ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

ফসলি জমিতে ইটভাটা,অভিযোগ করেও প্রতিকার নেই

  লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২০, ২১:৩৯

ফসলি জমিতে ইটভাটা,অভিযোগ করেও প্রতিকার নেই

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় কোন ধরনের অনুমোদন ছাড়াই ফসলি জমির উপর গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা। এসব ইটভাটা বন্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও প্রতিকার না পাওয়ার অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের।

অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের নামুড়ি চন্দ্রপুর গ্রামের বারবিষার দোলায় বছরে তিনটি বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করে জিবিকা নির্বাহ করেন স্থানীয় ৪/৫টি গ্রামের কয়েক শত কৃষক পরিবার। কৃষকদের চাষাবাদে সেচ সুবিধা দিতে বারবিষার দোলায় একাধিক সেচ পাম্প স্থাপন করেছে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। প্রতিবছর তিনটি ফসল ঘরে তুলে বেশ সুখেই ছিলেন কৃষকরা।

হঠাৎ চলতি মাসে সেই বারবিষার দোলার নামুড়ি চন্দ্রপুর গ্রামে জনৈক সালামের এক একর জমি চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে একটি ইটভাটা নির্মানের কাজ শুরু করেন লালমনিরহাট শহরের নামাটারী এলাকার ইট ব্যবসায়ী এন্তাজ আলী। পাশ্ববর্তি জমির মালিকদের না জানিয়ে কৃষকদের জমির উপর ভাটার মাটি ফেলে স্তুপ করেন। ফলে এসব কৃষক চলতি ইরি বোরো চাষাবাদ করতে পারছেন না।

ফসলি জমির উপর ইটভাটা নির্মানের প্রতিবাদের এবং ভাটা বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে স্থানীয় কৃষকরা লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দুইটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দায়েরের সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও কোন সুফল না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। অপর দিকে ভাটা নির্মান কাজ চলমান থাকায় চলতি ইরিবোরো চাষাবাদসহ আগামী দিনে ভাল ফসল পাওয়া নিয়েও শঙ্কিত কৃষকরা।

পশ্চিম ভেলাবাড়ি গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম মিঠু জানান, বারবিষার দোলার জমিতেই চলে আমাদের পুরো বংশের সকল পরিবার। ভাটার পাশেই আমাদের ৬০ বিঘা জমিতে বছরে তিনটি ফসলের চাষ হয়। ইরি বোরোতে প্রতি শতাংশে এক মণের অধিক ধান ফলে। এমন জমিতে ইটভাটা করায় আগামীতে ফসলহানির আশঙ্কা করে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু কোন প্রতিকার পাইনি। ভাটা মালিক বীরদর্পে নির্মান কাজ করছেন।

নামুড়ি চন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক সোবহান আলী জানান, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন ফসলি জমি নষ্ট করে কোন কারখানা গড়ে তোলা যাবে না। আমাদের ফসলি জমির উপর ইটভাটা হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও বন্ধ হচ্ছে না। ফসল না হলে পরিবার নিয়ে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।

সদ্য নির্মিত ভাটা মালিক এন্তাজ আলী জানান, সবেমাত্র ভাটা নির্মান করা হচ্ছে। আগুন দেয়ার আগে পরিবেশ অধিদফতরসহ সকল বিভাগের অনুমোদন নেয়া হবে।

আদিতমারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অফিসার আলীনুর রহমান জানান, ফসলি জমির উপর ইটভাটার অনুমোদন দেয়া হয় না। তারা অনুমোদনের জন্য এলে তা তদন্ত করে ফসলি জমির উপর হলে তার অনুমোদন দেয়া হবে না।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, ফসলি জমি নষ্ট করে শিল্পকারখানা গড়ে তোলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আছে। ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মানের বিষয়ে কৃষকদের অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ এমএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত