমরা মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে না পারলে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের ঘড়ে বসে থাকার সময় নেই। আমার বছর ৪২ চলছে। আর ৪২ বছর শেষ হওয়ার আগেই জনগণকে মুক্ত করতে হবে।

দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজকে বাংলাদেশ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক শুন্যতার এসে দাঁড়িয়েছে। এই শুন্যতা দূর করতে বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। এজন্য আজ একতার কথা বলা হচ্ছে। আর আমাদের একতা সৃষ্টি হয়ে গেছে। বাংলাদেশের জনগণ এই একতায় এসে দাঁড়িয়েছে। বিএনপি নির্যাতিত নেতারা এবং যারা ভোট দিতে পারে নাই, তারা আজ একতা বদ্ধ।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপি নেতা ড. মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল প্রমুখ বক্তব্যে রাখেন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা আ স ম আবদুর রব, রেজা কিবরিয়া, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সভায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট নেতা রেদোয়ান আহমেদ, মাওলানা নূর হোসেন কাসামী, সাইফুদ্দিন মনি, খন্দকারর লুৎফর রহমানন প্রমুখ বক্তব্যে রাখেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/কেআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত