ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

ইজিবাইকের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ নগরবাসী

  চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২০, ২০:৩২  
আপডেট :
 ১৪ জানুয়ারি ২০২০, ২০:৪৫

ইজিবাইকের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ নগরবাসী

চুয়াডাঙ্গায় দিন দিন বেড়েই চলেছে ইজিবাইকের সংখ্যা। এতে করে সড়কে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের। আর তাই মানুষ পথে বের হয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অতিরিক্ত যানজটের কারণে ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। প্রাণহানীর মতো ঘটনাও ঘটছে প্রায়শই।

ইজিবাইকের ধাক্কায় পঙ্গুত্ব বরণ করে নিয়ে জীবনযাপন করছে এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়।

ইজিবাইকের এসব দৌরাত্ম্যের হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে বেশ কয়েকবার পৌরসভা মেয়র নানান কর্মসূচি হাতে নিলেও অজ্ঞাত কারণে তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। এর ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও কমেনি।

শহরে ইজিবাইকের জট লাগে সকালে অফিস সময়ে আর বিকেলের পর।

সাধারণ মানুষ বলছে শহরে বর্তমানে প্রয়োজনের তুলনায় পাঁচগুণ বেশি ইজিবাইক চলাচল করছে। এগুলো সংখ্যায় প্রায় চার হাজারের মতো। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় এসব ইজিবাইকের চালকরা অপ্রাপ্ত বয়স্ক। আর এর ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে বেশি।

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বলছে শহরে ইজিবাইকের যানজট কমাতে পৌরসভা থেকে লাইসেন্স অনুমোদন দেয়া হচ্ছে। শহরের ভিতর যে ইজিবাইকগুলো দেখা যায় তার অধিকাংশই অন্য উপজেলা থেকে এসে শহরে ভাড়া খাটে। যার কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

নতুনভাবে এই সমস্য সমাধানে পৌরসভা থেকে চার উপজেলার ইজিবাইকের রংয়ের ভিন্নতা অনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এতে করে অন্য উপজেলার ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করতে পারবে না।

জানা যায়, ইজিবাইক যানজট সমস্যা এড়াতে চুয়াডাঙ্গার সাবেক জেলা প্রশাসক জিয়া উদ্দিন আহমেদ হাসপাতাল সড়কে একমুখী যান চলাচল চালু করলেও তা কিছুদিন চললেও এখন আর তা মানেন না কেউ। ফলে ইজিবাইকের যানজট সমস্যা থেকেই রয়েই গেছে।

শহরের প্রাণকেন্দ্র বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বর, কোর্ট চত্বর এলাকা, একাডেমি বাসস্টান্ড, ফেরিঘাট রোড, হাসপাতাল সড়ক, রেলওয়ে স্টেশনসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সড়কে প্রতিনিয়ত দেখা যায় ইজিবাইকের যানজট সমস্যা।

যানজট নিরসনে সড়কে ট্রাফিক পুলিশ লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও ইজিবাইকের দৌরত্বে তারাও ক্লান্ত হয়ে পড়ে অনেক সময়।

চুয়াডাঙ্গা ঝিনুক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রেমা সরকার বলেন, ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ড থেকে তার স্কুলে আসতে সময় লাগে দশ মিনিট। কিন্তু ইজিবাইকের যানযটে পথে রিকশায় বসে থাকতে হয় ত্রিশ মিনিট।

মিনিবাস চালক মতিয়ার রহমান বলেন, শহরের তিন কিলোমিটার রাস্তা পার হতে অনেক সময় ভোগান্তির শিকার হতে হয়। ইজিবাইকের যানজটে অল্প রাস্তায় শহীদ হাসান চত্বর থেকে বাসস্ট্যান্ড আসতে সময় লাগে প্রায় আধঘণ্টা।

রাস্তার পাশে কাপড়ের দোকানদার শফি উদ্দিন বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, ইজিবাইকগুলো দিন দিন সড়কে বেপোরোয়াভাবে চলাচল করছে। চলতি পথে হঠাৎ করেই রাস্তার পাশে সিগনাল বাদে দাঁড়িয়ে পড়ে এসব ইজিবাইক। অদক্ষ চালকের কারণে ঘটছে বড় বড় দুর্ঘটনা। এসব ইজিবাইকের যানজট কমাতে কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে নিশ্চুপে বসে রয়েছে।

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) চুয়াডাঙ্গা জেলার সাধারণ সম্পাদক হোসেন জাকির বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, অদক্ষ চালকের কারণে ইজিবাইকে দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। দিন দিন ইজিবাইকের সংখ্যা বাড়ার ফলে যানবাহন কমানো এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালক ইজিবাইক চালালে দুর্ঘটনা কম হবে বলে মনে করেন তিনি।

ইজিবাইকের যানযটের বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি দেশের বাইরে থাকার তার সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।

জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘ইজিবাইকের কারণে সড়কে দুর্ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চার উপজেলায় ইজিবাইকগুলোর ভিন্ন রঙের করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া হাইওয়ে কোন সড়কে ইজিবাইক চলতে পারবে না।’

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত