ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

চীনের টাকা ছাড়া আইপিএল অসম্ভব

  স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২০, ১৭:৪৮

চীনের টাকা ছাড়া আইপিএল অসম্ভব

লাদাখের গালওয়ান উপতক্যায় চীনের হামলায় ২০ জন ভারতীয় সেনার শহীদ হওয়ার পর থেকেই উত্তাল গোটা ভারত। পাল্টা আক্রমণে হতাহত হয়েছে ৪৩ জন চীন সেনা। ১৯৬২ সালের পর আবার লাদাখে ভারত-চীন সীমান্ত অগ্নিগর্ভ। প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উঠছে চিন বিরোধী স্লোগান। সরকারের কাছে চীনকে জবাব দেওয়ার দাবি জানানোর পাশাপাশি উঠেছে সমস্ত চীনা পণ্য বর্জনের আওয়াজও।

চীনা দ্রব্যে আগুন ধরিয়েও চলছে প্রতিবাদ। কিন্তু দেশের এই আবহে অস্বস্তিতে পড়েছে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড। কারণ আইপিএল এর টাইটেল অর্থাৎ অন্যতম প্রধান স্পন্সর চীনা মোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থা ভিভো। ফলে ভারত চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতির প্রভাব কী আইপিএলেও পড়বে এই নিয়ে উঠতে শুরু করেছিল প্রশ্ন। তবে বিসিসিআই পক্ষ থেকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে চীনা মোবাইল প্রস্তুতকারী সংস্থা ভিভো টাইটেল স্পনসর থাকবে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের।

ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) কোষাধ্যক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন, চীনের স্পন্সর ছাড়া আইপিএল হওয়া অসম্ভব।

আইপিএলের অন্যতম স্পনসর চীনের মোবাইল কোম্পানি ভিভো। ২০২২ সাল পর্যন্ত বিসিসিআই তাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি বছর আইপিএল খাতে ভিভো বিসিসিআইকে ৪৪০ কোটি টাকা দেয়। বিসিসিআই কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমালের বক্তব্য, 'চীনের পণ্য বয়কট করা একটি আবেগতাড়িত ভাবনা। ভাবনাটিকে আমি সম্মান করি। কিন্তু আমাদের বাস্তবতা ভাবতে হবে। যুক্তি দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। ভিভোর সঙ্গে যে ভাবে আমরা চুক্তিবদ্ধ, তাতে এই মুহূর্তে তা বাতিল করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া চীনের কোম্পানি থেকে সাহায্য নিলে তা চীনের জন্য যতটা লাভের, তার চেয়ে ভারতের লাভ অনেক বেশি।'

ধুমালের যুক্তি, ভিভো ভারতে মোবাইল বিক্রির জন্য আইপিএলের বিজ্ঞাপনে টাকা ঢালছে। বিসিসিআই তার জন্য ভারত সরকারকে কর দিচ্ছে। যার থেকে ভারতের অর্থনীতিই লাভবান হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, ওই মোবাইল কোম্পানি ভারতে মোবাইল বিক্রি করেও ভারত সরকারের কোষাগারে কর দিচ্ছে। ফলে শেষ পর্যন্ত ভারতই এর থেকে লাভবান হচ্ছে।

চীন তিব্বতে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলো ১৯৫১ সালে। তার আট বছর পরে চতুর্দশ দলই লামা পালিয়ে ভারতে আসেন। ভারত তাকে আশ্রয় দেয়। চীন তার বিরোধিতা করে। তারপর শুরু হয় সীমান্তে দুই সেনার সংঘর্ষ।

বস্তুত, টেলিকম সেক্টরে ভারতের বাজারের বড় অংশ এখন চীনের দখলে। রাতারাতি চীনের পণ্য বয়কট করা হলে টেলিকম সেক্টর বিপুল ক্ষতির মুখোমুখি হবে। ফলে মুখে যে যাই বলুক, সার্বিক ভাবে চীনের পণ্য বয়কট করা অসম্ভব বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের বক্তব্য, বর্তমান মুক্ত অর্থনীতির বাজারে এ ভাবে কোনও দেশকে বয়কট করাও যায় না।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সরকার সরাসরি বয়কটের ডাক দিচ্ছে না। কারণ তারা জানে, এটা সম্ভব নয়। কিন্তু, মানুষের ভাবাবেগকেও শাসক দল ব্যবহার করতে চায়। এই মুহূর্তে দেশের ভিতর চীন বিরোধী ভাবাবেগ খুবই শক্তিশালী। তাই বিভিন্ন মন্ত্রী এবং দলীয় কর্মীরা ব্যক্তিগত ভাবে চীনা জিনিস বয়কটের ডাক দিচ্ছেন। সরকারকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, তারা বলছে, সরকারি ভাবে এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এতে সাপও মরছে, আবার লাঠিও ভাঙছে না।

ধুমালও একই কথা ঘুরিয়ে বলার চেষ্টা করেছেন। তার বক্তব্য, যতদিন পর্যন্ত ভিভো ভারতে ব্যবসা করতে পারবে, সরকার তাদের কোনও বাধা দেবে না, তত দিন পর্যন্ত তাদের বিজ্ঞাপন নেওয়াতেও কোনও সমস্যা থাকতে পারে না। উল্লেখ্য, এর আগে আরেকটি চীনা মোবাইল সংস্থা ওপো ভারতীয় ক্রিকেট দলের জার্সির স্পনসর ছিল। গত সেপ্টেম্বর মাসে সেই চুক্তি শেষ হয়েছে। এখন ভারতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি স্পন্সর দক্ষিণ ভারতের একটি শিক্ষা সংস্থা।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত