ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

আসল বাবা কে জানেন না প্রাথমিক শিক্ষিকা

আসল বাবা কে জানেন না প্রাথমিক শিক্ষিকা

চট্টগ্রামের বাঁশখালীর একজন শিক্ষকের শিক্ষা সনদে বাবার নাম লেখা আহমুদুর রহমান ফারুকী। কিন্তু তাঁর নিয়োগপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্রে বাবার নাম লেখা মাহমুদুর রহমান ফারুকী। ১০ বছর ধরে তিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে কর্মরত। এই শিক্ষক হলেন বাঁশখালী উপজেলার পুঁইছড়ি মকছুদা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছৈয়দা মোবারেকা সোলতানা।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জানতে চাইলে এই শিক্ষক বলেন, ‘আমার প্রকৃত বাবা কে আমি এখনো জানি না। আমার মা রাহেনা বেগম বলেছেন, আমার প্রকৃত বাবা আহমুদুর রহমান ফারুকী। আমি তাকে বাবা বলে ডাকি। সেই হিসেবে মাদরাসার প্রতিটি সার্টিফিকেটে আমার বাবার নাম আহমুদুর রহমান ফারুকী। শিক্ষক নিয়োগপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্রে কীভাবে বাবার নাম মাহমুদুর রহমান ফারুকী হলো তা জানি না।’

জানা গেছে, আহমুদুর রহমান ফারুকী ও মাহমুদুর রহমান ফারুকী আপন ভাই। আহমুদুর রহমান একজন মুক্তিযোদ্ধা। অন্যদিকে তার ভাই মাহমুদুর রহমান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।

সম্প্রতি দাখিল সনদে বাবার নাম পরিবর্তন করে মাহমুদুর রহমান ফারুকী করার জন্য সংশ্লিষ্ট মাদরাসার অধ্যক্ষের মাধ্যমে ঢাকা মাদরাসা বোর্ডে আবেদন করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ছৈয়দা মোবারেকা সোলতানা ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ মে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পান। তিনি ছনুয়া তোতকখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর বদলি হয়ে পুঁইছড়ি মকছুদা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন।

সোলতানা ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে ছনুয়া খুদুকখালী হোসাইনিয়া মাদরাসা থেকে দাখিল পাস করেন। মাদরাসার প্রতিটি সনদে তার বাবার নাম রয়েছে আহমুদুর রহমান ফারুকী। মাদরাসার শিক্ষকরাও জানেন তিনি আহমুদুর রহমান ফারুকীর মেয়ে। কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক পদে নিয়োগপত্রে তার বাবার নাম লেখা হয়েছে চাচা মাহমুদুর রহমান ফারুকীর। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে করা তার জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানায় উল্লেখ আছে—বাবা : মাহমুদুর রহমান ফারুকী, মাতা : রাহেনা বেগম, হাজি অলি মিয়া সিকদারপাড়া, খুদুকখালী, ছনুয়া, বাঁশখালী। নম্বর-১৫২৭৭৩২০৪১৬৯।

জানতে চাইলে মাহমুদুর রহমান ফারুকী বলেন, ‘সোলতানা আমার মেয়ে। আমি একজন স্কুলশিক্ষক। জেলা শিক্ষা অফিস ও মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে শিক্ষক নিয়োগপত্রে পিতার জায়গায় আমার নামটি বসিয়েছি। সার্টিফিকেটেও নাম পরিবর্তনের জন্য মাদরাসা অধ্যক্ষকে ম্যানেজ করে ঢাকা মাদরাসা বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই সার্টিফিকেটে নাম পরিবর্তন হয়ে আসবে। আমার সার্টিফিকেটেও এ রকম জটিলতা ছিল। সব কিছু ম্যানেজ করে আমি অবসরে গিয়ে পেনশন উত্তোলন করেছি। এটা কোনো সমস্যা নয়।’

কিন্তু আহমুদুর রহমান ফারুকী বলেন, ‘এটা বড় ধরনের জালিয়াতি। শিক্ষিকা ছৈয়দা মোবারেকা সোলতানা আমার মেয়ে। আমার ভাই জালিয়াতি করে নিয়োগপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্রে তার নাম বসিয়েছে।’

বাঁশখালী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এ ধরনের জালিয়াতির বিষয়টি মন্ত্রণালয় দেখবে। আমার দেখার বিষয় না। তার পরও বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’

  • সর্বশেষ
  • পঠিত