ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

সীমান্ত হত্যা নিয়ে যা বললেন খাদ্যমন্ত্রী

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০২০, ২০:২১

সীমান্ত হত্যা নিয়ে যা বললেন খাদ্যমন্ত্রী
ফাইল ছবি

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলি করে বাংলাদেশিদের হত্যা বন্ধ করতে হলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের দোষ দিয়ে লাভ নেই বলে মনে করেন বাংলাদেশের খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। এক্ষেত্রে বাংলাদেশি নাগরিকদেই সতর্ক হতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

মজুমদার বলেন, ‘আসলে আমাদের চরিত্র যদি ভালো না হয় - পরের দোষ দিয়ে লাভ নেই’।

বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়েছে- নওগাঁ জেলার পোরশা সীমান্তে গত ২২ জানুয়ারি ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীদের হাতে তিনজন বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়। যে সীমান্তে এ ঘটনা ঘটেছে সেখানকার সংসদ সদস্য সাধন চন্দ্র মজুমদার, যিনি খাদ্যমন্ত্রী।

রাজশাহীর পবা উপজেলায় এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে তার নির্বাচনী এলাকার তিন ব্যক্তির মৃত্যুর প্রসঙ্গ তোলেন সাংবাদিকরা।

জবাবে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার পরিষ্কার জানিয়ে দেন, এখানে দোষ বাংলাদেশী নাগরিকদেরই, সুতরাং সরকারের কিছুই করনীয় নেই।

মজুমদার বলেন, আমরা গরুর বিট খুলতে দিবনা। আমাদের উপজেলায় রেজ্যুলুশন আছে, বিজিবি’র রেজ্যুলুশন আছে, জেলা আইন-শৃঙ্খলা মিটিং-এ রেজ্যুলুশন আছে। তারপরেও কেউ যদি জোর করে কাঁটাতারের বেড়া কেটে গরু আনতে যায় আর ইন্ডিয়ার মধ্যে গুলি খেয়ে মারা যায়, তার জন্য দায়-দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকার নেবে না।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাসীন হবার পর ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১১ বছরে প্রায় সাড়ে তিন শ বাংলাদেশি নাগরিককে সীমান্তে গুলি করে হত্যা করেছে ভারতীয় সীমান্ত-রক্ষী বাহিনী বিএসএফ।

অথচ উভয় দেশ গত ১০ বছর যাবত পরস্পরকে সবচেয়ে ভালো বন্ধু হিসেবে বর্ণনা করছে। চলতি বছরের প্রথম ২৫ দিনেই প্রায় ১০ জন বাংলাদেশি বিএসএফ’র হাতে নিহত হয়েছে।

বাংলাদেশের ভেতরে অনেকেই সমালোচনা করেন যে সীমান্ত হত্যার বিরুদ্ধে সরকারের যতটা সরব হওয়া উচিত, ততটা তারা হচ্ছেনা। উল্টো বিভিন্ন সময় ক্ষমতাসীনদের সাথে সম্পৃক্ত কিংবা সরকারি কর্মকর্তারা এমন বক্তব্য দিচ্ছেন, যাতে বাংলাদেশিদের দোষ বেশি - এমনটাই তুলে ধরা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

মানবাধিকার কর্মী নুর খান লিটন বলেন, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, কোনভাবেই সীমান্তে গুলি করে হত্যা করার বিষয়টি আইন অনুযায়ী একেবারেই যুক্তিসংগত নয়।

খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গে লিটন বলেন, দায়িত্বশীল পদে থেকে যদি এ ধরণের বক্তব্য দেয়া হয়, তখন ধরেই নিতে হয় যে আমাদের পররাষ্ট্রনীতির দুর্বলতার দিক রয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার বরাবরই দাবি করে যে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ এবং প্রতিবাদ ভারত সরকারের কাছে তুলে ধরা হয়। অন্যদিকে বিএসএফ বলে, সীমান্তে তাদের সদস্যরা আক্রান্ত হলেই কেবল গুলি করে।

২০১১ সালে কুড়িগ্রাম সীমান্তে কিশোরী ফেলানি খাতুনকে গুলি করে হত্যার ঘটনার পর বিএসএফ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড তারা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার চেষ্টা করবে, এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করবে না।

কিন্তু সম্প্রতি বেশ কিছুদিনের মধ্যে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এটা স্পষ্ট যে সেই নীতি মেনে চলা হচ্ছে না।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত