ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার বর্ণনা দিল প্রত্যক্ষদর্শী

  ‏ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০১৯, ১৩:৫২

ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার বর্ণনা দিল প্রত্যক্ষদর্শী

ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে ‏ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলস্টেশনে সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে বড় ধরনের ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী ১৬ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক যাত্রী।

চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তনগর ট্রেন তূর্ণা নিশীথা এবং সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী আন্তনগর উদয়ন এক্সপ্রেসের মধ্যে সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. জাকের হোসেন চৌধুরী বলেন, তূর্ণা নিশীথা ট্রেনটিকে আউটার ও হোমে মেইন লাইনে থামার জন্য সিগন্যাল দেওয়া হয়। উদয়ন ট্রেনটিকে মেইন লাইন থেকে ১ নম্বর লাইনে আসার সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল। সেই হিসেবে উদয়ন ট্রেন ১ নম্বর লাইনে প্রবেশ করে। এ সময় নিশীথা ট্রেনের চালক সংকেত অমান্য করে উদয়ন ট্রেনের ওপর উঠে গেলে দুর্ঘটনা ঘটে।

রেলওয়ে স্টেশন, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা গতকাল রাত ২টা ৪৮ মিনিটে শশীদল রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করে মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের দিকে রওনা হয়। মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার ট্রেনটিকে মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশের আগেই আউটারে সিগন্যাল দেয়। প্রত্যক্ষর্শীরা বলছে মাত্র ৩০ সেকেন্ড আগে উদয়ন ঢুকলে কিংবা ৩০ সেকেন্ড পরে তূর্ণা ঢুকলে এই বড় দুর্ঘটনা ঘটতো না।

অপরদিকে সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস কসবা রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশকালে স্টেশনমাস্টার ট্রেনটিকে মেইন লাইন ছেড়ে দিয়ে ১ নম্বর লাইনে আসার সংকেত দেন। ওই ট্রেনের চালক ১ নম্বর লাইনে প্রবেশ করেন। ছয়টি বগি প্রধান লাইনে থাকতেই অপর দিক থেকে আসা তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের চালক সিগন্যাল অমান্য করে দ্রুত গতিতে ট্রেন চালান। এ সময় উদয়ন ট্রেনের মাঝামাঝি তিনটি বগির সঙ্গে তূর্ণা নিশীথার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে উদয়ন ট্রেনের তিনটি বগি দুমড়েমুচড়ে যায়। ফলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

এদিকে, দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে রেল সচিব মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন কমিটি গঠন বিষয়ে বলেন, রেলওয়ের পক্ষ থেকে দুটি ও জেলা প্রশাসন থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রেলের দুটি কমিটির একটিতে প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী (পূর্বাঞ্চল) মিজানুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। চার সদস্যের অপর কমিটির প্রধান করা হয়েছে চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা নাসির উদ্দিনকে। আর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিতু মরিয়মকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।

দুর্ঘটনার ব্যাপারে একটি ট্রেনের সিগন্যাল অমান্য করার যে অভিযোগ উঠেছে সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রেল সচিব বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের আগে কিছু বলা যাচ্ছে না।

তবে চালক সিগন্যাল যদি অমান্য না করে থাকেন তাহলে এই দোষ সম্পূর্ণ গিয়ে পড়বে রেলওয়ে স্টেশন মাস্টারের ওপর। তবে তদন্তের পূর্বে নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত