ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গা: জড়িত দুই দালাল ও ইসির পিয়ন

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২০:০০

ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গা: জড়িত দুই দালাল ও ইসির পিয়ন

অসদুপায়ে রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অপচেষ্টা করলেও তাদের কেউই জাতীয় পরিচয়পত্র পায়নি বলে দাবি করেছে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। তবে অপচেষ্টা করেছে এটি স্বীকার করে সংস্থাটি জানিয়েছে, এই অপকর্মের সাথে চট্টগ্রাম ডবলমুরি উপজেলা নির্বাচন অফিসের পিয়ন জয়নাল আবেদিন ও কক্সবাজারের দুইজন দালাল জড়িত। দালালদের এরই মধ্যে পুলিশে দেয়া হয়েছে আর পিয়নের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও ফৌজদারী মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।

নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সোমবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এনআইডির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম।

এসব দুষ্কৃতিকারীদের দ্বারা ৪৬ জন ব্যক্তির ডাটা পূরণ করে জমা দেয়া হলেও অসম্পূর্ণ ডাটার কারণে তাদের কেউই পরিচয়পত্র পাননি বলে জানিয়েছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) আবদুল বাতেনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে আসা ১১ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গার আঙুলের ছাপ ও তথ্য নিয়ে রোহিঙ্গা সার্ভার প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন কেউ চাইলেই ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে না। বিভিন্ন মাধ্যমে রোহিঙ্গা নাগরিকের ভোটার হওয়ার বা এনআইডি পাওয়ার যে তথ্য এসেছে, তারা চেষ্টা করেছে। কিন্তু ভোটার হতে পারেনি।

তিনি জানান, ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় বিশেষ কার্যক্রম শেষ করে সার্ভারে তথ্য আপলোড করা হয়। এরপর ফিঙ্গার প্রিন্ট ম্যাচিং করে যারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হওয়ার যোগ্য, কেবল তাদেরই অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

সাইদুল ইসলাম বলেন, ১১ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গার বায়োমেট্রিক আমাদের কাছে আসে। আমার রোহিঙ্গা সার্ভার প্রস্তুত করেছি। এখন যাদের তথ্য নেয়া হচ্ছে, তাদের আঙুলের ছাপ ও তথ্য প্রথমেই রোহিঙ্গা সার্ভারে ম্যাচ করে দেখা হচ্ছে। কারো তথ্য এই সার্ভারে ম্যাচ করলে মূল সার্ভারে আর যাওয়াই হবে না। এছাড়া খসড়া প্রকাশের আগে আমরা ম্যাচিং করবো। কাজেই তারা ভোটার হতে পারবে না।

তিনি বলেন, লাকী বেগম নামের একজন স্মার্টকার্ড আনতে গেলে মূল সার্ভার থেকে ধরা পড়ে। জিজ্ঞাসাবাদে চিহ্নিত হয়েছে তার এনআইডি সঠিক নয়। তাকে বৈধ এনআইডি দেয়া হয়নি। তাই তাকে পুলিশে দেয়া হয়। তারপর আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করি। তাদের মাধ্যমে সঠিকভাবে প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন হয়েছে কিনা এসব দেখি। এতে ৪৬ জন ব্যক্তির ডাটা অসম্পূর্ণ পাওয়া যায়। কারো ফিঙ্গারপ্রিন্ট ঠিক মত নেই, কারো ফরম সঠিকভাবে আপলোড করা হয়নি। এটা আমরাই চিহ্নিত করেছি।

এনআইডি মহাপরিচালক বলেন, চট্টগ্রামের ৩২টি এলাকাকে আমরা বিশেষ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছি। বিশেষ এলাকার জন্য বিশেষ ফরম পূরণ করা হয় এবং সার্ভারে তথ্য অন্তর্ভুক্তির জন্য বিশেষ কমিটির সুপারিশের প্রয়োজন পড়ে। উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জেলায় জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক করে এসব বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এই অপচেষ্টার সঙ্গে আমরা কক্সবাজারে দু’জন দালালের সম্পৃক্ততা পাই। তাদের পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া আমাদের একজন পিয়নের সঙ্গে জড়িত আছে।

৪৬ জনের ভোটার হওয়ার বিষয়ে সাইদুল ইসলাম বলেন আরো বলেন, এটি অপচেষ্টা। এখনো ভোটার হতে পারেনি। চেষ্টাতো করছে। কিন্তু সফল হতে পারবে না। ৪৬ জনের কেউ এনআইডি পায়নি। দক্ষতার সঙ্গে কাজটি সম্পন্ন করা হচ্ছে। অপচেষ্টায় কেউই সফল হতে পারবে না। আমরা স্বচ্ছ ভোটার তালিকার জন্য বদ্ধপরিকর। বিদেশি বা রোহিঙ্গা যাতে না হতে পারে, সেজন্য বদ্ধ পরিকর। আমরা অত্যন্ত সচেতন। কোনো রোহিঙ্গা বা বিদেশিকে অন্তর্ভুক্ত হতে দেবো না। যে স্ট্যাটাসের হোক, যে সংগঠনের হোক অপচেষ্টাকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/জেডআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত