ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়: ওসিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০১৯, ১৬:২৩

ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়: ওসিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ১৫ লাখ টাকা আদায় করার অভিযোগে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানার সাবেক ওসি (বর্তমান পাঁচলাইশ থানার ওসি) আবুল কাসেম ভূঁইয়া ও পাঁচ পুলিশসহ নয়জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার সকালে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা ও বিশেষ জজ মোহাম্মদ আকবর হোসেন মৃধার আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়।

মামলাটি দায়ের করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির ধর্মবিষয়ক সাবেক সহ-সম্পাদক ও ব্যবসায়ী মো. নুরুল আবছার।

মামলার আসামিরা হলেন- চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের পতেঙ্গা থানার সাবেক ওসি আবুল কাসেম ভূঁইয়া, এসআই প্রণয় প্রকাশ, এসআই (নিরস্ত্র) আবদুল মোমিন, এএসআই তরুণ কান্তি শর্মা, এএসআই কামরুজ্জামান ও এএসআই মিহিরসহ তিন মাদক বিক্রেতা ইলিয়াছ ওরফে গাভী ইলিয়াছ, মো. জসিম ও মো. নুরুল হুদা।

মামলার বিষয়ে বাদীর আইনজীবী মোহাম্মদ মোমিনুর রহমান জানান, আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রামের পরিচালককে ঘটনার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, গত বছর ১ জুন বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মোবাইলে ফোন করে পতেঙ্গা থানার এসআই প্রণয় প্রকাশ ব্যবসায়ী নুরুল আবছারের অবস্থান জানতে চায় এবং বাসা থেকে রাস্তায় এসে দেখা করতে বলেন। ১৫ মিনিট পরই নুরুল আবছার উক্ত স্থানে গেলে স্থানীয় একটি বেকারিতে গিয়ে দুজনে নাস্তা করেন। নাস্তা করার মধ্যেই সেখানে হাজির হন থানার এএসআই তরুণ কান্তি শর্মা, এসআই আবদুল মোমিন, এএসআই কামরুজ্জামান ও এএসআই মিহির। এসময় তারা নুরুল আবছারকে থানায় গিয়ে ওসি আবুল কাসেমের সাথে দেখা করতে বলেন। থানায় যাওয়ার সাথে সাথে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই নুরুল আবছারের কাছ থেকে এএসআই কামরুজ্জামান মোবাইল, গাড়ির চাবি ও টাকা পয়সা নিয়ে নেন। পরে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করে তাকে একটি কক্ষে আটকে রাখেন।

অভিযোগে আরো বলা হয়, পরদিন দুপুরে এসআই আবদুল মোমিন ও এসএসআই মিহির সেই কক্ষে এসে আমাকে বলেন, ‘তুই ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক ব্যবসা করিস। জীবিত থাকতে হলে ৩০ লাখ টাকা দিবি। টাকা দিবি না ৮৮ ধারায় চালান দিবো আর না হয় ইয়াবা দিয়ে ক্রসফায়ারে দিবো। এরপর অন্যান্য কর্মকর্তারাও ৩০ লাখ টাকার জন্য আমাকে মানসিকভাবে চাপ দিতে থাকে এবং ভয়ভীতি দেখায়। এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, কোনো উপায় না দেখে ফুফাতো ভাইয়ের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে এসআই আবদুল মোমিন ও এএসআই কামরুজ্জামানকে দেয়া হয়। এরপরই এসআই প্রণয় প্রকাশ ও এসআই আবদুল মোমিন ৩০ লাখ টাকার অবশিষ্ট ১৫ লাখ দিতে বলেন। অন্যথায় ক্রসফায়ারে মৃত্যু অথবা প্রদর্শিত ইয়াবা দিয়ে আদালতে চালান দেয়ার হুমকি দেন।

বাকি টাকা না দেয়ায় থানার এএসআই তরুণ কান্তি শর্মা বাদী হয়ে গত বছরের ৩ জুন পতেঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ওই দিন দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর প্রায় দুই মাস জেল খেটে গত বছর ২৯ জুলাই জামিনে কারাগার থেকে বের হন ব্যবসায়ী নুরুল আবছার। এনিয়ে তিনি দুদকেও লিখিত অভিযোগ করেন।

তবে অভিযোগের বিষয়ে বর্তমান সিএমপির পাঁচলাইশ থানার ওসি আবুল কাসেম ভূঁইয়া বলেন, নূরুল আবছার পুলিশের তালিকাভুক্ত চিহ্নিত একজন মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা রয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে সারাদেশে মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযান চলাকালে আমরা তাকে গ্রেপ্তার করেছিলাম। তার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত