ঢাকা, বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

ফেঁসে যাচ্ছেন সচিবসহ প্রাথমিকের ১২ কর্মকর্তা

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০১৯, ০৩:৫৪  
আপডেট :
 ০৪ এপ্রিল ২০১৯, ০৪:০৩

ফেঁসে যাচ্ছেন সচিবসহ প্রাথমিকের ১২ কর্মকর্তা

চার বছর আগের এক তদন্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) ১২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপরই তাদের তিন দিনের মধ্যে শাস্তিমূলক বদলির নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিবের বিরুদ্ধেও ১৫ দিনের মধ্যে সরকারি বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ফাইল নোটে এ নির্দেশ দেন। ভারপ্রাপ্ত সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন ডিপিইর সাবেক মহাপরিচালক। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ভুয়া ভ্রমণভাতা গ্রহণ সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৫ সালের শেষ দিকে তদন্ত করা হয়। এতে তৎকালীন মহাপরিচালক ও বর্তমান সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিবের বিরুদ্ধে নানাভাবে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণের কথা উঠে আসে।

এছাড়াও প্রতিবেদনে ১২ কর্মকর্তার নামে অতিরিক্ত ও অনিয়ম করে অর্থ গ্রহণের তথ্য উঠে আসে। কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন- তৎকালীন উপ-পরিচালক শেখ মো. রায়হান, উপ-পরিচালক ইফতেখার হোসেন ভূঁইয়া, কর্মকর্তা মিজাউল ইসলাম, আতাউর রহমান, সোনিয়া আকবর, সহকারী পরিচালক রাজা মিয়া, শিক্ষা অফিসার মাহফুজা বেগম, শিক্ষা অফিসার শামসুননাহার, শিক্ষা অফিসার মো. মজিবুর রহমান, শিক্ষা অফিসার মাহফুজুর রহমান জুয়েল, সহ-শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম।

প্রতিবেদনটি চার বছর আগের হলেও কয়েকদিন আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের নজরে আনেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এরপর ২ এপ্রিল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন প্রতিমন্ত্রী। ১২ জনকে তিন দিনের মধ্যে ডিপিই থেকে বদলির কথা বলা হয়েছে। এছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সরকারি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা আছে।

এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশনা আমি পেয়েছি। এ ধরনের ঘটনায় যে বা যারাই জড়িত থাকুন না কেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

‘দোষীদের বদলি করে যদি মাঠপর্যায়ে পাঠানো হয়, তাহলে সেখানে তারা আরও সর্বনাশ করবেন। তবে তাদেরকে কম গুরুত্বপূর্ণ পদে পাঠানোসহ নানা ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে। প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে’ বলেও জানান তিনি।

জানা গেছে, ওই তদন্ত প্রতিবেদনে তৎকালীন এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে বলা হয়, তিনি চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার ভ্রমণে দুই দফা টিএ/ডিএ উত্তোলন করেছেন। অথচ তিনি তখন একই যাত্রাপথে একবারই বিমানে গেছেন। একই ধরনের অপকর্ম অন্য কর্মকর্তারাও করেছেন। তারা সবাই অতিরিক্ত টিএ/ডিএ উত্তোলন করেছেন।

প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, একই ব্যক্তি একাধিক স্থান থেকে একই তারিখে সম্মানী, টিএ/ডিএ উত্তোলন করেছেন, যা তার প্রাপ্য অর্থের চেয়ে বেশি। আবার বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রে সব বিমানবন্দরের জন্য একই পরিমাণে টিএ/ডিএ দাবি ও গ্রহণ করেছেন। একইসঙ্গে একই পথে ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রতিটি স্থান থেকে টিএ/ডিএ গ্রহণ করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে উল্লিখিত স্থানে না গিয়ে বা অনুষ্ঠান শুরুর আগে টিএ/ডিএ উত্তোলন করেছেন। কোনো প্রকার সময়সূচি উল্লেখ না করে ভ্রমণ আদেশ জারি করেছেন এবং ভ্রমণ আদেশ ছাড়া পরিদর্শন ও ভ্রমণ বিল উত্তোলন করেছেন।

জানা গেছে, ওই সময়ে ভ্রমণ, বিভিন্ন কেনা, বদলিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা অভিযোগ ওঠে। এর মধ্যে ভ্রমণের বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলে সরকারি নির্দেশে ডিপিইর একজন উপ-পরিচালকের নেতৃত্বে গোটা বিষয় তদন্ত হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে অভিযোগ ওঠার পরও তৎকালীন মহাপরিচালকের একান্ত সচিব ফিরোজ কবিরের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত হয়নি। তিনি এখনও অধিদফতরের মহাপরিচালকের পিএস হিসেবে কর্মরত। শুধু তাই নয়, তদন্তে প্রভাবশালীদের নাম উঠে আসায় চার বছর প্রতিবেদন ফাইল চাপা দিয়ে রাখা হয়। নতুন মন্ত্রিসভা দায়িত্ব নেয়ার পর সেই ফাইল পুনরুজ্জীবিত হয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ও ডিপিই’র সাবেক মহাপরিচালক ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিবেদনের আলোকে তখন ব্যবস্থা নেয়া হয়। যে বা যারা অতিরিক্ত অর্থ নিয়েছেন তারা তা ফেরত দিয়েছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত