ঢাকা, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

রাজি হয়েও জবানবন্দি দিলেন না বাবুল আক্তার

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৭ মে ২০২১, ১৬:১৭

রাজি হয়েও জবানবন্দি দিলেন না বাবুল আক্তার
ফাইল ছবি

চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েও শেষ পর্যন্ত আদালতে জবানবন্দি দেননি সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে জবানবন্দি দেয়ার জন্য হাজির করা হয়। বিচারক নিয়ম অনুযায়ী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ার জন্য তাকে তিন ঘণ্টা সময় দেন।

জবানবন্দি দিতে রাজি হলে বাবুলকে বিচারকের চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম সারোয়ার জাহানের খাসকামরায় নেয়া হয়। কিন্তু পরে জবানবন্দি দিতে তিনি অস্বীকৃতি জানান। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত সাংবাদিকরাও বাবুল আক্তারের বিষয়ে তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের কোন ধরনের বক্তব্য জানতে পারেননি।

তবে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবউদ্দিন আহমেদ বলেন, সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার ৫ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। পরে তাকে কারাগারে পাঠাতে আদেশ দিয়েছেন বিচারক।

বাবুল আক্তারের আইনজীবী আরিফুর রহমান বলেন, বিচারকের খাস কামরা থেকে বাবুল আক্তারকে কারাগারে নেয়া হয়েছে। আমরা উনার সাথে কথা বলতে পারিনি। পরবর্তী অবস্থা অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ নেব।

এদিকে পিবিআই বলছে, রিমান্ডে বাবুল আক্তার তেমন কোনো তথ্য দেননি। তিনি শুধু বলেছেন, আপনারা সব ঘটনা প্রথম থেকে জানেন। আমি নতুন করে কী বলবে। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে প্রায়ই সময় চুপ ছিলেন বাবুল আক্তার।

হত্যার বিষয়ে জ্ঞিজাসাবাদ করা হলে মুখ খোলেননি বাবুল আক্তার। তবে তিনি সন্তানদের নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন বলে জানান পিবিআই কর্মকর্তাদের।

আরও পড়ুন: মিতু হত্যাকাণ্ডে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

এর আগে গতকাল রোববার এই মামলায় আরও ২ আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তারা হলেন- মোতালেব মিয়া (ওয়াসিম) ও আনোয়ার হোসেন। বর্তমানে তারা চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।

এ নিয়ে মিতু হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া নতুন মামলায় বাবুল আক্তারসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। চারজনই নতুন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

আরও পড়ুন: গায়েত্রীর সঙ্গে বাবুলের প্রণয়ের জেরে প্রাণ যায় মিতুর

তথ্যমতে, ওয়াসিম ও আনোয়ার প্রায় ৫ বছর ধরে কারাগারে আছেন। মিতু হত্যার পর ২০১৬ সালের ২৬ জুন আনোয়ার ও ওয়াসিমকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

উল্লেখ, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার ওআর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ওই বছরের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

আরও পড়ুন: যে কল রেকর্ডে ফাঁসলেন এসপি বাবুল

২০২০ সালের জানুয়ারিতে মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। এরপর মামলার তদন্তে গতি আসে। ১৫ মাস পর গত ১১ মে বাদী বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেয় পিবিআই। তবে এর আগেই ঘটনার সঙ্গে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হন তদন্তসংশ্লিষ্টরা। পরদিন আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয় বাবুল আক্তারের মামলার।

এরপর মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে নতুনভাবে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আরও ৭ জন আসামি আছেন। এরা হলেন- মো. কামরুল ইসলাম সিকদার ওরফে মুসা (৪০), এহতেশামুল হক ওরফে হানিফুল হক ওরফে ভোলাইয়া (৪১), মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম (২৭), মো. আনোয়ার হোসেন (২৮), মো. খায়রুল ইসলম ওরফে কালু (২৮), সাইদুল ইসলাম সিকদার (৪৫) ও শাহজাহান মিয়া (২৮)। এই মামলাও তদন্ত করছে পিবিআই।

আরও পড়ুন: হোটেলে নারীর সঙ্গে বাবুলকে দেখে ফেলেন মিতু

মোশাররফ হোসেনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১২ মে বাবুল আক্তারকে আদালতে হাজির করে পিবিআই। আদালত তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাবুল আক্তারকে পিবিআই হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

গত ১২ মে রাতে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাণীরহাট এলাকা থেকে র‍্যাবের একটি দল নতুন মামলার আসামি মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কুকে গ্রেপ্তার করে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করে। তাকেও ৪ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত