ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

ইমরান-সালমান বন্ধুত্ব, মোদির কপালে ভাঁজ

ইমরান-সালমান বন্ধুত্ব, মোদির কপালে ভাঁজ

পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একঘরে করার জন্য আদাজল খেয়ে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু তার সেই উদ্যোগে যেন জল ঢেলে দিয়েছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি ইসলামাবাদে দু দিনের সফর শেষে মঙ্গলবার ভারত সফরে আসছেন।

এর আগে ইমরান সরকারের সঙ্গে দু’হাজার কোটি ডলারের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন যুবরাজ সালমান। এ চুক্তিকে পকিস্তানকে সৌদি আরবের ‘উপঢৌকন’হিসেবে দেখছে ভারতের সংবাদ মাধ্যমগুলো।

পুলওয়ামা হামলার চার দিনের মধ্যে সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মধ্যকার এই বিশাল অঙ্কের চুক্তির কারণে দারুণ অস্বস্তিতে পড়েছে মোদি সরকার।

এ নিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি মোদিকে উদ্দেশ্য করে লেখা টুইট বার্তায় বলেছেন,‘অস্বস্তিকর! কালই যুবরাজ ভারতে আসছেন। ভারত সরকার বিড়ম্বনাতেই পড়বে।’

শুধু চুক্তি স্বাক্ষর নয়, সৌদি যুবরাজ ও ইমরান খানের দেয়া যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জাতিসংঘের জঙ্গি তালিকায় নাম তোলা নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।’

ভারত যখন জঙ্গি নেতা মাসুদ আজহারকে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করতে চাইছে তখন এই ধরনের বিবৃতি খুবই অস্বস্তিকর নয়াদিল্লির কাছে।

ওই যৌথ বিবৃতিতে সন্ত্রাসবাদ দমনে পাকিস্তান সরকারের ভূমিকার ঢালাও প্রশংসা করে যৌথ সহযোগিতার কথা বলেও সাউথ ব্লকের রক্তচাপ অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছেন সৌদি যুবরাজ। আর এই জটিল কূটনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেই মঙ্গলবার আগামীকাল নয়াদিল্লিতে আসছেন যুবরাজ সলমন।

২০১৭ সালে সৌদি যুবরাজ হিসেবে অভিষেক হওয়ার পর পাকিস্তানে এটিই ছিল যুবরাজের প্রথম সফর। আর এই সফরে গিয়ে তিনি কেবল দু’হাজার কোটি ডলারের বিনিয়োগ চুক্তিই করেননি। একই সঙ্গে তিনি নিজেকে ‘সৌদি আরবে পাকিস্তানের দূত’হিসেবে উল্লেখ করেছেন। পাকিস্তানের ডাকে তিনি ‘না’ বলতে পারেন না বলেও জানিয়েছেন।

শুধু কি তাই সৌদি যুবরাজ আরো বলেছেন,‘আমার বিশ্বাস শীগগিরই বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রে হিসেবে আবির্ভুত হতে যাচ্ছে পাকিস্তান। আমরা দেশটির এই সাফল্যের অংশ হতে চাই।’

জবাবে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন,‘যুবরাজ পাকিস্তানের আম জনতার মন কেড়ে নিয়েছেন। আমাদের প্রয়োজনে সবসময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সৌদি আরব। তাই আমরা তাদের গুরুত্ব দেই।’

সৌদি যুবরাজ সে দেশের জেলে থাকা ২০১৭ জন পাক বন্দিকে মুক্তি দেবেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়া সৌদি আরবে কর্মরত ২৫ লাখ পাক শ্রমিকের অবস্থার উন্নতির করারও আশ্বাস দিয়েছেন যুবরাজ।

তাই প্রশ্ন উঠেছে, ভারতে এত বড় জঙ্গি হামলা ও এত প্রাণহানির পরেও সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তানের প্রশংসা ও বিপুল বিনিয়োগ ঠেকানো গেল না কেন?

এ নিয়ে ভারতীয় কূটনীতিকদের বরাত দিয়ে ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’বলছে, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্কের ভিত আগে থেকেই মজবুত। পাকিস্তানে জঙ্গিদের অর্থ জোগানের ক্ষেত্রেও সৌদি আরবের নাম উঠেছে অতীতে। তা ছাড়া, ওই বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ চুক্তি অনেক আগে থেকেই ঠিক হয়ে ছিল।’

তবে পত্রিকাটি মনে করছে, পুলওয়ামায় জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদের হামলার পর সৌদি-পাক সমীকরণে নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে। কেননা সৌদি আরব বরাবর ভারতেরও মিত্র দেশের তালিকায়।

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত