ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

রাজবাড়ীতে পেঁঁয়াজ বীজ উৎপাদন করে লাভবান কৃষক

  রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২১ মে ২০১৯, ১২:২৮  
আপডেট :
 ২১ মে ২০১৯, ১২:৩৭

রাজবাড়ীতে পেঁঁয়াজ বীজ উৎপাদন করে লাভবান কৃষক

দেশের চাহিদার ১৪ ভাগ পেঁঁয়াজ রাজবাড়ীতে উৎপন্ন হয়ে থাকে। আর মসলা জাতীয় খাদ্যপণ্য হিসেবে পেঁঁয়াজের চাহিদা অন্যতম। তাই দেশের বাজারে পেঁঁয়াজের ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে রাজবাড়ীর কৃষকেরা পেয়াজসহ পেঁঁয়াজ বীজের আবাদ বাড়িয়েছেন।

বাজার দর অধিক হওয়ায় পেঁঁয়াজের এই বীজকে কালো সোনা হিসেবে আক্ষায়িত করা হয়ে থাকে। রাজবাড়ীতে প্রতি বছরের মত এবছরও পেঁঁয়াজ বীজের চাষ করে লাভবান হয়েছে কৃষকেরা। একারণে রাজবাড়ীতে প্রতিবছর পেঁঁয়াজের বীজ আবাদ বেশি হচ্ছে।

জানা যায়, রাজবাড়ী সদর উপজেলা, পাংশা, বালিয়াকান্দি, গোয়ালন্দ ও কালুখালীতে এবছর পেঁঁয়াজ বীজ আবাদ হয়েছে ৩ শত ৫ হেক্টর জমিতে। গতবছর আবাদ হয়েছিল ২ শত ৯০ হেক্টর। এ বছর যা গত বছরের তুলনায় ১৫ হেক্টর বেশি।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, পেঁঁয়াজ বীজের চাষ করে রাজবাড়ীর কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন বলে কৃষকেরা পেঁঁয়াজ বীজের চাষে ঝুঁকছেন।

রাজবাড়ী সদরের দ্বাদশী ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের কৃষক লিটন শেখ বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, তিনি প্রতি বছর পেঁঁয়াজ বীজের চাষ করেন। এবছর তিনি চার বিঘা জমিতে বীজের চাষ করেছেন। চাষ, সার বীজ এবং কীটনাশকসহ সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। এই চার বিঘা জমি থেকে তিনি ৫ থেকে ৬ মণ পেঁঁয়াজ বীজ পাবেন বলে আশা করছেন।

এই বীজ বিক্রি করে তিনি ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন এবং সব বাদ দিয়ে তিনি ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা বীজ বিক্রি করে লাভ করতে পারবেন। গত বছর তিনি পেঁঁয়াজ বীজ চাষ করে ভালো লাভবান হয়েছেন। এজন্য এবছর ভালো লাভবানের আশায় বীজের চাষ বাড়িয়েছেন। গত বছর ২ বিঘা জমিতে চাষ করেছিলেন আর এবছর ৪ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন।

অন্য আর এক চাষী বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, এবছর পেঁঁয়াজ বীজের ফলন ভালো হয়েছে। কোন ধরনের পরিবেশের বিপর্যয় না হলে শেষ পর্যন্ত ভালো ফলনের আশা করছেন তিনি। বর্তমানে প্রতি কেজি বীজের বাজার দর তিন থেকে চার হাজার টাকা। আর মণ হিসেবে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকার মত।

প্রতি বিঘা জমি থেকে ফলন পাওয়া যায় প্রায় দুই থেকে আড়াই মণ। প্রতি মণ বীজ ১ লাখ টাকা থেকে দেড় লাখ টাকা বিক্রী করে থাকেন চাষীরা। এই চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেক কৃষক। তাই জেলায় পেঁয়াজ এবং বীজের চাষ করেন ৬ হাজারেরও বেশি কৃষক।

কৃষকেরা আরো জানান, পেঁয়াজ বীজের উচ্চমূল্য এবং এটি লাভজনক ফসল হওয়ায় তারা দিনদিন বীজের চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তাছাড়া এই বীজ চাষ করে কৃষকেরা বীজের সাথে ক্ষেত থেকে যে পেঁয়াজ পান তাতে পেঁয়াজ বীজের চাষের খরচ হয় তা উঠে আসে।

রাজবাড়ী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ বাহাউদ্দিন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, এবছর রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলায় ৮৬ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজ আবাদ হয়েছে। এ বীজ চাষ করে কৃষকের বিনিয়োগের ৩/৪ গুণ লাভ হয়ে থাকে। তবে কাল বৈশাখী ও প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে পেঁয়াজ বীজ ঝুঁকিতে থাকে।

শতক প্রতি দুই কেজি পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন হয়ে থাকে আর প্রতি কেজি বীজ ৪ হাজার টাকায় বাজারে বিক্রি হয়ে থাকে। সেই হিসেবে শতক থেকে ৮ হাজার টাকার মত বীজ বিক্রি করা যায়। বীজ চাষে কৃষকদের এসএমই চাষী হিসেবে উদ্যোক্তা হিসিবে গড়ে তোলা হয়েছে। স্থানীয় বাজারে বীজের চাহিদা কৃষকরা যেন মিটাতে পারেন সেই এবং তারা অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হতে পারেন কারণে সরকারের প্রচেষ্টা রয়েছে বলে জানান তিনি।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, রবি মৌসুমে পেঁয়াজ আবাদের সাথে সাথে পেঁয়াজ বীজেরও চাষ করে থাকেন এলাকার কৃষকরা। বর্তমানে মাঠে পরিপক্ক অবস্থায় বীজ রয়েছে। তবে কাল বৈশাখী ঝড়ে ক্ষতি না হলে বীজের উৎপাদন ভালো হবে বলে আশা করেন তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/টিপিবি
  • সর্বশেষ
  • পঠিত