ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১১ মিনিট আগে
শিরোনাম

তারেকের দুঃস্বপ্নের বিষ ও দায়

  মোস্তফা কামাল পাশা

প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২১, ১৮:৩৭  
আপডেট :
 ১০ অক্টোবর ২০২১, ১৮:৪৬

তারেকের দুঃস্বপ্নের বিষ ও দায়

সুবিধাভোগী বড় বড় নেতা, ভিআইপিরা কোথায়? জিরো থেকে হিরো! আপনারাতো জনাব প্রায় সুপারম্যান। মাত্র ১৩ বছরে অনেকে ম্যাজিক হিরো! কোন পরশ পাথরের ঘষায়! কারো কুষ্ঠি নিয়ে টানাটানি করছি না, অশোভন হবে! যদিও শোভনতার ধার কমই ধারি! তবুও আজ না। জানেন, দেশ ও নেত্রী কঠিন পরীক্ষায়।

আপনাদের কেউ কেউ সেকেন্ড হোমের ইন্টেরিয়র নিয়ে ব্যস্ত হয়তো? যাতে দ্রুত উড়াল দেয়া যায়! কার দয়ায় আপনি সুপারম্যান? তার বিরুদ্ধে যেভাবে সাইবারসহ নানা সেক্টরে আজগুবি ষড়যন্ত্রের জাল বিছানো হচ্ছে, মোকাবিলায় শিশু কেন, সুবিধাভোগী ক্রু সকল? সংবাদ সম্মেলনে ক'জন চিহ্নিত মিডিয়া মালিক, সিইও, সম্পাদক যেভাবে ঘড়া ঘড়া ভেজাল তেল ঢাললেন, দেখেশুনে মনে হচ্ছে, আপনারা অজর-অমর! বিশেষ বিদ্যায় ডক্টেরেটও! বোঝা যায়, আরো প্রচুর খাওন বাকি আছে! সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করবেন কূটনৈতিক প্রতিবেদক, রাজনৈতিক বা গণভবন বিটের প্রতিনিধিরা। কিন্তু ওরাতো প্রায় নেই-ই! বস দায়টা নিজে টানলে কিভাবেই বা কী! আপনারাতো সম্মানিত অতিথি। তাহলে কেন, সবসময় এমন বালখিল্যতা!

ডিজিটাল বাংলাদেশ উপহার কে দিয়েছেন? এটার অন্যায্য সুবিধা হাতাচ্ছে কে বা কারা! কোথায় আইটি, বা ডিজিটাল সেক্টর দেখভালের পদাধিকারীরা? ইউটিউবে ভূঁইফোড় পেইজগুলোতে কীসব ঘটানো হচ্ছে, মনোযোগে নেই কেন? প্রিয় নেত্রী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দেয়া নিয়ে যেসব অঘটনসহ মুখরোচক আরব্য রজনীর কেচ্ছা ফেনানো হচ্ছে, একটুও কি চোখ টানেনি? নাকি হাওয়ার গতি বুঝতে পানপাত্র হাতে কম্পাস দেখছেন বা গুগল ম্যাপ? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অসুস্থসহ আরও কিছু বানিয়ে কিছু বিদেশ পলাতক বলদ কিছুদিন ধরে কথার ফেনার বাঁধ দিয়ে নাকি আটকে রাখে ঘরে! হাসবেন না, মানুষকে ভেড়া ঠাওরানোর জঘন্য বাস্তবতা! সুযোগটা পাতে তুলে দেয়, করো না! কিন্তু তিনি প্রায় দু'বছর পর জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে প্রথম দেশ ছাড়ায় বলদগুলো রাতারাতি রূপ পাল্টে তেলাপোকা হয়ে যায়। শুরু হয় বিশ্রী ফড়ফড়ানি। নিউইয়র্কে দেশবিরোধী কাণ্ড ঘটানোর উস্কানি দিয়ে তেলাপোকা থেকে আবার হায়েনাও! এরপর ইউটিউবজুড়ে আরব্য রজনীর সিরিয়াল চলছেই। এসবতো সরাসরি অন্তর্ঘাত! জননেত্রী শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে ভয়ঙ্কর কোন টেস্ট কেস হয়তো! দলীয় জঞ্জাল সাফাইসহ উন্নয়ন অগ্রযাত্রার মিশন ফ্লপ এমনকি তাকে বঙ্গবন্ধুর ঠিকানায় পার করার কুশলী মিশনের মহড়া নয়তো?

ঘটনাক্রমে মনে হচ্ছে, ঘরে খোন্দকার মোস্তাকের কিছু প্রেতাত্মা আছেই। সরকার, প্রশাসন, দল, মিডিয়া সবখানেই। এরা হায়েনা চক্রকে প্রয়োজনীয় টিপসও যোগান দিচ্ছে মোটা টাকায়। যা দিয়ে তিল থেকে বানানো হচ্ছে, আস্ত তাল। দু'মুখো কালসাপ কত ভয়ঙ্কর, নেত্রী নির্মম আগস্ট ট্রাজেডিতে সব হারিয়ে নিশ্চয়ই তা ভালভাবে বোঝেন। কিন্তু তার বিশ্বাস ও আস্থার জায়গাটাগুলোতে যদি ফাঁক-ফোকড় থাকে, তাহলেতো মন্দের আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। নিউইয়র্কের পথে হেলসিঙ্কিতে তার যাত্রাবিরতি, বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং নেয়াসহ সবকিছু নিয়ে খেঁকশিয়াল সব গর্তে বসে ভূয়া ভিডিও ক্লিপ ও অসংখ্য ইউটিউব পেজের ট্রলে ডুবিয়ে দিচ্ছে দেশ! সাথে আছে দেশের ক'জন বকাবাজ নেতা, কাঠমোল্লাও! দুঃখ, শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ ও মন্ত্রক মাছি মারে!

জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন অভিযাত্রা ও দল শুদ্ধিকরনের সূচিমুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতেই কি এমন কুশলী ষড়যন্ত্রের জটাজাল। নাকি বেয়াদব, লুট, জঙ্গি উত্থানের বাদশা তারেকের বড় কিছু ঘটানোর টানা ড্রেস রিহার্সাল? এক গুলিতে দু'পাখি শিকারের সম্ভাবনা খুব বেশি। হাজার হাজার সর্বভুক রাক্ষস দল ও কর্পোরেট সেক্টরের নানা স্তরে কিলবিল করছে। সংখ্যা লাখ- দু'লাখের অঙ্ক ছাড়িয়ে যেতেই পারে। এদের ৬০% আগন্তুক, ৪০% পুরানো ও চিহ্নিত কুতুব! আগন্তুকরা ইন করেছে- পুরানা কুতুবের কাঁধে ভর দিয়ে। বড় অংশ কুতুবদের পকেট ও 'ইয়ের' চাহিদা যোগায়। আর চাহিদা যোগানোর জন্য এরা দেশজুড়ে দুর্নীতি, অনিয়মসহ আবর্জনার চাষ বাড়িয়ে দিয়েছে। ঘটাচ্ছে যত অঘটন-লাই দিচ্ছে চিহ্নিত পুরানা কুতুবের দল! এরা আবার ভিআইপি। বিষ্ঠামাখা গায়ে নীতি-সততার ওয়াজ গায়- যেন বিকল্প চাঁদ সইদি! বঙ্গবন্ধু বা শেখ হাসিনা এদের স্টিকার মাত্র! নেই দরদ, নীতি-নৈতিকতার ন্যূনতম বালাই! এতোই নির্লজ্জ! জ্ঞান বিমুখ, ভোগসর্বস্ব নেতৃত্ব দিয়ে আর যাই হোক, দেশ ও দলের কোন কল্যাণ হয় না। উল্টো শরীর থেকে লম্বা ও ভারী হয়ে যায় লেজুড়। বাদশাহ আকবরের দরবারে মোল্লা দো-পেয়েজার আজব বিতর্কের গল্পের ইরানী মাওলানার পাগাড়ির লেজের মতোই। ভোগসর্বস্ব কার্টুন দিয়ে দেশ বা দল চলে না। দূরদর্শী, জ্ঞানী, জন ও কর্মিবান্ধব নেতৃত্ব চাই। নেই বলেই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের চকবাজার ওয়ার্ড উপ-নির্বাচন খুবই বাজে একটা নমুনা উপহার দিয়েছে। নমুনাটা সামনে না রাখলে আরও বেশি আপদ সামনেই। বোঝাই যাচ্ছে, নেত্রীকে যোগ্য সহায়তা দেয়ার মতো নেতৃত্বের সঙ্কট তীব্র। সুযোগটা ভালোই লুফে নিয়েছে, সাজাপ্রাপ্ত লন্ডন পলাতক তারেক জিয়া ও তার পোষা সাঙ্গপাঙ্গ বহর। তারা লুটের টাকার বস্তার মুখ খুলে দিয়ে সাইবার দিগন্ত অস্থিরতার কাল মেঘে ঢেকে দিচ্ছে। বিদেশি বিশেষ করে ভারতীয় জনপ্রিয় টিভি চ্যানেলগুলো ক্লিন ফিডের নামে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইউটিউবে স্যোতের তোড়ে ঢুকছে সিরিয়াল আসক্ত বহু পরিবার। আর এদের টার্গেট বানাচ্ছে, তারেকের ভাড়াটে এজেন্টরা। নেতারা তৃণমূল, উপজেলা, জেলা থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত ভ্যানগার্ডের ভূমিকায় না নামলে কুচক্রীরা সাইবার দিগন্তের কেচ্ছা, ফিকশন বাস্তবে নামিয়ে আনার অপচেষ্টা করবেই। দরকারে যে কোন মূল্যেই। কারণ তাদের দম শেষ। দম ফুরোবার আগে শেষ মরণ কামড় দিতে চাইবেই। কাজেই আর বিলাস তন্দ্রার ঘোর নয়। দেশ, দল ও নেত্রীর সম্মান ও মর্যাদা সমুন্নত রাখতে জরির ঝলমলে খোলস পাল্টে বঙ্গবন্ধুর জানবাজ সৈনিক হয়ে উঠুন।

মোস্তফা কামাল পাশা, সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট

  • সর্বশেষ
  • পঠিত