মেয়ে হত্যার বিচারের অপেক্ষায় আনুশকার মা
মো. ফরহাদ উজজামান
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২১, ১৯:৫৩
রাজধানীর মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ফারদিন ইফতেখার দিহানের যথাযথ ও দ্রুত বিচার চেয়েছেন নিহত কিশোরীর মা। তিনি বলেন, মেয়ে হত্যার বিচার হলে মনকে কিছুটা হলেও সান্ত্বনা দেয়া যাবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাংলাদেশ জার্নালকে কথাগুলো বলছিলেন আনুশকার মা শাহানুরী আমিন।
তিনি বলেন, মামলার প্রথম তদন্ত জমা না দেয়ায় তারিখ পেছানো হয়েছে। এভাবে তদন্ত প্রতিবেদনের তারিখ বারবার পরিবর্তন হলে সঠিক বিচার কীভাবে হবে?
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কলাবাগান থানার পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) আ.ফ.ম আসাদুজ্জামান মামলাটির প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় আদালত প্রতিবেদনের জন্য ১১ ফেব্রুয়ারি নতুন দিন ধার্য করেন।
আনুশকার মা অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার করেছে। আমার মেয়ে দিহানের বাসায় সময় কাটানো জন্য গিয়েছিলো এটা মিথ্যা। তিনি বলেন, দিহান আমার মেয়েকে জোর করে রিকশায় নিয়ে গেছে।
তিনি আরো বলেন, সে (আনুশকা) কারো বাসায় এভাবে চলে যাবে এতোটা সাহস তার ছিলো না। দিহান আমার মেয়েকে ট্র্যাপে ফেলে জোর করে বাসায় নিয়েছে। ঘুমের ওষুধ জাতীয় কিছু মিশিয়েছিলো।
সেদিনের কথা মনে করে আনুশকার মা বলেন, আমার মেয়ের নিষ্পাপ নিথর দেহটা সেদিন হাসপাতালের বেডে পড়েছিলো। সেই বীভৎস দিনটা মনে পড়লে আজও আমি ভড়কে উঠি।
তিনি আরো বলেন, আমার বাচ্চাকে প্রচণ্ড নির্যাতন করা হয়েছে। এ নির্যাতন আসলে একজনের পক্ষে করা সম্ভব না। আমার মনে হচ্ছে, ঘটনার সঙ্গে চার জনই জড়িত ছিলো।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) সকালে বন্ধু দিহানের মোবাইল কল পেয়ে বাসা থেকে বের হন রাজধানীর ধানমণ্ডির মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী আনুশকা নুর আমিন। এরপর আনুশকাকে কলাবাগানের ডলফিন গলির নিজের বাসায় নিয়ে যান দিহান। ফাঁকা বাসায় জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্কের একপর্যায়ে মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়লে দিহানসহ চার বন্ধু তাকে ধানমণ্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ধর্ষণের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয় বলে জানান চিকিৎসকরা।
গত ৭ জানুয়ারি দিনগত রাতে নিহত ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯-এর ২ ধারায় ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ আনা হয়। মামলার একমাত্র আসামিকে সেদিন রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়।
পরদিন তাকে আদালতে হাজির করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। সে অনুযায়ী আসামি দিহান ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে একই আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ