ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

মাকে চিতায় দিয়েই পরীক্ষার হলে ছাত্র!

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০১৮, ১৪:৪৫

মাকে চিতায় দিয়েই পরীক্ষার হলে ছাত্র!

মায়ের মৃতদেহ দাহ করার জন্য পরীক্ষা হলে পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় পরীক্ষায় বসতে বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হল এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে। অনেক নিয়মের বেড়াজাল পেরিয়েও পরীক্ষার জন্য মাত্র এক ঘণ্টার বেশি সময় পেল না সদ্য মাতৃহারা ছাত্র। পরীক্ষার্থীর স্কুল থেকে অনুরোধ করা সত্ত্বেও তার জন্য অতিরিক্ত সময়ও বরাদ্দ না করার অভিযোগ উঠল।

দুরারোগ্য রোগে ভুগে বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান তার মা অঞ্জু শাহ। শুক্রবার সকালে মামাদের সঙ্গে মায়ের মৃতদেহ নিয়ে শ্মশানে যায় অভয়। মা-কে দাহ করতে কেটে যায় অনেকটা সময়। শেষ পর্যন্ত মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করে দুপুর একটার দিকে অভয় স্কুলে পৌঁছায়। সেখানে গিয়ে সে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা অর্পিতা গুহকে সব জানায়। এই ঘটনার কথা শোনা মাত্রই অর্পিতা ডোমজুড় সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অমরেশ মজুমদারের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করেন।

অর্পিতার অভিযোগ, অমরেশবাবু প্রথমে ওই পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসতে দিতে অস্বীকার করেন। পরে তিনি ফোন করে অর্পিতাকে তিনটি লিখিত আবেদন করতে বলেন। অমরেশ মজুমদারের কাছে ওই পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসতে দেয়ার অনুরোধ করেন অর্পিতা । তাতেও মন গলেনি অমরেশবাবুর। তিনি আগে আইনি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে বলেন। তবেই পরীক্ষায় বসার ছাড়পত্র মিলবে বলে জানান। এরপর অর্পিতাদেবী অভয়ের পরীক্ষাকেন্দ্র রাজাপুর দক্ষিণদাঁড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে ভেনু সুপারভাইজার প্রভাসকুমার মণ্ডলের কাছে অনুরোধ করেন যাতে চিঠি লিখতে গিয়ে ছাত্রটির পরীক্ষার সময় না অতিবাহিত হয়, তাই আগে তাঁকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হোক। প্রভাসবাবুও বিষয়টি অমরেশবাবুকে বলতে বলেন। অর্পিতাদেবী পুনরায় অমরেশবাবুর কাছে ছাত্রটিকে আগে পরীক্ষায় বসানোর ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করে ফোন করেন। তখনও অমরেশবাবু আগে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার কথা বলেন বলে অভিযোগ।

অর্পিতার অভিযোগ, চিঠি করতে গিয়ে অহেতুক অনেকটা সময় পার হয়ে যায়। যখন ছাত্রটিকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয় ততক্ষণে পরীক্ষার দু’ঘন্টা পার হয়ে গিয়েছে। দুপুর দুটোর পর ছাত্রটি ইতিহাস পরীক্ষায় বসতে পারে। তাকে কোন অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়নি বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “‌অভয় স্কুলের মেধাবী ছাত্র। একটা সদ্য মাতৃহীন কিশোরের জন্য কি এতটুকুও সহানুভূতি দেখানো যেত না।” বিষয়টি তিনি মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে লিখিতভাবে জানাবেন বলে জানান। অমরেশবাবু অবশ্য সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “পরীক্ষার্থীর স্কুল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য ছাত্রটির পরীক্ষায় বসতে দেরি হয়েছে। স্কুলের উচিত ছিল আরও আগে ছাত্রটিকে পরীক্ষাকেন্দ্রে আনা। তাছাড়াও পরীক্ষায় বসার আবেদন জানাতেও অনেক দেরি করেছে স্কুল।'

এনএইচ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত