ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

চুক্তি হলে আরো বেশি পানি পাবে ভারত

চুক্তি হলে আরো বেশি পানি পাবে ভারত
ফেনী নদীর ওপারে ভারত, এপারে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় সফরে ফেনী নদীর উজানে ভারতকে ১.৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহারের সম্মতি দেয়া নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আন্তঃসীমান্ত নদী হিসেবে ভবিষ্যতে এ নদী থেকে আরো বেশি পানি পাবে ভারত। যৌথ নদী কমিশন সূত্র জানিয়েছে, ভবিষ্যতে অভিন্ন সাতটি নদীর পানি বণ্টনের চুক্তির মধ্যে ফেনী নদীর পানির ভাগাভাগির বিষয়টিও আছে।

ফেনী নদীটি একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। বাংলাদেশের সরকারি তথ্যে ফেনী নদীর উৎপত্তি খাগড়াছড়িতে এবং এর দৈর্ঘ্য ৮০ কিলোমিটার। উৎপত্তির পর বাংলাদেশ ভারত সীমান্তরেখা বরাবর ভাটিতে এ নদী বঙ্গোপসাগরে এসে পতিত হয়েছে।

তবে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনে এ নদী সম্পর্কে যে তথ্য তাতে এর দৈর্ঘ্য ১৪০ কিলোমিটার এবং দু'দেশের সীমান্তরেখায় এ নদী ৯৪ কিলোমিটার পর্যন্ত আর বাংলাদেশ অংশে ঢোকার পর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত এর দৈর্ঘ্য ৪৬ কিলোমিটার।

যৌথ নদী কমিশন বাংলাদেশের সদস্য কে এম আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ফেনী নদীর যে পানিবণ্টন চুক্তি সেটি এখনো প্রক্রিয়াধীন আছে। এটার বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত যাচাই বাছাই হচ্ছে এবং খুব শীঘ্রই ফেনী নদীর পানি বণ্টন চুক্তি সম্পাদন। সে সময় এই ১.৮২ কিউসেক পানি তাদের প্রাপ্য পানি থেকে সমন্বয় করা হবে। এটা জাস্ট মানবিক কারণে শহরে খাবার পানি সরবরাহের জন্য করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক নদী হিসেবে যে পানিবণ্টন চুক্তি এটা আসলে এই চুক্তি নয়।’

ভারত বাংলাদেশ অভিন্ন ৭টি নদীর পানি বণ্টন চুক্তির মধ্যে থাকবে ফেনী নদীর পানি বণ্টনের বিষয়টি। এর মানে ভবিষ্যতে এ নদীর থেকে আরো বেশি পানি পাবে ভারত। ভারত ফেনী নদীর অর্ধেক পানি দাবি করেছিল। কিন্তু এ নদীর ৬০ ভাগ পানির অধিকার বাংলাদেশের।

এবার যে ফেনী নদীর পানি চুক্তি হলো এ প্রসঙ্গে যৌথ নদী কমিশন সূত্রে যানা যায়, ২০১০ সালে যৌথ নদী কমিশনের ৩৭তম বৈঠকে সাবরুম শহরের মানুষের খাবার পানি সরবরাহের জন্য ১.৮২ কিউসেক পানি উত্তোলনের সিদ্ধান্ত ছিল। ২০১২ সালে কারিগরি কমিটির বৈঠকে ৭টি শর্তসাপেক্ষে খাবার পানি সরবরাহের জন্য ‘লো লিফ্ট’ পাম্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ২০১৯ সালের অগাস্টে ঢাকায় সচিব পর্যায়ে বৈঠকে বাংলাদেশ এ প্রতিশ্রুতি রক্ষার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ অক্টোবর ভারতে শীর্ষ বৈঠকে এ সমঝোতা স্মারক সই হয়।

ওয়ারপো’র সাবেক মহাপরিচালক ম ইনামুল হক বলেন, ১.৮২ কিউসেক পানি দেয়ার চুক্তি হয়েছে সেটা তেমন কোনো ক্ষতি করবে না। কিন্তু এখনই যে পাম্পগুলো ভারতের অংশে বসানো আছে তার প্রতিটির ন্যূনতম ক্ষমতা দুই কিউসেক।

‘২০ বছর আগে ফেনী নদীতে শুষ্ক মৌসুমে ১২০ কিউসেক পানির প্রবাহ ছিল সেটা এখন ৫০ কিউসেকে নেমে এসেছে। এর কারণ তারা উজানে পাম্প দিয়ে পানি প্রত্যাহার করছে। যদি এখন ১.৮২ কিউসেক নেয়া হয় তাহলে অন্যান্য যে ৩৬টি পাম্পে তারা পানি উঠাচ্ছে তার কী হবে?’- জানতে চাইলে যৌথ নদী কমিশনের সদস্য কে এম আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অফিশিয়ালি এ ধরনের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নাই। তারা যদি তুলে থাকে সেটা হতে পারে। আমরাও আমাদের অংশে প্রয়োজনে পানি তুলে থাকি। এটা ঠিক একতরফা না। উভয়ের প্রয়োজনে উভয়ে তুলে থাকে। এটা চুক্তি বহির্ভূত যেসকল নদীগুলো আছে সেখানে হয়ে থাকে। সেজন্য ভবিষ্যতে যাতে সেটা নয় হয় সেজন্য সাতটি আন্তঃ সীমান্ত নদীর পানি বণ্টন চুক্তি হতে যাচ্ছে তখন এগুলো সমাধান হয়ে যাবে।’ খবর: বিবিসি

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত