ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

শ্বশুরবাড়ি থেকে মনোনয়ন চান দুই বধূ

  পঞ্চগড় প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ১৫:৫৮  
আপডেট :
 ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ১৬:৩১

শ্বশুরবাড়ি থেকে মনোনয়ন চান দুই বধূ

পঞ্চগড়-১ আসনে মনোনয়নের দৌড়ে এবার দুজন নারী প্রার্থী রয়েছেন। এরা দুজনই পঞ্চগড়ের পুত্রবধূ। রাজনীতির মাঠেও বেশ সরব। তাই শ্বশুরালয়ে মনোনয়নের দাবি তাদের। মনোনয়ন পেতে এরই মধ্যে প্রচার প্রচারণাও চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এদের একজন বাংলাদেশ আওয়ামী মহিলা লীগের সদস্য ও পঞ্চগড় জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া খাতুন আরেকজন যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি সারমিন জাহান মেরী।

বর্তমান যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সারমিন জাহান মেরী। তার শ্বশুরবাড়ি পঞ্চগড়ে। তিনি বর্তমানে পঞ্চগড়ের স্থায়ী বাসিন্দা। প্রায় ১৮ বছর ধরে পঞ্চগড়ের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে আছেন তিনি। বিশেষত ২০০১ সালে পঞ্চগড় যুব মহিলা লীগের প্রতিষ্ঠা হয় তার হাত ধরেই। তিনি পঞ্চগড় যুব মহিলা লীগের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ছিলেন। ঢাকায় অবস্থান করলেও পঞ্চগড়ের নারী নেতৃত্বের অঙ্গনে তিনি পরিচিত নাম। এবার আওয়ামী লীগ থেকে পঞ্চগড়-১ আসনে মনোনয়নের অন্যতম দাবিদার তিনি। তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র কিনে জমা দিয়েছেন। এই নারী নেত্রী পেশায় একজন টেলিভিশনের সংবাদ পাঠক।

জানা যায়, সারমিন জাহান মেরী ১৯৮০ সালের ২০ জানুয়ারি পিরোজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সৈয়দ আলী ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তিন বোনের মধ্যে সবার বড় মেরী। পরে তারা ঢাকায় স্থায়ী হন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল ফলাফল করে মেরী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন নিয়ে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্রলীগের সাথে জড়িত ছিলেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। পরে যুব মহিলা লীগের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই তিনি যুব মহিলা লীগের নেতৃত্বে আসেন। যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ২০০১ সালে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। বিএনপি জোট সরকারের সময়ে একাধিক মামলার আসামি হতে হয়েছে এই নারী নেত্রীকে। এমনকি কারাবরণও করতে হয়েছে।

২০০১ সালেই তিনি বিয়ে করেন পঞ্চগড় জেলা শহরের ধাক্কামারা এলাকার হাকিম উদ্দিন মাস্টার ছেলে সাদেকুল আলমকে। ২০০২ সালে তিনি পঞ্চগড়ের যুব মহিলা লীগ গঠন করে নেতৃত্বে আসেন। সারমিন জাহান মেরী বেসরকারি টেলিভিশন আরটিভিতে সংবাদ পাঠক হিসেবে তার চাকরি জীবন শুরু করেন। পরে বাংলাভিশন, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারেও তিনি সংবাদ পাঠক হিসেবে কাজ করেন। বর্তমানে তিনি বেসরকারি টেলিভিশন এশিয়ান টিভিতে সংবাদ পাঠক হিসেবে কর্মরত আছেন। মূলত বিয়ের পর থেকেই পঞ্চগড়ের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন মেরী।

সারমিন জাহান মেরী জানান, আমি পঞ্চগড়ের স্থায়ী বাসিন্দা। আমি ১৮ বছর ধরে পঞ্চগড়ের কাজ করে আসছি। আমি আমার প্রাণের জন্য আওয়ামী লীগ থেকে পঞ্চগড়-১ আসনে মনোনয়নের জন্য মনোনয়নপত্র কিনে তা পূরণ করে জমা দিয়েছি। আমি মনোনয়ন পেতে আশাবাদী। আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য কাজ করবো। এছাড়া পঞ্চগড়কে ডিজিটাল নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমি সর্বাত্মকভাবে কাজ করবো। আশা করি দলের কেন্দ্রীয় নীতি নির্ধারকরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন। দলের সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন আমি আওয়ামী লীগের জন্যই কাজ করে যাবো।

পঞ্চগড়ের আওয়ামী লীগের নারী নেত্রীদের মধ্যে জাকিয়া খাতুনকে সবাই এক নামে চেনে। দলীয় মিছিল মিটিং থেকে শুরু করে সাংগঠনিক কাজে তিনি বেশ তৎপর। জন্মস্থান দিনাজপুর হলেও বর্তমানে তিনি পঞ্চগড়ের স্থানী বাসিন্দা। জাকিয়া খাতুন বর্তমান বাংলাদেশ আওয়ামী মহিলা লীগের সদস্য ও পঞ্চগড় জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এবার তিনি পঞ্চগড়-১ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতিকের জন্য দলীয় মনোনয়নপত্র কিনে জমা দিয়েছেন।

জাকিয়া খাতুন পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক। পঞ্চগড় ডক্টর আবেদা হাফিজ স্কুল অ্যান্ড কলেজে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। জাকিয়া খাতুনের জন্ম দিনাজপুর জেলা সদরের রামনগর এলাকায়। তিনি ওই এলাকার আব্দুল জলিলে মেয়ে। ৩ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে সবার বড় জাকিয়া খাতুন। তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর দিনাজপুর কেবিএম কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। পরে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। নিজ কলেজে ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে মিছিল মিটিংসহ সব দলীয় কর্মসূচিতে থাকতেন জাকিয়া।

১৯৯৩ সালে তার বিয়ে পঞ্চগড় জেলা সদরের নতুন বস্তি এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে আনোয়ার হোসেনের সাথে। বিয়ের পর পঞ্চগড়ে ছাত্রলীগের সাথেই তার পথচলা শুরু। যদিও কোন পদে ছিলেন না। ২০০০ সালে তিনি পৌর আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০০৭ সালে তিনি সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের পঞ্চগড় জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এখন পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। ব্যাপক জনপ্রিয়তা থাকায় গত পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতার সুযোগ পান জাকিয়া। তবে তিনি ভোটে পরাজিত হন।

জাকিয়া খাতুন জানান, পৌর নির্বাচনে দলীয় কোন্দলের কারণে আমি জয়ী হতে পারিনি। পঞ্চগড়ের মানুষ আমাকে ভালোবাসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মাঠে থাকতে বলেছেন আমি মাঠে রয়েছি। এবার পঞ্চগড়-১ আসনে মনোনয়নের জন্য আমি দলীয় মনোনয়নপত্র কিনে তা পূরণ করে জমা দিয়েছি। আমি পঞ্চগড়ের মানুষকে ভালোবাসি। তাই তাদের জন্য কাজ করতে চাই। আমি মনোনয়ন পেতে আশাবাদী। দল আমাকে মনোনয়ন দিক বা না দিক। আমি নৌকার প্রার্থীকে জয়ী করতে কাজ করে যাবো।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত