ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

মুক্তির মহানায়ক

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২০, ২২:১৬

মুক্তির মহানায়ক

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নির্মিত অনুষ্ঠান ‘মুক্তির মহানায়ক’ দিয়ে শুরু হয়েছে মুজিববর্ষের আনুষ্ঠানিকতা। বছরব্যাপী মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাস বিপর্যয়ের কারণে তা বাতিল করা হয় এবং মুক্তির মহানায়ক অনুষ্ঠান নির্মাণ করে তা সম্প্রচার করা হয়।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আতশবাজির মাধ্যমে মুক্তির মহানায়ক অনুষ্ঠানটির শুরু হয়। এরপর শত শিশু-কিশোরের কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা। জাতীয় সঙ্গীতের পর জাতির দেওয়া রাষ্ট্রপতির ভাষণ সম্প্রচার করা হয়।

বঙ্গবন্ধুর বড় মেয়ে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকের শিশু-কিশোর, তরুণ সমাজের কাছে আমার আবেদন- তোমরা দেশকে এবং দেশের মানুষকে ভালোবাসবে। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই স্বাধীনতা।

স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে চলার উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে তোমাদের নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। ঠিক যেভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের মানুষকে ভালোবেসেছিলেন, সেভাবেই ভালোবাসতে হবে। তার আদর্শে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে।

বক্তব্যের শুরুতে দেশের ভিতরে ও বাইরে অবস্থানরত বাংলাদেশের সব নাগরিক এবং বিশ্ববাসীকে মুজিববর্ষের শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধু এ জাতিকে বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আজ ১৭ই মার্চ। ১৯২০ সালের আজকের দিনে এই বাংলায় জন্ম নিয়েছিলেন এক মহাপুরুষ। তিনি আমার পিতা, শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশ নামের এই দেশটি তিনি উপহার দিয়েছেন। দিয়েছেন বাঙালিকে একটি জাতি হিসেবে আত্মপরিচয়ের মর্যাদা। তাইতো তিনি আমাদের জাতির পিতা।

শেখ হাসিনা বলেন, ছোটবেলা থেকেই মানুষের দুঃখ-কষ্টে ব্যথিত হতেন জাতির পিতা। অকাতরে বিলিয়ে দিতেন তার জামাকাপড়, বই, ছাতা। যার যখন যা প্রয়োজন মনে করতেন, তাকে নিজের জিনিস দিয়ে দিতেন। নিজের খাবারও তিনি ভাগ করে খেতেন। দুর্ভিক্ষের সময় গোলার ধান বিলিয়ে দিতেন। মানুষের জন্য কিছু করতে পারার মধ্যেই তিনি আনন্দ পেতেন।

ব্যক্তি জীবনের বঙ্গবন্ধু চাওয়া পাওয়া কিছু ছিল না জানিয়ে তার বড় মেয়ে বলেন, নিজের জীবনের কোন চাওয়া পাওয়া ছিল না। বাংলাদেশের মানুষকে উন্নত, সুন্দর জীবন নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন তিনি।

বিগত বছরগুলোতে দেশ এগিয়ে যাওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার (বঙ্গবন্ধু) সে ত্যাগ বৃথা যায়নি। আজ বাংলাদেশ সারা বিশ্বে মর্যাদার আসনে আসীন। আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে। গড়তে হবে জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে নির্মমভাবে সপরিবারে নিহত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশের বাইরে থাকায় সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর বড় মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছোট মেয়ে শেখ রেহানা।

বঙ্গবন্ধুর নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা নিজের বাবাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, পিতা, ঘাতকের নির্মম বুলেট কেড়ে নিয়েছে তোমাকে। তোমার দেহ রক্তাক্ত করেছে। তোমার নাম বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু ওরা পারেনি। ঘাতকেরা বুঝতে পারেনি তোমার রক্ত ৩২ নম্বর বাড়ির সিঁড়ি বেয়ে-বেয়ে ছড়িয়ে গেছে সারা বাংলাদেশে। জন্ম দিয়েছে কোটি কোটি মুজিবের।

তাই আজ জেগে উঠেছে বাংলাদেশের মানুষ সত্যের অন্বেষণে। ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না। সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না। আজ শুধু বাংলাদেশ নয় তোমার জন্মশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। বাংলাদেশকে বিশ্ব চিনে নিয়েছে তোমার ত্যাগের মহিমায়।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, পিতা, তোমার কাছে আমাদের অঙ্গীকার, তোমার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়বোই। আর সেদিন বেশি দূরে নয়। তুমি ঘুমিয়ে আছ টুঙ্গিপাড়ার সবুজ ছায়াঘেরা মাটিতে পিতা-মাতার কোলের কাছে। তুমি ঘুমাও পিতা শান্তিতে। তোমার বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কিছুটা পরিবর্তন আনার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তবে বছরব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমরা মুজিববর্ষ উদযাপন করবো।

করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে বিদেশি অতিথিদের আগমন স্থগিত করার হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একই কারণে বিদেশি অতিথিদের সফর স্থগিত করা হয়েছে।

ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নমগেয়েল ওয়াংচুক, নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, জাতিসংঘের মহাসচিব এন্টিনিও গুতেরাস এবং ওআইসি’র মহাসচিব ড. ইউসুফ আল ওথাইমিন-সহ বেশ কয়েকজন বিদেশি শুভাকাক্ষী ভিডিওবার্তা পাঠিয়ে মুজিববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত