ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

সংবাদ সম্মেলনে জনউদ্যোগ

ভৈরব নদ থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে পুলিশ লাইনের পুকুর ভরাট

  যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২২, ২১:৪৬

ভৈরব নদ থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে পুলিশ লাইনের পুকুর ভরাট

যশোর শহরের ভৈরব নদের বালু উত্তোলন করে পুকুর ভরাট করার হচ্ছে। এর ফলে যশোরের পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে দীর্ঘ পাইপলাইন স্থাপন করে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজীপাড়া আব্দুল আজিজ সড়কের তেঁতুলতলা কালভার্টের নিকটবর্তী ভৈরব নদে ড্রেজিং মেশিন স্থাপন করে বালু উঠিয়ে শহরের পুলিশ লাইনের মধ্যবর্তী একটি পুকুর ভরাট করছে।

দীর্ঘদিন ধরে ভৈরব নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উঠানোর প্রতিবাদে রোববার জনউদ্যোগের নিজস্ব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে জনউদ্যোগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা রুকুনউদ্দৌলাহ বলেন, বালু উত্তোলন পাইপলাইনটি বেশ মোটা হওয়ায় কোনো কোনো স্থানে রাস্তার উপর দিয়ে অতিক্রম করার ফলে স্পিডব্রেকারের চেয়ে উঁচু হয়ে যাচ্ছে। মানুষ ও যানবাহন চলাচলে বাধাগ্রস্ত করছে। যানবহান ঝুঁকির মধ্যে পাইপলাইন অতিক্রম করছে। যশোর জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকটবর্তী স্থান থেকে দীর্ঘদিন যাবৎ প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন কার্যক্রম করলেও সবাই নিরব ভূমিকা পালন করছে। এ কার্যক্রম বুঝিয়ে দিচ্ছে, দেশে এখনও পরিবেশ বিপর্যয় ও জলবায়ুগত পরিবর্তনের বিষয়গুলো মেনে চলার প্রয়োজন দেখা দেয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, হঠাৎ করে কোনো স্থান পার্শ্ববর্তী স্থানের চেয়ে গভীর খনন করে বালু উঠানো হলে পার্শ্ববর্তী চতুর্দিকের মাটি বা ভূমি বছরের পর বছর ধরে ধ্বসে যেতে থাকবে। এর প্রভাবে আশেপাশের স্থাপনা ও বসতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবে। গভীরতা যত বেশি হবে, ধ্বসের এলাকাও তত বেশি দূর পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। বালুস্তর যত পুরু ও বিস্তৃত হবে, সঞ্চিত পানীয় জলের পরিমাণ তত বেশি হবে। অধিক সংখ্যক মানুষের পানীয় জল সরবরাহে সক্ষম হবে। দিন দিন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায়, বহুবিধ কাজে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করার কারণে বিগত কয়েক বছর থেকে চৈত্র ও বৈশাখ মাসে যশোর জেলায় পানির বেশ সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। কারণ কোনো স্থান থেকে বালু উত্তোলন করে লেয়ার বিচ্ছেদ করা হলে এর নিম্নঢালের দিকে ভূগর্ভস্থ পানির প্রবাহ ও সরবরাহ বিঘ্নিত হবে এবং লেয়ার শেষপ্রান্তে পানি পৌঁছানোও বিঘ্নিত হবে। ফলে এ স্তরের ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর পানি ব্যবহারজনিত কার্যক্রমসমূহও বিঘ্নিত হবে।

জনউদ্যোগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা রুকুনউদ্দৌলাহ আরও বলেন, লেয়ারে বালির পরিমাণ যত কম হবে পানি সঞ্চয়ের পরিমাণও তত কম হবে। বালি উত্তোলন করে পানি সঞ্চয়ের পরিমাণকেই কমিয়ে দেয়া হয়। বালি অধিক গভীর করে উত্তোলন করা হলে আশেপাশের অনেক দূর এলাকা ভূমিকম্প জনিত ব্যাপক ভূমিধ্বসের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে প্রায় শত বছর লেগে যাবে। আবার যে মৃত্তিকার নিচে বালিস্তরের অভাব রয়েছে, সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ কষ্টকর হয়ে পড়বে। ভবনের স্থায়িত্ব বা টেকসই কম হবার ঝুঁকিতে থাকে। বহুতল ভবন যদি আগেই নির্মিত হয়ে থাকে তবে তার কাছাকাছি দূরত্বের মৃত্তিকার নিচের বালি উত্তোলনের ফলে সৃষ্ট গর্ত ক্রমান্বয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে মাটি ধ্বসে এসে ভরাট হতে থাকে এবং এভাবে আস্তে আস্তে বেশ দূর পর্যন্ত ধ্বসের প্রভাব পড়তে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে জনউদ্যোগ যশোরের আহ্বায়ক প্রকৌশলী নাজির আহমদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) যশোর জেলা কমিটির সভাপতি ও জনউদ্যোগ সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন, জনউদ্যোগ সদস্য অ্যাডভোকেট আফরোজা বেগম, আইইডির যশোর কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক বীথিকা সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত