ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২১ মিনিট আগে
শিরোনাম

ট্রাম্পের অভিশংসন তদন্তের প্রকাশ্য শুনানি শুরু

ট্রাম্পের অভিশংসন তদন্তের প্রকাশ্য শুনানি শুরু

মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে বুধবার থেকে প্রকাশ্যে শুরু হয়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসন তদন্ত। এর ফলে আরও চাপের মুখে পড়তে চলেছেন ট্রাম্প। যদিও এখনও তার দল ও সমর্থকরা প্রেসিডেন্টের প্রতি অব্যাহত আনুগত্য প্রকাশ করে চলেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর খবরে জানানো হয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার এই তদন্ত শুরু হয়েছে। শুনানি সরাসরি সম্প্রচার করছে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল। নানারকম গোপন প্রক্রিয়া শেষে বিরোধী ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন তদন্তের শুনানি শুরু করলো।

কয়েক সপ্তাহ ধরে এই শুনানি চলবে। গত ২৫ জুলাই এক ফোনালাপে ডেমোক্র্যাট দলীয় সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার ছেলে হান্টারের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে বারবার অনুরোধ করেন ট্রাম্প। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

এর আগে মাত্র একবারই কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিলো। ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির জের ধরে ১৯৪৩ সালে অভিশংসনের মাধ্যমে পতন ঘটেছিলো তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের। সিনেটে ওয়াটারগেট শুনানির পর তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। তবে আমেরিকার মানুষ আবার এমন ঘটনার সাক্ষী হবে কিনা সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

১৯৪৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ টেলিভিশনে প্রেসিডেন্ট নিক্সনের বিরুদ্ধে আনীত অভিশংসনের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে বিল ক্লিন্টনের বিরুদ্ধে তদন্ত নিয়েও মার্কিনীদের ব্যাপক আগ্রহ দেখা গিয়েছিল। বর্তমানে টেলিভিশনের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও উত্তপ্ত হয়ে উঠবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই নিয়ে চতুর্থবার ইমপিচমেন্ট তদন্ত শুরু হতে চলেছে।

ধারণা করা হচ্ছে, বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দল ইতোমধ্যেই প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছে বলেই প্রকাশ্যে শুনানির পথে অগ্রসর হয়েছে। গোপন অধিবেশনে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বেশ কিছু প্রতিলিপিও প্রকাশিত হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সম্পর্কে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করতে ট্রাম্প যেভাবে এক বিদেশি রাষ্ট্রের উপর যে পরিমাণ চাপ সৃষ্টি করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে, তা ইম্পিচমেন্টের কারণ হতে পারে বলে বিরোধীরা মনে করছে।

অভিযোগ উঠেছে, ডেমোক্র্যাটিক দলের অন্যতম প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন ও তার পুত্র সম্পর্কে ‘আপত্তিকর’তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করতে ট্রাম্প নাকি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপর চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। জানা যায়, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত না করলে ইউক্রেনের নির্ধারিত মার্কিন সামরিক সাহায্য বন্ধ রাখার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

ইমপিচমেন্ট তদন্তে অগ্রগতি ঘটলে এবং প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আরও স্পষ্ট তথ্যপ্রমাণ জোগাড় হলে পরবর্তী পর্যায় শুরু হতে পারে। এর জের ধরে সাধারণ মার্কিন জনগণের মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা দ্রুত হ্রাস পেলে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান দলের অনেক পার্লামেন্ট সদস্যও প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে যথেষ্ট সমর্থনের ভিত্তিতে মূল ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। এ অবস্থায় পদত্যাগ করতে পারেন ট্রাম্প।

তবে এখন পর্যন্ত ট্রাম্প শিবিরে এমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বরং বিরোধীদের এমন চাপ উপেক্ষা করে রিপাবলিকান দলের পার্লামেন্ট সদস্যরা প্রেসিডেন্টের প্রতি অব্যাহত সমর্থন প্রদর্শন করে চলেছেন। একই সঙ্গে তারা বিরোধী দলের আনা এই ইমপিচমেন্ট তদন্তকে বিরোধীদের বড় ষড়যন্ত্র হিসেবেই দেখছেন।

ট্রাম্প আত্মপক্ষ সমর্থন করে বেশ দম্ভ করে বলেছেন, মার্কিন কংগ্রেস তার বিরুদ্ধে নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ যে অভিশংসন তদন্ত শুরু করেছে তা অসাধু এবং বেআইনি। ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি এমন কিছুই করেননি। এ নিয়ে চিন্তা করছেন না বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত