ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

মেঘনায় ট্রলার ডুবি

৫ দিনেও সন্ধান মেলেনি নিখোঁজ ২০ শ্রমিকের

  মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:০৫  
আপডেট :
 ১৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:০৬

৫ দিনেও সন্ধান মেলেনি নিখোঁজ ২০ শ্রমিকের

৫ দিনেও সন্ধান মেলেনি মুন্সীগঞ্জের চরঝাঁপটার মেঘনা নদীতে তেলবাহী জাহাজের ধাক্কায় মাটিভর্তি ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ ২০ শ্রমিকের। তাদের সন্ধানে চতুর্থদিনের মতো উদ্ধার অভিযান চলছে। নদী জুড়ে নৌ বাহিনীর সদস্যরা জাহাজ দিয়ে রশি বেঁধে র‌্যাকি টেনে খোঁজ করছে নদীর তলদেশ।

উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়, নৌযান শনাক্তকারী বিশেষ জাহাজ অগ্নিশাসকও রয়েছে উদ্ধার অভিযানে। পাশাপাশি বিআইডাব্লিউটিএ’র সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সাইড স্কেন সোনার মাধ্যমে ট্রলারটির অবস্থান শনাক্তের চেষ্টাও চালছে। নৌবাহিনীর ১টি, বিআইডব্লিউটিএ’র ২টি ও ফায়ার সার্র্ভিসের ৩টি ইউনিটের সঙ্গে যৌথভাবে উদ্ধার অভিযানে কাজ করছে জেলা প্রশাসন, নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডেও সদস্যরা।

ট্রলার চালকের অনুপস্থিতি এবং তেলবাহী জাহাজটিকে শনাক্ত না হওয়ায় ট্রলার ডুবির নিদিষ্ট অবস্থানও নিশ্চিত করতে পারছে না উদ্ধারকারীরা।

জানা গেছে, সোমবার কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে ট্রলারে মাটি তুলে ৩৪ জন শ্রমিক নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বক্তাবলী নিয়ে যাচ্ছিল। ট্রলারটি সোমবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে মুন্সীগঞ্জের চরঝাঁপটার মেঘনা নদীতে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি তেলবাহী জাহাজ ট্রলারে ধাক্কা দিয়ে চাঁদপুরের দিকে চলে যায়। এতে ট্রলারটি ডুবে যায়। ট্রলারে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে ১৪ জন সাঁতরে প্রাণে বাঁচলেও ট্রলারটির কেবিনের ভেতরে ঘুমন্ত ২০ শ্রমিকের ভাগ্যে কি হয়েছে এখনও জানা যায়নি। নিখোঁজ শ্রমিকদের অধিকাংশেরই বাড়ি পাবনা জেলায়।

এদিকে, ঘটনা সোমবার দিবাগত রাতের হলেও ট্রলার ডুবির ঘটনাটি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আসে বুধবার। গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান সাদিক জানান, চতুর্থদিনের মতো আজ সকাল থেকে বিআইডব্লিউটিএ ও নৌবাহিনীর এক্সপার্ট টিম পুরো মেঘনা নদী জুড়ে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, দুর্ঘটনার সময় শ্রমিকরা প্রায় সবাই ঘুমিয়ে থাকায় ট্রলারডুবির স্থানটি চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। আর ট্রলারের চালকও নিখোঁজ থাকায় অনুমানের ওপর নির্ভর করে অনুসন্ধানকাজ চালাতে হচ্ছে।

গত কয়েকদিন ধরে মেঘনার দুই তীরে নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনদের চোখে-মুখে লক্ষ করা গেছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। স্বজনরাও মেঘনার বুকে খুঁজে বেড়িয়েছে নিখোঁজ স্বজনদের।

এদিকে, শরীয়তপুরের শিবচর উপজেলার হাজী শুক্কুর হালদারকান্দির মৃত করিম বেপারীর ছেলে ট্রলারের চালক হাবিব বেপারী দুর্ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন।

গজারিয়া থানার ওসি হারুন-উর-রশিদ জানান, বেআইনীভাবে বেপরোয়া গতিতে নৌযান চালিয়ে প্রাণহানি ও দুর্ঘটনা ঘটনানোর দায়ে শুক্রবার রাতে বেচে যাওয়া ট্রলারের যাত্রী শাহআলম বাদী হয়ে ট্রলার চালক হাবিব বেপারী, ট্রলারের মালিক জাকির দেওয়ান ও তেলবাহী জাহাজের চালক (অজ্ঞাতনামা)-কে আসামি করে গজারিয়া থানায় একটি মামলা করেছেন।

তদন্ত কমিটি: ট্রলারডুবির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। ৯ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটির প্রধান মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোবাশ্বেরুল ইসলাম। কমিটির বাকি আট সদস্য হচ্ছেন—ইউএনও মুন্সীগঞ্জ সদর ও গজারিয়া উপজেলা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও গজারিয়া সার্কেল), সংশ্লিষ্ট এলাকার কোস্ট গার্ড কর্মকর্তা, নৌ পুলিশের কর্মকর্তা, বিআইডাব্লিউটিএ কর্মকর্তা, ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা এবং জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত