ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাংলাদেশি যে নারী ঘুরেছেন ১১০ দেশ

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০১৮, ১৩:২৯  
আপডেট :
 ১৪ নভেম্বর ২০১৮, ১৩:৪০

বাংলাদেশি যে নারী ঘুরেছেন ১১০ দেশ

সুইডেন প্রবাসী নারী নাজমুন নাহার, যিনি নিজের উদ্যোগেই ইতোমধ্যে ভ্রমণ করেছেন ১১০টি দেশে। কোনো বাংলাদেশি নারীর বিশ্বের এতগুলো দেশ সফর ঘটনা এটাই মনে হয় প্রথম। আর এই প্রতিটি সফরেই তার সঙ্গী ছিল বাংলাদেশের পতাকা।

বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের সময় তিনি নানা রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতারও মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু তবুও তিনি স্বপ্ন দেখেন খুব তাড়াতাড়ি সময়ের মধ্যে বিশ্বের বাকি দেশগুলো ভ্রমণের।

ভ্রমণের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠার পেছনে তিনটি কারণের কথা বলেন নাজমুন নাহার। যার মধ্যে রয়েছে বই, বাবা ও তার দাদা।

শৈশব থেকেই বই পড়তে পড়তে তার মধ্যে ভ্রমণের প্রতি আগ্রহ জন্মায়। বিশেষ করে ভ্রমণ কাহিনীসহ নানা বই পড়ার সময় তার মনে হতো তিনি যেন সেখানে চলে গেছেন।

তিনি বলেন, সারা বিশ্বকে দেখার ব্যাপারে বাবা আমাকে উৎসাহিত করতেন। আমার দাদা উনিশ শতকের শুরুর দিকে বিভিন্ন আরব দেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন।

নাজমুন নাহার আরো বলেন, বিশ্বের সব দেশ দেখা তার একটি স্বপ্ন এবং এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যে তিনি ধীরে ধীরে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।

তার এই স্বপ্ন পূরণের প্রথম ধাপ ছিল ভারত। সেখানে বিশ্বের ৮০টি দেশের ছেলেমেয়েদের একটি সমাবেশে তিনি যোগ দিয়েছিলেন বাংলাদেশ থেকে। তখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। ওই ঘটনা থেকে এখন পর্যন্ত পৃথিবীর ১১০টি দেশ ঘুরেছেন তিনি।

১৭ বছর ধরে বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। কিন্তু এজন্যে তো সময় এবং অর্থ দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। এসব তিনি কিভাবে সামলে নিচ্ছেন?

তিনি বলেন, প্রথম কয়েকটি দেশ তিনি ভ্রমণ করেছেন বাংলাদেশ গার্লস গাইড এসোসিয়েশনের সদস্য হিসেবে।

তারপর তিনি বৃত্তি নিয়ে চলে যান সুইডেনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে পড়তে পড়তে স্বপ্ন দেখতে থাকেন আরো দেশ ভ্রমণের জন্যে। সেসময় তিনি বিশ্ব-ভ্রমণের লক্ষ্যে অর্থ জমানোর জন্য প্রচুর কাজও করতেন।

গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে তিনি ১৭/১৮ ঘণ্টা ধরেও কাজ করেছেন। কারণ তার জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্যই হচ্ছে পুরো পৃথিবী ভ্রমণ করা। আর ইউরোপে থাকার কারণে এই ভ্রমণে তার কিছুটা সুবিধা হয়েছে।

একজন নারী এবং বিশেষ করে বাংলাদেশি নারী হিসেবে এই ভ্রমণের সময় তার সমস্যা নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি জানান, প্রথমত এটা মানসিক সংগ্রাম। এই সংগ্রামে জয়ী হতে পারলে যেকোনো জিনিসই সহজ হয়ে যায়। নিজের ভেতরে আমি সাহস রাখি। এই সাহসের জন্যেই আমার কোন অসুবিধা হয়নি।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভ্রমণে বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা দৃষ্টি আকর্ষণ করছে বিভিন্ন দেশের স্থানীয় মানুষদেরও। জাম্বিয়ায় সরকারের একজন গভর্নর তাকে দিয়েছেন ফ্ল্যাগ গার্লের খেতাব।

কিন্তু বাংলাদেশ সম্পর্কে এই ১১০টি দেশের মধ্যে অনেকগুলো দেশের মানুষদেরই তেমন কোনো ধারণা নেই বলে তিনি জানান।

তবে তিনি জানান, আফ্রিকার যেখানেই আমি বাংলাদেশের পতাকা ধরেছি, সেখানেই মানুষ বলেছেন আমরা বাংলাদেশকে খুব পছন্দ করি। তোমাদের ক্রিকেট আমাদের খুব পছন্দের।

তবে কোন কোন জায়গায় তিনি ফিরে এসেছেন মৃত্যুর মুখ থেকে। তিনি জানান, পেরুর রেইনবো মাউন্টেনের ১৪,২০০ ফুট উচ্চতায় উঠে একসময় তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয় এবং তিনি মাটিতে বসে পড়েন। পরে তরল ইনহেলার নাকে ধরলে তিনি শক্তি ফিরে পান।

জাতিসংঘের স্বীকৃত দেশ আছে ১৯৩টি। তার মধ্যে ১১০টি দেশে তিনি ভ্রমণ করে ফেলেছেন। এখনো যেসব দেশ বাকি রয়েছে, সেখানেও তিনি দ্রুত সময়ে যেতে চান।

সূত্র বিবিসি বাংলা

আরএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত