ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

পরিবর্তন আসছে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন গ্রেডে

পরিবর্তন আসছে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন গ্রেডে

সমন্বিত নতুন নিয়োগ বিধি তৈরি করার পরিকল্পনা করছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন এই বিধি তৈরি পর প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন গ্রেডে পরিবর্তন আনা হবে। নতুন বিধি চূড়ান্ত হবে অক্টোবরের আগেই। বিধি চূড়ান্ত হলেই বিধির আলোকে গ্রেড পরিবর্তন করবে প্রাথমিক ও মন্ত্রণালয়। খবর: বাংলা ট্রিবিউন

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রাথমিক পরিকল্পনায় জানা গেছে, প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড হবে ১২তম। জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘২৯ অক্টোবরের মধ্যেই সমন্বিত বিধিমালাটি শেষ করতে পারবো। তখন শিক্ষকদের গ্রেড ও পদোন্নতি নিয়ে কোনও সমস্যা থাকবে না।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ‘প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেজেটেড অফিসার ও নন-গেজেটেড কর্মচারীর নিয়োগ বিধিমালা, ১৯৮৫ সংশোধনের পর কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালার সমন্বয়ে একটি নতুন বিধিমালা করা হবে। এক বিধিমালার আওতায় শিক্ষক ও সব কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হবে। পিয়ন থেকে শুরু হবে প্রাথমিক শিক্ষার মহাপরিচালক পর্যন্ত একটি বিধিমালার আওতায় নিয়োগ দেয়া হবে।

আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিকের শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের জন্য দুটি নিয়োগ বিধিমালা রয়েছে। একটি শিক্ষকদের জন্য, আরেকটি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য। এ দুটিকে এক করার জন্য আমরা ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছি। ১৯৮৫ সালের নিয়োগ বিধিমালাটির (সংশোধন) অনুমোদন হলে ওই দুটি এক করে একটি নিয়োগ বিধিমালা করবো। শিক্ষকদের জন্য আলাদা আর কর্মকর্তাদের জন্য আলাদা নয়, একটিই হবে। আশা করছি ২৯ অক্টোবরের মধ্যেই সমন্বিত বিধিমালাটি শেষ করতে পারবো। শিক্ষকদের গ্রেড ও পদোন্নতি নিয়ে কোনও সমস্যা থাকবে না।’

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেন, ‘প্রস্তাবনা তৈরি করেছি। এমএলএস থেকে মহাপরিচালক পর্যন্ত একটা নিয়োগ বিধির আওতায় সবার জন্য ক্যারিয়ার প্ল্যান করা হচ্ছে। এটি মন্ত্রণালয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা চলছে। শিগগিরই এটি জনপ্রশাসনে পাঠানো সম্ভব হবে। দশম গ্রেডে শিক্ষকদের নেওয়ার জন্য প্রস্তাবনা রয়েছে। ’

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কাসেম বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘ দিনের দাবির পর দুই বিধিমালা এক করে প্রধান শিক্ষকদের দশম, এবং সহকারী শিক্ষকদের ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর নতুন করে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদের প্রস্তাব করা হয়েছে ১১তম গ্রেড।’

বর্তমান কাঠামোতে প্রশিক্ষণ পাওয়া প্রধান শিক্ষকরা ১১তম গ্রেডে এবং প্রশিক্ষণবিহীন প্রধান শিক্ষকরা ১২তম গ্রেডে বেতন পান। আর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডে ১০২০০-২৪৬৮০ টাকা এবং প্রশিক্ষণবিহীন সহকারী শিক্ষকরা ১৫তম গ্রেডে ৯৭০০-২৩৪৯০ টাকা বেতন পান। এই বেতন পরিবর্তনে দীর্ঘ দিন থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা আন্দোলন করে আসছিলেন।

অবশেষে গত ৯ ফেব্রুয়ারি সহকারী শিক্ষকদের ১৪ থেকে একধাপ বাড়িয়ে ১৩তম গ্রেড নির্ধারণ করে আদেশ জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। আদেশের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন সব শিক্ষকই ১৩তম গ্রেডে বেতন পাবেন। নতুন এই বেতন গ্রেডে সহকারী শিক্ষকদের বেতন ক্রম হবে ১১০০০-২৬৫৯০ টাকা।

কিন্তু বেতন গ্রেড বাড়ালেও নিম্নধাপে নির্ধারিত সহকারী শিক্ষকদের বেতন ফিক্সেশনে কমে যায়। সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডের দাবি থাকলেও তাদের দেওয়া হয় ১৩তম গ্রেড। এতে নিম্নধাপে মূল বেতন ফিক্সেশন করলে উল্টো বেতন কমে যাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতির শিকার হবেন লাখ লাখ শিক্ষক। কারণ বেশিরভাগ শিক্ষকই ইনক্রিমেন্ট পেয়ে আগে থেকে ১৩ গ্রেডের কাছাকাছি বা বেশি বেতন পাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে গত ২৮ জুলাই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৩তম গ্রেডের নিম্নধাপের সহকারী শিক্ষকদের একধাপ ওপরে বেতন নির্ধারণের প্রস্তাব করে অর্থ বিভাগে।

সর্বশেষ গত ২৫ আগস্ট এ উচ্চধাপে বেতন নির্ধারণের ফাইল অনুমোদন দিয়েছে অর্থ বিভাগ।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত