ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১২ মিনিট আগে
শিরোনাম

সরকারি হাসপাতালের ৭০ লাখ টাকা আত্মসাত!

  নড়াইল প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২১, ১৭:৫৯  
আপডেট :
 ০৭ এপ্রিল ২০২১, ১৮:০৪

সরকারি হাসপাতালের ৭০ লাখ টাকা আত্মসাত!
জাহানারা খানম লাকি

নড়াইল সদর হাসপাতালের হিসাবরক্ষক ও এক সময়ের বিএনপির প্রভাবশালী নারী নেত্রী জাহানারা খানম লাকির বিরুদ্ধে ২১ মাসের ইউজার ফি'র (হাসপাতালের বিভিন্ন খাত থেকে আয়ের টাকা) ৭০ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

হাসপাতালের হিসাবরক্ষকের এ অর্থ জমা দেয়ার কথা। হিসাবরক্ষক ব্যাংকে অর্থ জমা দেয়ার কিছু চালান দেখাচ্ছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বলছে এসব চালান জাল।

জাহানারা খানম লাকি শহরের আলাদাতপুর এলাকার জেলা বিএনপির বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক মেয়র জুলফিকার আলী মন্ডলের স্ত্রী।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাহান আরা খানম লাকি ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই নড়াইল সদর হাসপাতালে হিসাবরক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। হাসপাতালের রোগি ভর্তি ফি, অপারেশান থিয়েটার, বহিঃ ও জরুরি বিভাগে চিকিৎসা ফি, এক্সরে, প্যাথলজি, আলট্রাসনো ও ব্লাড ব্যাংক, কোভিড-১৯ নমুনা সংগ্রহ ফি, অ্যাম্বুলেন্স, ইসিজি, কেবিন ও পেইন বেড ফিসহ বিভিন্ন খাত থেকে যে আয় হয় তা প্রতি মাসে একবার করে সোনালী ব্যাংক প্রধান শাখায় জমা দিতে হয়। সেই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়। কিন্তু বর্তমান হিসাবরক্ষক হাসপাতালে যোগদানের পর কোনো অর্থ জমা দেননি বলে অভিযোগ।

অভিযোগ উঠেছে, হিসাবরক্ষক জাহানারা খানম লাকি সদর হাসপাতালে যোগদানের পর ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের ৪৫ লাখ টাকা এবং ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের ৯ মাসের ২৫ লাখ টাকা ব্যংকে জমা দেননি। তিনি সোনালী ব্যাংকে এসব অর্থ জমা দেয়ার চালান দেখাচ্ছেন, যা ভুল বলে জানা গেছে।

অভিযুক্ত হিসাবরক্ষক জাহানারা খানম লাকি বলেন, কিছু টাকা জমা দিতে বাকি আছে, তা এক সপ্তাহের মধ্যে দিয়ে দেবো।

তবে কত টাকা বাকি রয়েছে তা বলতে লাকি। এছাড়া এ বিষয়ে এর বেশি কিছু বলতে চাননি তিনি।

সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুর শুকুর বলেন, ইউজার ফি সঠিকভাবে ব্যাংকে জমা পড়ছে কিনা তা যাচাই করার জন্য হিসাবরক্ষকের কাছ থেকে ব্যাংকের সই ও সিল সম্বলিত চালান নিয়ে মঙ্গলবার সোনালী ব্যাংকে গিয়ে দেখি গত ২১ মাসে ৭০ লাখ টাকার এক টাকাও জমা পড়েনি। সোনালী ব্যাংক ম্যানেজার জানিয়েছেন চালানগুলোর সই ও সিল তাদের না।

ডা. আব্দুর শুকুর আরও বলেন, এ ঘটনার পর হিসাবরক্ষককে বিষয়টি জানিয়েছি এবং ৩ দিনের মধ্যে সব অর্থ ব্যাংকে জমা দেয়ার জন্য বলেছি। তার বিরুদ্ধে কেনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা জানতে চিঠি দেয়া হবে। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত হিসাবরক্ষককে পরবর্তীতে ইউজার ফি জমা দেয়ার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

নড়াইল সোনালী ব্যাংক প্রধান শাখার ম্যানেজার মো. আবু সেলিম বলেন, সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মহোদয় যেসব চালান নিয়ে ব্যাংকে এসেছিলেন তার কোনোটিই ব্যাংকে জমা পড়েনি।

উল্লেখ্য, নড়াইল সদর হাসপাতালের সাবেক হিসাবরক্ষক মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত একইভাবে হাসপাতালের ইউজার ফি ব্যাংকে জমা না দিয়ে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় মামলা হয়। মামলা নং-৪/২০২০, যা এখন বিচারাধীন বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত