ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

করোনাভাইরাসের যে দুর্বলতার খোঁজ পেয়েছেন গবেষকরা

করোনাভাইরাসের যে দুর্বলতার খোঁজ পেয়েছেন গবেষকরা
ছবি- সংগৃহীত

একদল মার্কিন গবেষক দাবি করেছেন, তারা নাকি বিশ্বজুড়ে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের দুর্বলতা খুঁজে পেয়েছেন। সেটি হচ্ছে, করোনাভাইরাসের বিশেষ একটি অংশ লক্ষ্য করে কোনো ওষুধ বা অন্য থেরাপির মাধ্যমে তার ওপর হামলা চালানো।

গবেষকরা গ্রিক পুরাণের মিথ চরিত্র অ্যাকিলিসের নামানুসারে করোনার এই দুর্বল অংশটির নাম দিয়েছেন ‘অ্যাকিলিস হিল’।

গ্রিক পুরাণের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বীর অ্যাকিলিসের গোড়ালিতে বিশেষ দুর্বলতা ছিল। আর এ কারণেই ট্রয়ের যুদ্ধে গোড়ালিতে তীরের আঘাতে মারা যান তিনি।

অলাভজনক আমেরিকান চিকিৎসা গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের করোনাভাইরাস বিষয়ক গবেষকেরা বলছেন, করোনাভাইরাসের ওই অ্যাকিলিস হিল খুঁজে পাওয়ার ঘটনা চিকিৎসাক্ষেত্রের জন্য একটি বিরাট সুখবর হয়ে উঠতে পারে। এ থেকেই খুলে যেতে পারে করোনার নতুন ভ্যাকসিন বা টিকা তৈরির পথ।

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সান দিয়েগো ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষকদলের নেতৃত্বে ছিলেন জীববিজ্ঞানী ইয়ান উইলসন। তার মতে, করোনাভাইরাসের মতো অতি সংক্রামক ভাইরাসের ওপর আক্রমণ করার জন্য নির্দিষ্ট একটি দুর্বল এলাকা খুঁজে বের করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

শুক্রবার ‘সায়েন্স’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে তাদের ওই গবেষণা নিবন্ধটি।

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরির জন্য বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের সময়েই এই তথ্য সামনে এল।

জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির রোববার সকাল পর্যন্ত দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৪ হাজার ৭৫৩য়ে। আর আক্রান্ত হয়েছেন ১২ লাখ ২ হাজারের বেশি মানুষ।

গবেষকেরা বলেন, তাদের আবিষ্কারের ক্ষেত্রে কাজ করেছে এক বছর আগে সার্স সংক্রমণের শিকার এক ব্যক্তির কাছ থেকে সংগৃহীত অ্যান্টিবডি।

তারা বুঝতে পেরেছিলেন, এটি ভাইরাসটির একটি নির্দিষ্ট অংশের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেছে এবং তা কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রেও পুনরাবৃত্তি করতে সক্ষম। এ বিষয়টির খোঁজ করতে গিয়েই তারা করোনাভাইরাসের দুর্বল জায়গাটির খোঁজ পেয়ে যান।

শুক্রবার স্ক্রিপস রিসার্চের এক বিবৃতিতে বলা হয়, করোনার বিশেষ অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফাংশনের সঙ্গে তারা মিল খুঁজে পান যা উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন করা গেলে সেটি নষ্ট হয়ে যায়।

তবে, দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, ওই দুর্বল জায়গাটি সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না। এটি সাধারণত ভাইরাসের ভেতরে লুকিয়ে থাকে এবং ভাইরাসের সেই অংশটি তার গঠন পরিবর্তন করার সময়েই কেবল সামনে আসে।

নিউইয়র্ক পোস্ট পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের দুর্বল জায়গা নিয়ে আরও গবেষণা চালানোর কথা বলেছেন গবেষকেরা। তারা বিষয়টিকে আরও জানার জন্য অ্যান্টিবডি খোঁজ করতে শুরু করেছেন। এজন্য তারা কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হওয়া ব্যক্তির রক্তের খোঁজ করছেন।

গবেষকদের পরিকল্পনা হচ্ছে, ওই ব্যক্তিদের রক্ত থেকে সম্ভাব্য কার্যকর অ্যান্টিবডি কাজে লাগানো। সব মানুষের মধ্যেই পাঁচ ধরনের অ্যান্টিবডি রয়েছে। যদিও এসব গ্রুপের মধ্যে প্রচুর পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।

তাই গবেষকরা বর্তমানে এমন একটি গ্রুপ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন যা করোনা শনাক্তকরণ এবং তাকে নিষ্ক্রিয় করতে সবচেয়ে উপযুক্ত বলে বিবেচিত।

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত