ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

বেশি বেশি ফেসবুকে পোস্ট দেয়া ‘মানসিক রোগ’

বেশি বেশি ফেসবুকে পোস্ট দেয়া ‘মানসিক রোগ’

প্রযুক্তির এই যুগে সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুজ। বহু মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় পার করেন অনেকেই। অনেকেরর আবার সারাদিনের সকল কার্যক্রম ফেসবুককে কেন্দ্র করেই চলে।

মানুষ নানা কারণে আশক্ত হয়ে যাচ্ছে ফেসবুকে। ফলে অন্য কাজ করার সময় থাকে না বলে জীবনে ও কর্মক্ষেত্রে তার প্রভাব পড়তে শুরু করে। এ ধরনের মানসিক আসক্তি সমস্যার সমাধানে পেশাদার বিশেষজ্ঞদের কাছে কাউন্সেলিং করলে তা দূর করা সম্ভব।

ফেসবুক আসক্তি থেকে মুক্তি অনেকেই কাউন্সেলিং নিচ্ছেন ডাক্তারের কাছ থেকে। অনেকেই ফেসবুকে আসক্ত হয়ে একটু পর পর ফেসবুকে ঢোকেন। যখন ফেসবুকে কোনো কিছু পোস্ট করার মতো কিছু খুঁজে না পাওয়া যায়, তখনও অযথা অনেকেই ফেসবুকে পড়ে থাকেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেকেই সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে আসক্ত হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিচ্ছেন। এদের কারও কারও চাকরি চলে যায় অতিরিক্ত ফেসবুকিং এর কারণে। আবার কেউ নিজের সময়ের ওপর থেকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন।

চার দশকের অভিজ্ঞ চিকিৎসক থমাস বলেন, যাঁরা অনলাইন শো দেখেন বেশি তাঁদের মধ্যে হতাশা ও উদ্বিগ্নতার লক্ষণ বেশি দেখা যায়। যখন অন্যরা সুখী জীবনযাপনের কিছু অনলাইনে পোস্ট করেন তখন নিজের ওপর রাগ করে বসেন। এতে হতাশা বাড়তে থাকে। যদিও এ ধরনের সমস্যা বাড়ছে তবুও সচেতনতার অভাবে এই আসক্তির জন্য চিকিৎসকের কাছে আসেন না অনেকে।

এ ক্ষেত্রে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আসক্তির কারণ থাকে লাইক পাওয়া, অন্যের মনোযোগ আকর্ষণ করা বা কারও অনুমোদন পাওয়া।

পুনের সাইকোথেরাপিস্ট প্রযুক্তা দেশপান্ডে বলেন, সামাজিক যোগাযোগের আসক্তির কারণে চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করতে আসেন মূলত ৪০ বছরের বেশি বয়সীরা। যদি শিশুদের ক্ষেত্রে এ ধরনের আসক্তি দেখা দিতে শুরু করে তবে অভিভাবকের উচিত হবে সেই অনাকাঙ্ক্ষিত সাইটটি বন্ধ করে দেওয়া এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় নির্ধারণ করে দেওয়া। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

আসক্তির লক্ষণ

১. নিজের সম্পর্কে অতিরিক্ত শেয়ার

২. যখন-তখন কারণ ছাড়াই ফেসবুকে ঢোকা

৩. প্রোফাইলের ছবিটি নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া

৪. ঘণ্টার পর ঘণ্টা নিউজ ফিড পড়া এবং এগুলো নিয়ে সময় পার করা

৫. অনলাইনের জন্য বাস্তবের জীবনকে জলাঞ্জলি দেওয়া

৬. কাউকে বন্ধু করতে পাগলের মতো আচরণ করা

৭. ফোনের নোটিফিকেশন বা কোনো নোটিফিকেশনের চিহ্ন দেখলেই উত্তেজিত হয়ে ওঠা

৮. কোথাও গেলে সঙ্গে সঙ্গে চেক ইন করার মাধ্যমে নিজের অবস্থান জানিয়ে দেওয়া

৯. প্রায়ই মানুষকে ট্যাগ করা

১০. কাজের সময় লুকিয়ে গোপনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেসবুক ব্যবহার করা

১১. কেউ যখন কোনো ফেসবুক পোস্টে কোনো মন্তব্য করে না তখন হতাশ হয়ে পড়া

১২. বন্ধু সংখ্যা বাড়ানোর জন্য অপরিচিতদের তালিকায় যুক্ত করার প্রবণতা

১৩. একেবারে মাঝ রাতে ঘুম থেকে ধড়ফড় করে উঠে ফেসবুক চেক করা

১৪. ফেসবুক ছাড়া জীবন অচল হয়ে পড়ছে এ রকম ভাবনা পেয়ে বসা

ফেসবুক আসক্তির ফলে যা ঘটে

১. আবেগ-অনুভূতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে

২. হতাশা ও দুশ্চিন্তা পেয়ে বসে

৩. একাকী বোধ হয় ও নিজেকে দোষী ভাবতে শুরু করে আসক্ত ব্যক্তি

৪. কাজের সময় ঠিকঠাক থাকে না, কাজের আগ্রহ হারিয়ে যায়

৫. সময় জ্ঞান লোপ পায়, অসৎ পথে পরিচালিত হতে বাধ্য করে

৬. নিজেকে অন্যর সঙ্গে তুলনা করে ঈর্ষাবোধ হতে শুরু করে

৭. দায়-দায়িত্ব ভুলে মনোযোগ ডুবে থাকে ফেসবুকে

৮. সম্পর্ক নষ্ট হয়, ঘর ভেঙে যেতে পারে

শারীরিক সমস্যা

১. পিঠব্যথা

২. মাথাব্যথা

৩. স্পন্ডাইলিটিজ বা মেরুদণ্ডে সমস্যা

৪. ওজনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে কারও ওজন বেড়ে যায় আবার কারও ওজন কমে যায়

৫. ইনসমনিয়া বা ঘুমের ব্যাঘাত

৬. চোখে দেখতে সমস্যা

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত