ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

আলাদা হলো রাবেয়া-রোকেয়া

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১০ আগস্ট ২০১৯, ১৮:১৪

আলাদা হলো রাবেয়া-রোকেয়া

অবশেষে তিন বছর অপেক্ষার পর আলাদা হলো পাবনার জোড়া মাথার শিশু রাবেয়া-রোকেয়া। গত ২ আগস্ট বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরির একদল চিকিৎসক ৩৩ ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দুই বোনকে পৃথক করেন। শনিবার ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তিন বছর বয়সী এই দুই বোনের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান চিকিৎসকরা।

রাবেয়া-রোকেয়ার চিকিৎসায় সমন্বয়কের দায়িত্ব পালনকারী ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় তারা রাবেয়া-রোকেয়াকে আলাদা জীবন দেওয়ার কঠিন চেষ্টায় হাত দেন। আর এই চেষ্টায় তাদের সঙ্গী হয়েছেন হাঙ্গেরির একদল চিকিৎসক।

কেবল হাঙ্গেরির অ্যাকশন ফর ডিফেন্সলেস পিপল ফাউন্ডেশনের (এডিপিএফ) এই চিকিৎসকরই এ জটিল কাজে হাত দিতে রাজি হয়েছিলেন বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকরা জানান, রাবেয়া ইসলাম জেগে উঠেছে, মাকে চিনতে পেরে কোলে উঠতে চেয়েছে। তবে ওর বোন রোকেয়া ইসলাম এখনও অচেতন, তাকে রাখা হয়েছে ভেন্টিলেশনে।

দফায় দফায় ৪৪ ধরনের অস্ত্রোপচারের মধ্যে দিয়ে তাদের আলাদা করার কাজটি শেষ হয়, যার মধ্যে কয়েকটি হয় হাঙ্গেরিতে।

চিকিৎসকরা বলেন, জটিল এসব অস্ত্রোপচার খুবই ঝঁকিপূর্ণ, তবে এখন পর্যন্ত তারা সফল।

এমন কোনো জটিলতার মুখে তাদের পড়তে হয়নি, যা অনুমিত ছিল না। তবে এ পর্যন্ত যে অগ্রগতি হয়েছে তাতে চিকিৎসকরা ‘আশাবাদী’।

রাবেয়া শুক্রবার সকালে চোখ মেলেছে জানিয়ে তাদের মা তাসলিমা খাতুন চোখ মুছেতে মুছতে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ও আম্মু বলে ডেকেছে, কোলে নিতে বলেছে।

এদিকে সামরিক চিকিৎসা মহাপরিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. ফসিউর রহমান জানান, জোড়া মাথার শিশুদের আলাদা করার জন্য বিশ্বে এ ধরনের অস্ত্রোপচার হয়েছে এ পর্যন্ত ১৭টি। তার মধ্যে মাত্র পাঁচজোড়া শিশু এখনও বেঁচে আছে।

তিনি আরো জানান, রাবেয়া-রোকেয়াকে আলাদা করার পর তাদের ত্বক ও টিশু যাতে দ্রুত বেড়ে উঠতে পারে সেজন্য ‘ইমপ্ল্যান্টিং এক্সপান্ডার’ নামের নতুন একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যা বিশ্বে প্রথম।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১৬ জুলাই পাবনার চাটমোহর উপজেলায় মূলগ্রাম ইউনিয়নের শিক্ষক দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় রাবেয়া ও রোকেয়া। বাবা রফিকুল ইসলাম ও মা তাসলিমা খাতুন স্থানীয় অমৃতকুণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।

ডিপি/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত