ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২০ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাফুফে নির্বাচনকে সামনে রেখে যত প্রতিশ্রুতি

  স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২০, ১৭:১১  
আপডেট :
 ০১ অক্টোবর ২০২০, ১৭:১৫

বাফুফে নির্বাচনকে সামনে রেখে যত প্রতিশ্রুতি

আর একদিন বাদেই বাফুফে নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্ঘুম পার করছেন সব প্রার্থীরা। ধারণা করা হচ্ছে, প্রতিবারের চেয়ে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হবে এবার। সব প্রার্থীরা হাজির হচ্ছে তাদের নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে। জেনে নেওয়া যাক কি থাকছে তাদের প্রতিশ্রুতিতে।

জাতীয় ফুটবল দলের জন্য ৩৬ দফা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেছে কাজী সালাহউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত পরিষদ। সালাহউদ্দিনের ইশতেহারের আলোচিত অংশ হলো, তিনি আগামী চার বছরের মধ্যে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ছেলেদের অবস্থান ১৫০-এর কাছাকাছি ও মেয়েদের অবস্থান ৯০-এর কাছাকাছি নিয়ে আসতে চান।

ইশেতেহারা জাতীয় দলের জন্য দীর্ঘমেয়াদী বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা, বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপ নিয়মিত আয়োজন, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ও এসএ গেমসের শিরোপা পুনরুদ্ধারের জন্য পরিকল্পনা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ঘরোয়া ফুটবলের সুনির্দিষ্ট পঞ্জিকা প্রণয়ন, নির্ধারিত সময়ে দলবদল, জেলা ফুটবল লিগগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আয়োজন, বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টগুলো আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে ইশতেহারে।

কাজী সালাহউদ্দিনের দেওয়া গতবারের প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে শেরেবাংলা কাপ, সোহরাওয়ার্দী কাপ আয়োজন সম্ভব হয়নি। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপও ছিল অনিয়মিত। নির্ধারিত সময়ে দলবদল ও বর্ষপঞ্জিকা অনুসরণ করতে পারেনি বাফুফে। এছাড়া একাডেমি, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন জিমনেশিয়াম নির্মাণের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি। সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল, তার ২০২২ বিশ্বকাপ খেলার প্রতিশ্রুতি। যদিও সালাহউদ্দিন এটাকে 'ভুল বোঝাবুঝি' হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তার দাবি, তিনি প্রতিশ্রুতির ৭৫ শতাংশ কাজ করতে পেরেছেন।

কাঁদলেন বাদল, তারপরও বাফুফে নির্বাচনে ‌‘না’

কাজী সালাহউদ্দিন বলেন, '২০১৬ সালের ইশতেহারের ৭০-৭৫ শতাংশ কাজ হয়েছে। ওই ইশতেহার আমার দেওয়া ছিল না। ওই সময় কনফিউশন চলছিল। যখন ইশতেহার দেওয়া হয়, ওই মিটিংয়ে কিন্তু আমি ছিলাম না। আমি অফিস থেকে যে ইশতেহার দিয়েছি, সেখানে অনেক কিছু যোগ করা হয়েছিল, সেটা দিয়েছিলেন তরফদার রুহুল আমিন। ২৫ শতাংশ কাজ না হওয়ায় আমি খুবই দুঃখিত। তবে এখানে যা বলা হয়েছে, প্রায় তিন মাস রিসার্চ করেই আপনাদেরকে দেওয়া হয়েছে।'

নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সভাপতি পদে দাঁড়ানো শফিকুল ইসলাম মানিকও। কাজী সালাউদ্দিনের পূর্ণাঙ্গ প্যানেলের ৩৬ প্রতিশ্রুতির বিপরীতে ২১ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। তৃণমূল ফুটবলে উন্নয়নের পাশাপাশি তার ইশতেহারে জায়গা পেয়েছে জাতীয় দল নিয়ে ভিশন ২০৩৩।

এবার শেষ হচ্ছে সালাহউদ্দিনের আধিপত্য?

ইশতেহারে তৃণমূলের ফুটবলকে প্রাধান্য দিয়েছেন তিনি। জেলা ফুটবল ও ঢাকার সবচেয়ে জুনিয়র স্তরের ফুটবল পাইওনিয়ার লিগ থেকে প্রিমিয়ার লিগ পর্যন্ত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়মিত খেলা আয়োজন করার কথা বলেন। তার ইশতেহারে জাতীয় পর্যায়ে শেখ জামালের নামে প্রতি বছর অনূর্ধ্ব-১৭ টুর্নামেন্টের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। ঘরোয়া টুর্নামেন্টের বাস্তবায়নযোগ্য ক্যালেন্ডার কঠোরভাবে মেনে চলারও ঘোষণা রয়েছে মানিকের ইশতেহারে।

একই সঙ্গে ভিশন ২০৩৩ ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক এই কোচ। তার এই ভিশনে রয়েছে অলিম্পিক উপযোগী একটি যুব দল গঠন করা। যারা এক সময়ে অলিম্পিকে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। জাতীয় দল নিয়েও ভাবনা রয়েছে মানিকের ইশতেহারে। তিনি নির্বাচিত হলে জাতীয় দলের ফুটবলারদের বেতন কাঠামো ও বীমার ব্যবস্থা করতে চান। এ ছাড়া যেকোনো ধরনের আর্থিক অনিয়মের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথাও বলেছেন তিনি।

‘বয়কট সালাউদ্দিন’ দাবিতে ফুটবলপ্রেমীরা

২১ দফা ইশতেহারে ফিফা র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। আসন্ন নির্বাচনে কাউন্সিলরদের কাছে ভোট চাওয়ার পাশাপাশি নির্বাচিত হলে ইশতেহারের প্রতিটি দফা বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়ে রাখলেন। সেই সঙ্গে ফুটবলে পরিবর্তনের ডাক দিয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত থাকার অঙ্গীকার করলেন মানিক।

এদিকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচনে এবার সহ-সভাপতি পদে আটজন প্রার্থী। কাজী নাবিল আহমেদ এমপি, মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, শেখ মোহাম্মদ মারুফ হাসান, আমিরুল ইসলাম বাবু, তাবিথ আউয়াল বাফুফের আগের কমিটিতে ছিলেন।

বাফুফে নির্বাচন থেকে সরে গেলেন বাদল রায়

নতুন মুখ এসএম আবদুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ান, ইমরুল হাসান ও আতাউর রহমান। নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন দুই প্যানেলের নতুন তিন সহ-সভাপতি প্রার্থীও।

সমন্বয় পরিষদের সহ-সভাপতি প্রার্থী আবদুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ানের কথায়, ‘আমি নির্বাচিত হলে উপজেলা পর্যায় থেকে শুরু করে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের সঙ্গে ক্লাবের সমন্বয় ঘটানোর চেষ্টা করব।’

তিনি যোগ করেন, ‘যদি ভালো কমিটি আসে বাফুফেতে, তাহলে ক্রিকেটের মতো ফুটবলকেও পণ্য বানানোর লক্ষ্য রয়েছে। যাতে পৃষ্ঠপোষকদের কাছে ফুটবলকে আকর্ষণীয় করা যায়। তাহলেই আর্থিক সংকট ঘুচবে। গত ১২ বছরে ফুটবল তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। তাই রাতারাতি কিছু করা সম্ভব নয়।’ বাফুফের বাজেট নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে রেদোয়ান বলেন, ‘ক্রিকেট বোর্ডে ১০০ থেকে ২০০ পাতার বাজেট ফোল্ডার করা হয়। অথচ বাফুফেতে এক পৃষ্ঠার একটি বাজেট। তাহলে ফুটবলের উন্নতি হবে কিভাবে।’

সম্মিলিত পরিষদের সহ-সভাপতি প্রার্থী ইমরুল হাসান বলেন, ‘ফুটবল উন্নয়নে আমাদের বসুন্ধরার কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রথম ধাপ। দেশের জাতীয় দলের বাইরে কারও বয়সভিত্তিক দল নেই, জেলা লিগগুলোর অবস্থাও করুণ। নির্বাচিত হতে পারলে আমি এগুলো নিয়মিত করতে চাই। সার্ভিসেস দল, যেমন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিশ্ববিদ্যালয়ের দলগুলোকে ফুটবলের মূলধারায় নিয়ে আসতে চাই।’

নির্বাচিত হলে আগামীতে বাফুফের আর্থিক সংকট দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সম্মিলিত পরিষদের সহ-সভাপতি প্রার্থী আতাউর রহমান।

বাংলাদেশ জার্নাল/টিআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত