শেকলে বন্দি ৮ বছর
শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ ডিসেম্বর ২০২০, ১৫:৪৯
বিনা চিকিৎসায় ৮ বছর ধরে শেকলে বন্দি মানসিক প্রতিবন্ধী মেহেরনাজ। অভাব-অনটনে চিকিৎসা করাতে পারছেন না স্বজনরা। ফলে প্রতিবন্ধী মেহেরনাজকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন মা হাওয়া বেগম।
মেহেরনাজ শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা সদর ইউনিয়নের উপজেলা সদরের কাচারীপাড়া মহল্লার গোলাম মোস্তফার মেয়ে। মেহেরনাজ ৭ বছর বয়স থেকেই মানসিক ভারসাম্যহীন আচরণ করতে শুরু করে। বাবা গোলাম মোস্তফা বেঁচে থাকাবস্থায় সাধ্যমতো চিকিৎসা করালেও মারা যাওয়ার পর থেকে মেহেরনাজের চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়।
মেহেরনাজের মা হাওয়া বেগম জানান, দুই ছেলে, চার মেয়েকে নিয়ে তাদের ৮ সদস্যের পরিবার ছিলো। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম তার স্বামী গোলাম মোস্তফা ২০১১ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এরপর থেকেই অর্থসঙ্কটে পড়েন তারা।
তিন মেয়ের বিয়ে দেয়া হয়েছে। দুই ছেলেও বিয়ে করে আলাদা সংসার করছে। ছেলেদেরই সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। সহায়-সম্বল বলতে কোনো কিছুই নেই হাওয়া বেগমের। সরকারি খাস দুই শতাংশ জমির ওপর একটি ঘর করে থাকেন তিনি। বয়স ও শারীরিক দুর্বলতার কারণে কাজও করতে পারেন না। বর্তমানে শিকলে বাঁধা মেয়ে মেহেরনাজকে নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন। প্রতিবেশীরা যা দেয় তাই খেয়ে দিন চলছে তাদের।
হাওয়া বেগম জানান, ১০ টাকা কেজির একটি চালের কার্ড, তার নামে একটি বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধী মেয়ে মেহেরনাজের নামে একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড চেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে দীর্ঘদিন থেকে অনেক আবেদন করেছেন তিনি। কিন্তু তাদের ভাগ্যে কোনো সাহায্য-সহযোগিতা জোটেনি।
ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন চাঁন বলেন, এখন কোনো কিছু দেয়ার সুযোগ নেই। সরকারি সাহায্য এলে পরবর্তীতে দেয়া হবে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে
