ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘মডেল পৌরসভা গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি’

  কালীগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০১৯, ২২:২৫

‘মডেল পৌরসভা গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি’
আশরাফুল আলম। ছবি: সংগৃহীত

কালীগঞ্জ পৌরসভায় বর্তমানে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কালীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুল আলম। এর আগে আশরাফুল আলম কালীগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন এবং প্যানেল মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০১৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর কালীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মকছেদ আলী বিশ্বাস মৃত্যুবরণ করলে ৬ মাস ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন আশরাফুল আলম। এরপর এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ২৮ তারিখে অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বিজুকে হারিয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন আশরাফুল আলম।

বয়সে তরুণ মেয়র আশরাফুল আলম নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই কালীগঞ্জ পৌরসভাকে মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে অনেক পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কিন্তু তারপরেও রয়ে গেছে বেশ কিছু সমস্যা। বৃষ্টি হলেই শহরে জমে পানি, নেই শিশুদের কোনো পার্ক, শহরে নিয়ন্ত্রণহীন ইজিবাইক চলাচলে যানজট, বাস টার্মিনাল থাকা সত্ত্বেও যাত্রীবাহী বাস মহাসড়কের উপর যাত্রী উঠানামা করা এসব নিয়ে অভিযোগ রয়েছে কালীগঞ্জ পৌরবাসীরও।

কালীগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বাবলু রহমান জানান, বৃষ্টি হলেই শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পানি জমে যায়। ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই। এ সকল সমস্যা সমাধানে কালীগঞ্জ পৌরসভার পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে আশরাফুল আলম বলেন, আমি নির্বাচনের সময় জনগণকে কোন মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেইনি। মডেল পৌরসভা গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। সুন্দর পরিকল্পিত শহর গড়ে তুলতে আমি চেষ্টা করছি। আমি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর কালীগঞ্জ শহরের যানজট নিরসনে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। যা সর্বজন গ্রহণযোগ্য হয়েছে। আমি কালীগঞ্জ শহরকে মনের মতো করে সাজাবো।

মেয়র বলেন, কালীগঞ্জ পৌরসভা সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত। এখানে সরকারি নির্ধারিত ফিস ছাড়া কোন বাড়তি টাকা পৌরবাসীর কাছ থেকে নেওয়া হয় না। এছাড়া পৌরসভার কোন কর্মচারীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির কোন অভিযোগ আমি পাইনি। এখানে লটারির মাধ্যমে পৌরসভার কাজের টেন্ডার দেওয়া হয়।

পৌরবাসীর অভিযোগের বিষয়ে মেয়র বলেন, শহরে বৃষ্টি হলে পানি জমে। এ জন্য শহরে ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। শিশুদের জন্য ইতিমধ্যে একটি বিনোদনমূলক পার্ক স্থাপনের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। শহরের ইজিবাইক চলাচল খুব শীঘ্রই নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে আসবে। কালীগঞ্জ মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাথে কথা বলে অতি দ্রুত যাত্রীবাহী বাস গুলোকে টার্মিনালে দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করা হবে।

মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স উল্লেখ করে তিনি বলেন, কালীগঞ্জ শহরটি এই অঞ্চলের মাদকের রুট হিসেবে পরিচিত। বর্তমান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের সহযোগিতায় মাদক সমস্যাটা এখন আর আগের মতো নেই। আমি নিজেও মাদক ব্যবসায়ীদের গুড়িয়ে দিয়েছি। মাদকের বিরুদ্ধে আমার শক্ত অবস্থান রয়েছে। মাদকমুক্ত শহর গড়তে আমি বদ্ধ পরিকর।

মেয়র আশরাফুল আলম বলেন, ফজরের নামাজ পড়ে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডে যাই। পৌরবাসীর বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। প্রতিনিয়ত দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের অনুদান দিয়ে যাচ্ছি। বাল্যবিবাহ রোধে সভা-সেমিনার অব্যাহত রেখেছি। প্রতি সপ্তাহে হাসপাতালের রোগীদের খোঁজখবর নিতে সেখানে যাই আমি।

দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন সম্পর্কে মেয়র বলেন, এর মাধ্যমে দলীয় শৃঙ্খল মজবুত হয়েছে। দলের মধ্যে চেইন ইন কমান্ড ভালোভাবে মেনে চলা হচ্ছে।

সরকারের উন্নয়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ঝিনাইদহ-৪ আসনে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কালীগঞ্জের এই আসনে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, নতুন রাস্তা নির্মান, বিদ্যুৎ সংযোগসহ বিভিন্ন উন্নয়ন হয়েছে যা বিগত কোন সময়ে আর হয়নি।

প্রসঙ্গত, ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা সদরে ১৯৯০ সালে ১৪ মার্চ পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। যাহার আয়তন ১৫.৮৩ বর্গ কি. মি। কালীগঞ্জ পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন আব্দুল মান্নান। কালীগঞ্জ পৌরসভা শহরের মধ্যে দিয়ে ঢাকা খুলনা মহাসড়ক এবং মেহেরপুর খুলনা মহাসড়ক বিদ্যমান। বর্তমানে এর জনসংখ্যা প্রায় ৪৭ হাজার। ৯টি ওয়ার্ডের সমন্বয়ে কালীগঞ্জ পৌরসভা গঠিত। মোট ভোটার সংখ্যা ৩৮ হাজার ৫ শ ৮৮ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১৮ হাজার ৬ শ ৬ ও পুরুষ ভোটার ১৯ হাজার ৯ শ ৮২ জন। পৌরসভার নিজস্ব সম্পত্তি আছে ১ একর ৪ শতক। খুলনা মেহেরপুর মহাসড়কের পাশে কালীগঞ্জ পৌরসভা অফিস ভবন অবস্থিত। কালীগঞ্জ পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণির।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত