ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রশ্ন ফাঁস: নানা নাটকীয়তার পর শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২২, ১৭:৪৬  
আপডেট :
 ২৫ জুলাই ২০২২, ১৯:৫২

প্রশ্ন ফাঁস: নানা নাটকীয়তার পর শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাসের ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে শিক্ষা কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর হালদারের (মিল্টন) নাম ঘুরে ফিরে আসলেও নির্বিঘ্নে অফিস করছিলেন তিনি। নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে গতকাল রোববার রাতে রাজধানীর সেগুন বাগিচা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

চন্দ্র শেখর হালদার ৩১তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার।

ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহাদত হোসেন সুমা সোমবার বলেন, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চন্দ্র শেখর হালদার মাউশির প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। সর্বশেষ একজন বিসিএস ক্যাডারসহ ৬ জন গ্রেপ্তার হলেও এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় গোয়েন্দা সংস্থা তার নাম প্রকাশ করেনি।

খোদ শিক্ষাভবনের কর্মকর্তা প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার ঘটনায় শিক্ষাভবনে অসস্তি বেড়েছে। অন্যদিকে শিক্ষা কর্মকর্তাদের দাবি, প্রশ্ন ফাঁসে শুধু চন্দ্র শেখর হালদার নয় তার উপরেও রাঘব বোয়াল এই কর্মকাণ্ডে জড়িত। তবে তারা হয়তো ধরাছোয়ার বাইরেই থেকে যাবেন।

যেভাবে সন্দেহের নিশানা হলেন চন্দ্রশেখর হালদার

অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে রাজধানীর ৬১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়। ৫১৩টি পদের জন্য পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ৮৩ হাজার। রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালে প্রশ্নপত্র ফাঁস করার অভিযোগে সুমন জোয়ার্দ্দার নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

অন্যদিকে এই কেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন চন্দ্রশেখর হালদার। তার সঙ্গী ছিলেন মাউশির কর্মচারী বেলাল। তবে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কিভাবে ও কখন ফাঁস হয়েছে তা নিয়ে অনেকের মধ্যেই মতভেদ রয়েছে।

দায়িত্বশীল একটি সূত্র বাংলাদেশ জার্নালকে জানায়, নিয়ম অনুসারে একটি পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্ব একজন নির্বাচনী প্রিজাইডিং কর্মকর্তার মতো হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে ওএমআর পত্র ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে জমা দিতে হয়। এরপর আনুসাঙ্গিক যা থাকে তা মূল পরিচালনা কেন্দ্রে জমা দেয়ার পর সেখান থেকে ওই কর্মকর্তাকে রিলিজ করা হয়। এর মধ্যে কিছু হলে তার দায়ভার সম্পূর্ণ কর্মকর্তার উপর বর্তায়।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাউশির ওই শিক্ষা কর্মকর্তার প্রশ্নপত্র নিয়ে রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ কেন্দ্রে যাওয়ার কথা ছিল। তিনি অ্যাম্বুলেন্সে করে প্রশ্নপত্র নিয়ে যাওয়ার পথে তা ফাঁস করেন। পরে চক্রের সদস্যরা প্রশ্নপত্র সমাধান করে নির্ধারিত চাকরি প্রার্থীদের মুঠোফোনে পাঠিয়েছিলেন।

এদিকে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ওএমআর জমা দেয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ছিল চন্দ্র শেখরের। কিন্তু তিনি ওই গাড়িতে না গিয়ে একটি রিকশায় সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে যান। এর কিছুক্ষণ পর ওএমআর বহনকারী গাড়িটি শিক্ষাবোর্ডে উপস্থিত হয়। সূত্রের দাবি ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করলে তা জানা যাবে।

এই বিষয়ে একাধিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সঙ্গে কথা হয় বাংলাদেশ জার্নালের। তারা দাবি করেন তিনি একাধিক মুঠোফোন ব্যবহার করতেন। প্রশ্নফাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আসায় তিনি সবগুলো ফোন নষ্ট করেছেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ডিবির তদন্তে তার নাম থাকলেও দু মাস পর আইনের আওতায় আসলেন চন্দ্র শেখর হালদার ।

এর আগে পটুয়াখালীর খেপুপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক সাইফুল ইসলামকে রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সাইফুলের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর টিকাটুলী ও ওয়ারী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩৪তম বিসিএসের শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা ও পটুয়াখালী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক রাশেদুল ইসলাম, মাউশির উচ্চমান সহকারী আহসান হাবিব ও অফিস সহকারী নওশাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বাংলাদেশ জার্নাল/একে/এমএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত