ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রতিশ্রুতি রক্ষায় নাইট গার্ডের দায়িত্বে ইউপি চেয়ারম্যান

  ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩:৪৭  
আপডেট :
 ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩:৫৩

প্রতিশ্রুতি রক্ষায় নাইট গার্ডের দায়িত্বে ইউপি চেয়ারম্যান
ছবি: প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁওয়ের একটি ইউনিয়নে প্রতি রাতে পাহারাদারের দায়িত্ব পালন করছেন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান। দীর্ঘ চার বছর ধরে ঠাকুরগাঁও সদরের মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে চেয়াম্যান মো. সোহাগ ব্যতিক্রম এ কাজটি করে যাচ্ছেন।

জানা যায়, তিনি ২০১৬ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ওই সময় নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি ভোটারদের বেশকিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আর সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতেই তাকে এলাকার নাইটগার্ডের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে তিনি জানান, একটা সময় ছিল যখন তার এলাকা মোহাম্মদপুরসহ জেলাজুড়েই চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটতো। তার ইউনিয়নের অনেক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের একটা বড় সমস্যা ছিলো মামলার জটিলতা। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একে অপরের নামে মামলা করতো। আর ওই মামলার খরচ চালাতে গিয়ে উভয় পক্ষই নিঃস্ব হয়ে যেতো। তার খুব ইচ্ছে ছিলো, এই সমস্যার সমাধান করার। তাই নির্বাচনি ইশতেহারে এই বিষয়গুলো তুলে ধরলে, তিনি ব্যাপক সাড়া পান। ইউনিয়নের মানুষ তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন। তিনিও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ শুরু করেন।’

এলাকার মানুষের অভিযোগগুলো স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা শুরু করেন। মামলায় গেলে তাদের কি পরিমাণ ক্ষতি হতে পারে, তা বোঝানোর চেষ্টা করেন। এতে ভালো ফল পান বলে তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ইউনিয়ন থেকে থানায় দেয়া অভিযোগের পরিমাণ সবচেয়ে কম। তাই আমি শ্রেষ্ঠ কমিউনিটিং পুলিশিং সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। আমাকে কমিউনিটিং পুলিশিং ২০২১ পুরস্কার দেয়া হয়েছে। তবে দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিকে এলাকার চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধগুলো সামলানো খুব কঠিন হয়ে পরেছিলো।

চেয়ারম্যান সোহাগ বলেন, ‘চৌকিদারদের অসাবধানতা ও সঠিক মনিটরিং এর অভাবে রাতের বেলায় চুরি ও ডাকাতি হয়। এ কারণে আমি রাত জেগে ইউনিয়নের পাহারা দেয়া শুরু করেছি। এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে চৌকিদার ও পাহারাদার বসিয়ে নিজে রাতভর মনিটরিং করি। প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর ঘুমাতে যাই। আবার সকাল সাড়ে দশটায় পরিষদে যাই। এই কাজে প্রথমে কষ্ট হলেও এখন বেশ উপভোগ করছি।’

মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা সাজ্জাদ বলেন, ‘প্রথমে যখন চেয়ারম্যান নিজেই এলাকা পাহারা দেয়ার কথা জানান, তখন বিষয়টা বেশ অদ্ভুত লেগেছিলো। তবে আমরা এর ভালো ফল পাচ্ছি। আর যাই হোক, এলাকাবাসী তার উপরে সন্তুষ্ট।

ঠাকুরগাঁও উপজেলার চেয়ারম্যান অরুণাংশু দত্ত টিটু জানান, সোহাগ চেয়ারম্যানের পাহারা দেয়াটা এখন জেলায় আলোচ্য বিষয়। মানুষ সামর্থ্য থাকলেও যেখানে প্রতিশ্রুতি রক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয় না, সেখানে তিনি অদ্ভুত পন্থায় অবলম্বন করে নির্বাচনি ওয়াদা পূরন করেছেন। তার জন্য শুভকামনা রইলো।

বাংলাদেশ জার্নাল/জেবি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত